হারিয়ে যেতে বসেছে পৃথিবীর সর্বনিম্ন অঞ্চল। ‘ডেড সি’।
এক দিকে ইজরায়েল আর অন্য দিকে জর্ডন। মাঝখানে নীল ‘সাগরের’ টানে সারা বছর পৃথিবীর দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসে অগুনতি মানুষ। কিন্তু আর কত দিন? জেরুজালেম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোটি স্টেইনের কথায়, “হয়তো আর এক যুগ, হয়তো বা তা-ও নয়।” সান ফ্রান্সিসকোয় ‘আমেরিকান জিওফিসিক্যাল ইউনিয়নের’ বার্ষিক সম্মলনে এই হুঁশিয়ারিই দিলেন তিনি।
১ লক্ষ ২০ হাজার বছর আগের কথা। প্রায় একই দশা হয়েছিল বৃহত্তম হ্রদটির। কিন্তু ২০১১-য় যে অশনি সংকেত দেখতে পাচ্ছেন গবেষকরা, তাতে আগামী কয়েক বছর যদি খরার মুখে পড়ে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলি, তা হলে হয়তো সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে ‘ডেড সি’। |
শুকিয়ে যাওয়ার পথে পৃথিবীর সর্বনিম্ন অঞ্চল ‘ডেড সি’। |
২০১০-এ হ্রদের নীচে গর্ত খুঁড়ে গভীরতম অংশে পৌঁছে গিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। এ বছর গবেষণার ফল হাতে পেয়ে রীতিমতো চমকে গিয়েছেন তাঁরা। দ্রুত গতিতে শুকিয়ে যাচ্ছে হ্রদের জল। গত ১৪ বছরে জলের স্তর নেমেছে প্রায় ১০ মিটার। একই সঙ্গে চলছে মানুষের ‘অত্যাচার’। আশপাশের খরাপ্রবণ দেশগুলিতে সেচের জলের জোগান দিতে দিতে ‘ফুরিয়ে’ যাচ্ছে হ্রদের উৎস নদীগুলি। ‘লবণ’ হ্রদের থেকে খনিজ লবণ সংগ্রহ করছে বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থা। প্রভাব পড়ছে তারও। মানুষের সঙ্গে ধ্বংসের খেলায় হাত মিলিয়েছে প্রকৃতি। পৃথিবীর উষ্ণায়নও ‘ডেড সি’-র মৃত্যুর অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা গবেষকদের।
পরিবেশবিদ স্টেইন জানান, কয়েকশো হাজার বছর আগে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেও এ বার তাকে বাঁচানো যাবে কি না সন্দেহ। তখন হ্রদের ধারে জনবসতি ছিল খুবই কম। কিন্তু এখন পরিস্থিতি অন্য রকম। জর্ডন নদী হ্রদের জলের প্রধান উৎস। খাল কেটে টেনে নিয়ে
শুযাওয়া হচ্ছে নদীর জল। চলছে সেচের কাজ।
এখন হ্রদকে বাঁচানোর এক মাত্র উপায়, ‘জলের জোগান’ অব্যাহত রাখা। সেচের কাজে ‘হ্রদের’ অবাধ ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। তবে, এর ফলে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিকে যে ভয়ঙ্কর জলাভাবে পড়তে হবে সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। |