পদ বড় নয়। সাধারণ সদস্য থেকেই দলের কাজ করা যায় বলে নেতা-কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু। সিপিএম সূত্রের খবর, রবিবার বাঁকুড়া শহরে জেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে দলের ২০ তম জেলা সম্মেলনের শেষ দিনের অধিবেশনে বিমানবাবু বলেছেন, ‘পার্টির জন্য কাজ করার ইচ্ছা’ থাকলেই হবে। দলের সদস্যপদ থাকলেও অনেক কাজ করা যায়।
সিপিএম সূত্রের মতে, তাঁর এ কথা বলার কারণও আছে। বর্ধমান বা পুরুলিয়ার মতো বাঁকুড়াতেও জেলা কমিটির কলেবর কমেছে। ৭৭ জনের কমিটি ছোট হয়ে ৫৩ জনের হয়েছে। জেলা কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন ৩৮ জন। নতুন আনা হয়েছে ১৪ জনকে। বয়সের কারণে ‘অব্যাহতি’ নিয়েছেন শিক্ষা-সহ একাধিক দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অচিন্ত্য রায় এবং বাঁকুড়া জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি জ্ঞানশঙ্কর মিত্র। বাকিদের অবশ্য ‘ছাঁটাই’-ই করেছে দল। সিপিএমের এক জেলা নেতার কথায়, “বাদ পড়া সদস্যেরা যাতে হতাশ ও ক্ষুব্ধ না-হন, তার জন্য বিমানবাবু নিজের উদাহরণ টেনেছেন। বলেছেন, বহু বছর আগে নিছক পার্টি সদস্য হিসাবেই তাঁকে ঝাড়গ্রামে ছাত্র সংগঠনের কাজ করতে হয়েছিল। তখন মেদিনীপুর আর পুরুলিয়া-বাঁকুড়াতেও দলীয় সংগঠন গড়ে তোলার কাজ করেছিলেন। এই সূত্রেই বিমানবাবু বলেছেন, পদ বড় নয়।” |
জেলা কমিটি থেকে যাঁদের বাদ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ইন্দাস জোনাল কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক আব্দুর রব, প্রাক্তন জেলা সভাধিপতি তথা সারেঙ্গা জোনাল কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক রঞ্জিত মণ্ডল, পাত্রসায়রের আব্দুল হেলিম, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী সংগঠনের জেলা সম্পাদক ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়। সিপিএম সূত্রের খবর, জেলায় লোকাল কমিটির সংখ্যা ১৬০ থেকে কমে ১২৯টি করা হয়েছে। শাখা কমিটি ১৯১৯ থেকে কমে ১৪৬৪টি হয়েছে। জেলার ২৩টি জোনাল কমিটির মধ্যে ১১টির সম্পাদককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে এ বারও দলের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক হয়েছেন অমিয় পাত্র। এই নিয়ে টানা ছ’বার তিনি জেলা সম্পাদক হলেন। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ দে অমিয়বাবুর নাম প্রস্তাব করেন। ‘সর্বসম্মতিক্রমে’ই রাজ্য কমিটির সদস্য অমিয়বাবুর নাম জেলা সম্পাদক হিসাবে চূড়ান্ত করা হয়। দল সূত্রের খবর, এ দিনের অধিবেশনে নির্বাচনে পরাজয়ের কারণ সম্পর্কে আলোচনা করেন বিমানবাবু। তিনি ব্যাখ্যা করেন, তাঁদের দলের কাছ থেকে নানা ভাবে উপকৃত হয়ে কিছু লোকজন কিছু না-থাকা অবস্থা থেকে ‘অবস্থাপন্ন’ হয়েছেন। এই ‘নব্যধনী’দের একাংশ বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের থেকে সমর্থন সরিয়ে নিয়েছিলেন। দলে সর্বক্ষণের কর্মীর সংখ্যা বাড়ানোর দিকেও নজর দিতে বলেছেন রাজ্য সম্পাদক। তাঁর মতে, ছাত্র-যুব-মহিলা গণসংগঠনগুলি থেকে দলের জন্য সর্বক্ষণের কর্মী রাখতে হবে। একই সঙ্গে সদস্যপদ দেওয়ার ক্ষেত্রে কর্মীদের দলের গঠনতন্ত্র ও কর্মসূচি সর্ম্পকে ওয়াকিবহাল করে প্রশিক্ষণের উপরেও তিনি জোর দেন। |