উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা মেটাতে আজ, বুধবার কলকাতায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর অফিসে বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে উপাচার্য, কর্মচারী সমিতির প্রতিনিধি ও টিচার্স কাউন্সিলের সচিব, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল শিক্ষা সেলের নেতাকে ডাকা হয়েছে। থাকবেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবও। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, কর্মচারী সমিতি যাতে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে বাধা না দেয়, সে জন্য ফের অনুরোধ জানাবেন শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষা দফতর আশাবাদী, আলোচনার প্রক্রিয়া মসৃণ করতেই সমিতি অনড় অবস্থান থেকে সরবে।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতি উপাচার্য অরুণাভ বসুমজুমদারকে অফিসে ঢুকতে না দেওয়ায় কলেজের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। মঙ্গলবার কোচবিহার, দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, আলিপুরদুয়ার কলেজের একাধিক ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও করেছেন। দ্রুত আন্দোলন প্রত্যাহার করা না হলে ছাত্রছাত্রীরা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই ডুয়ার্সের একটি কলেজের ৩ ছাত্র ওই আন্দোলনের প্রতিবাদে অনশনে বসার হুমকি দিয়ে কুমারগ্রামের বিডিওকে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
প্রায় দু’মাস ধরে উপাচার্যকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অশিক্ষক কর্মচারী সমিতি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী ওই সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেবীপ্রসাদ বুটের সঙ্গে আলোচনা করলেও সমস্যা মেটেনি। এমনকী, উপাচার্য যাতে অফিস করতে পারেন, সে জন্য আন্দোলনকারীদের অবস্থান-বিক্ষোভ থেকে বিরত করাতে পারেনি শিক্ষা দফতর।
আগামী এপ্রিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় থাকা ৬২টি কলেজে পরীক্ষা হওয়ার কথা। সে জন্য প্রশ্নপত্র তৈরি ও ছাপানোর কাজ জানুয়ারিতে হয়ে যাওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু উপাচার্য অফিসে ঢুকতে না-পারায় পরীক্ষা সময়ে হবে কি না, তা নিয়েই সব মহলের উদ্বেগ বাড়ছে। তবে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনে করেন, আলোচনায় সমস্যা মিটে যেতে পারে।
|
আলোচনা উত্তরে |
শিক্ষামন্ত্রী আলোচনায় বসার ডাক দিলেও সচল হয়নি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। কর্মবিরতি
শিথিল হলেও প্রশাসনিক ভবনের সামনে উপাচার্যকে ঢুকতে না দেওয়ার দাবিতে
বিশ্ববিদ্যালয়ের
কর্মচারি
সমিতির অবস্থান-বিক্ষোভ চলছেই। কে, কী বলছেন। |
শুধু উপাচার্যকে দোষারোপ করলে হবে না। আমি সবাইকে দোষী বলব। এ ধরনের অচল করে দেওয়া আন্দোলন মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার বিষয়টি কতটা গুরুত্ব পাচ্ছে সেটাই বড় প্রশ্ন। যাই হোক, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিক।
মানস দাশগুপ্ত, অর্থনীতিবিদ |
উপাচার্য কাজ করতে না পারায় কলেজের বহু কাজ থমকে রয়েছে। উপাচার্য কলেজের উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান। কলেজের উন্নয়ন সংক্রান্ত বৈঠক উপাচার্যের অফিসেই হয়। সব কাজই আটকে রয়েছে। ছাত্রছাত্রী-সহ সকলেই অসহায় বোধ করছে।
দিলীপ দে সরকার, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজ |
আন্দোলনের অধিকার সকলের আছে। তা বলে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয় এমন আন্দোলন মেনে নেওয়া যায় না। উত্তরবঙ্গ কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে দ্রুত সমস্যার সমাধান করুক রাজ্য সরকার।
গঙ্গোত্রী দত্ত, মেয়র, শিলিগুড়ি পুরসভা |
উপাচার্য ঢুকতে পারবেন না এমন কথা বলার অধিকার কারও থাকতে পারে না। আগামী দিনে কোনও ছাত্র সংগঠন যদি বলে সমিতির লোকজনকে অফিস করতে দেব না তখন সেটা মেনে নেবেন তো? এখনও সময় আছে। আশা করি আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন।
রোনাল্ড দে, সভাপতি ছাত্র পরিষদ (বিশ্ববিদ্যালয় শাখা)। |
বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন পরিবেশ একদিনে হয়নি। এ জন্য উপাচার্য দায়ী। আমরা উপাচার্যের অপসারণের দাবির সঙ্গে সহমত। ছাত্রছাত্রীদের কোনও ক্ষতি হলে তার দায় বর্তাবে উপাচার্যের উপরেও।
সৌরভ দাস, জেলা সম্পাদক, এসএফআই |
|