গত লোকসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোটের একটা বড় অংশ পেয়ে উত্তরপ্রদেশে ভাল ফল করেছিল কংগ্রেস। এ বার বিধানসভা ভোটেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চেষ্টার ত্রুটি রাখতে চাইছেন না সনিয়া-রাহুল। মাত্র দু’সপ্তাহ আগে উত্তরপ্রদেশের সংখ্যালঘু নেতা তথা সমাজবাদী পার্টির রাজ্যসভা সাংসদ রশিদ মাসুদকে কংগ্রেসে সামিল করিয়েছিলেন দলের শীর্ষ নেতারা। আর আজই তাঁকে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির আমন্ত্রিত সদস্য করলেন সনিয়া গাঁধী। কংগ্রেসে যোগ দিয়েই এমন পদ মর্যাদা পাওয়ার নজির হাতেগোনা।
কংগ্রেস সূত্রে বলা হচ্ছে, উত্তরপ্রদেশে সংখ্যালঘু ভোট আরও বেশি করে টানতে পরিকল্পনামাফিক এগোচ্ছে দল। তার ক্ষেত্র অনেক দিন আগে থেকেই প্রস্তুত করছিলেন রাহুল গাঁধীর ঘনিষ্ঠ সর্বভারতীয় কংগ্রেসের নেতা দিগ্বিজয় সিংহ। কিন্তু ভোটের অব্যবহিত আগে সুনির্দিষ্ট ভাবে দু’টি কৌশল নেন রাহুল-দিগ্বিজয়রা। এক, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির আওতায় উচ্চ শিক্ষায় ও সরকারি চাকরিতে সাড়ে চার শতাংশ সংখ্যালঘু সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার। পাশাপাশি পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মুসলিম নেতা রশিদ মাসুদ ও তাঁর ভাইপো ইমরান মাসুদকে কংগ্রেসে সামিল করানো হয়। কেন্দ্রে বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহের আমলে স্বাস্থ্য মন্ত্রী ছিলেন রশিদ। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের সংখ্যালঘু বলয়ে তাঁর দাপট রয়েছে তো বটেই, সেই সঙ্গে সংখ্যালঘু সংরক্ষণের ব্যাপারে তিনি দীর্ঘ দিন ধরে সরব। ফলে এ বার তাঁকে দিয়েই সংখ্যালঘুদের সংরক্ষণের বিষয়টি নিয়ে জোরদার প্রচার করাতে চায় কংগ্রেস। সম্প্রতি রশিদ মাসুদের সঙ্গে সাহারানপুরে সভাও করেছেন রাহুল।
তবে কংগ্রেসের এক শীর্ষ নেতার কথায়, মুসলিম সংরক্ষণের বিষয়টি স্পর্শকাতর। সেই কারণে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাতে গিয়েই রাহুল এই বিষয়টি নিয়ে জোরালো প্রচার করছেন। রাজ্যের অন্যত্র আবার মায়াবতী সরকারকে আক্রমণ করে উচ্চবর্ণের ভোট পেতে সচেষ্ট তিনি। দলের ওই শীর্ষ নেতার কথায়, মায়াবতী সরকারের বিরুদ্ধে সার্বিক ভাবে উত্তরপ্রদেশের উচ্চবর্ণ অসন্তুষ্ট। তাঁদের ভোট না পেলে উত্তরপ্রদেশে ভাল ফল করা মুশকিল। ফলে কংগ্রেস তাঁদেরও সঙ্গে চাইছে। এ ক্ষেত্রে মূল লড়াইটা কিন্তু বিজেপি-র সঙ্গে। কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, মায়াবতীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে যে দলকে বেশি মজবুত বলে মনে হবে, তাকেই ভোট দেবেন উচ্চবর্ণের মানুষেরা। ফলে সংখ্যালঘু ভোট পেতে চাইলেও ভারসাম্যের রাজনীতিও করছেন রাহুল। সেই ভারসাম্য যথাযথ রাখতে পারলে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের বিস্ময়কর ফল হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। |