শেয়ার বাজারে বিদেশি নাগরিকদের সরাসরি লগ্নিতে অনুমতি দেওয়ার বিরোধিতা করলেন বামেরা।
সিপিএমের পলিটব্যুরো নেতা সীতারাম ইয়েচুরি সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেছেন, এতে শেয়ার বাজার চাঙ্গা হয়ে উঠবে বলে সিদ্ধান্তে পৌঁছলে তা ভুল হবে। এই সিদ্ধান্তকে ‘বিপজ্জনক পদক্ষেপ’ বলে আপত্তি তুলে আজ প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন সিপিআই নেতা গুরুদাস দাশগুপ্ত। তাঁর যুক্তি, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা খুব অল্প সময়ের জন্য শেয়ার বাজারে টাকা ঢালবে। তার পরে মুনাফা হলেই লগ্নি তুলে নেবেন। ফলে শেয়ার বাজারের অস্থিরতা আরও বাড়বে। সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডেকে দেশের আর্থিক অবস্থা নিয়ে আলোচনার জন্যও আজ ফের দাবি জানিয়েছেন গুরুদাস। তবে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি লগ্নির বিরোধিতা করলেও সরকারের শরিক তৃণমূল এ ব্যাপারে এখনও মুখ খুলতে চায়নি। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, “এখনও বিষয়টি নিয়ে দলে আলোচনা হয়নি। আলোচনা হলে জানানো হবে।”
বিদেশি নাগরিকদের শেয়ার বাজারে সরাসরি লগ্নি করতে দেওয়ার পিছনে অর্থ মন্ত্রকের যুক্তি হল, এতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। বিশ্ব জোড়া মন্দার আশঙ্কায় বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি যে ভাবে এ দেশের শেয়ার বাজার থেকে লগ্নি তুলে নিচ্ছে, তার নেতিবাচক প্রভাব কমাতেই গতকাল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু শেয়ার বাজারের চলতি পরিস্থিতিতে বিদেশি নাগরিকরা এখন কতটা সেখানে লগ্নিতে আগ্রহ দেখাবেন, তা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন রয়েছে। ইয়েচুরি বলেন, “বিদেশি বিনিয়োগের মোট পরিমাণ কত দাঁড়াচ্ছে, শেয়ার বাজারে তার কতটা প্রভাব পড়বে, তা খতিয়ে দেখতে হবে। যদি সব মিলিয়ে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ একই থাকে, তা হলে আর কী পরিবর্তন হবে?”
ইয়েচুরি ও গুরুদাস, দু’জনেরই মত, মনমোহন-সরকার ভুল বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে। গুরুদাস প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, বিদেশি লগ্নির জন্য হাপিত্যেশ না করে সরকারের উচিত দেশের বাজারে আরও বেশি করে লগ্নি করা। তা করতে গিয়ে আর্থিক ঘাটতি নিয়ে মাথা ঘামালে চলবে না। এর ফলে বাজারে লগ্নিকারীদের আস্থা ফিরবে। দেশি ও বিদেশি বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়বে। কিন্তু সরকার উদারিকরণের পথে হেঁটে যে ভাবে বিদেশি নাগরিকদের জন্য শেয়ার বাজারের দরজা খুলে দিচ্ছে, তাতে ফাটকাবাজি আরও বাড়বে। কারণ বিদেশি লগ্নিকারীদের সব সময়ই স্বল্প সময়ে বেশি মুনাফা করার দিকে নজর থাকবে। |