তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের’ জেরে চুল কেটে দেওয়া হল ৩ মহিলার
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে মারধর, খুন-জখমের ঘটনা ঘটেই চলেছে। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল, দলের তিন মহিলা সমর্থককে মারধর করে চুল কেটে নেওয়ার ঘটনা।
রবিবার রাতে ঘটনাস্থল আরামবাগের গোবরা গ্রাম। যাঁদের চুল কাটা হয়েছে, সেই তিন মহিলা ছবিতা দলুই (৩৫), লক্ষ্মী দলুই (৪০) এবং পদ্মা দলুইয়ের (৬৫) বক্তব্য, “আমরা দীর্ঘ দিন ধরে তৃণমূলের সমর্থক। দলের এক নেতা লোকলস্কর নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরে গ্রামে মারধর, লুঠপাট চালাচ্ছেন। আমরা প্রতিবাদ করায় চুল কেটে নেওয়া হয়েছে। জনা কুড়ি পুরুষ-মহিলাকে মারধরও করা হয়েছে।” সোরাব হোসেন নামে গ্রামের এক তৃণমূল নেতা ‘নিজের হাতে’ চুল কেটেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই মহিলারা। সোরাব অবশ্য চুল কাটার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “গ্রামে গ্রামে চোলাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে আমাদের দল। রবিবার রাতে মাঠে বসে চোলাই বিক্রি করছিল মন্টু দলুই। আমাদের দলের ছেলেরা প্রতিবাদ করলে গ্রামের মহিলারা কাটারি-কুড়ুল নিয়ে হামলা চালায়। আমরা আরও লোকজন নিয়ে গিয়ে তারই প্রতিবাদ করেছি।” গ্রামে চোলাইয়ের কারবারে তৃণমূলেই একাংশ ‘মদত দিচ্ছে’ বলেও তাঁর অভিযোগ।
—নিজস্ব চিত্র।
তিন মহিলাকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁদের দাবি, থানায় গেলেও পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি। জেলা তৃণমূল নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছেন তাঁরা। আরামবাগের এসডিপিও আকাশ মাগারিয়া জানিয়েছেন, পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ঠিক নয়। ঘটনাটি তাঁরা তদন্ত করে দেখছেন।
ওই মহিলারা নিজেদের অরুন্ডা ২ অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি বাসুদেব মালিকের ‘অনুগামী’ বলে দাবি করেছেন। এলাকার রাজনীতিতে সোরাবের সঙ্গে যাঁর ‘বিবাদ’ সুবিদিত। বাসুদেববাবু বলেন, “অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা। গ্রামবাসীরা অবৈধ কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকলে পুলিশ-প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। আমাদের দলের কেউ এ ভাবে নিজের হাতে আইন তুলে নেবেন কেন? ওঁরা দলেরই ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।” কিন্তু দলের কেউ কি চোলাইয়ের অবৈধ কারবারে যুক্ত? এ ব্যাপারে বাসুদেববাবুর প্রতিক্রিয়া, “এ ব্যাপার আমার কাছে তথ্য নেই। তবে দু’এক জন যদি এমন কাণ্ড করেও থাকে, তা হলে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশকে খবর দেওয়া হোক। চুল কেটে শাস্তি দেওয়ার অধিকার কারও নেই।” প্রহৃত মন্টু দলুই, রঘুনাথ দলুই, ঝন্টু দলুই, সমর দলুই, অনিমা দলুইদের বক্তব্য, চোলাই বিক্রির অভিযোগ মিথ্যা।
তৃণমূলের মহিলা সেলের আরামবাগ ব্লক সভাপতি কাকলি ঘোষ বলেন, “মহিলাদের উপরে এই আচরণ অত্যন্ত অনুচিত। যে-ই করে থাকুক না খুবই খারাপ কাজ হয়েছে।” ঘটনার ‘নিন্দা’ করেছেন সিপিএমের মহিলা সমিতির আরামবাগ ব্লক সম্পাদিকা অসীমা কুণ্ডু।
কী হয়েছিল রবিবার রাতে? ছবিতা, লক্ষ্মী, পদ্মারা বলেন, “রাত তখন প্রায় ৮টা। সোরাবের নেতৃত্বে আমাদের দলেরই জনা পঞ্চাশ কর্মী-সমর্থক হইহই করে গ্রামে ঢুকে পড়ে। বিনা প্ররোচনায় আমাদের মারধর শুরু করে। মহিলাদের উপরে হামলা হচ্ছে দেখে অনেকে প্রতিবাদ জানাতে এগিয়ে আসেন। তাঁদেরও মারা হয়।”
আরামাবাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা তথা চুঁচুড়ার বিধায়ক তপন মজুমদার বলেন, “এমন ঘটনার কথা এখনও শুনিনি। তবে আমাদের দলের কেউ জড়িত থাকলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.