বিধ্বংসী আগুনে ছাই হয়ে গেল কোচবিহারের বাণেশ্বর রেল স্টেশন লাগোয়া বাজার এলাকার ১৭টি দোকান। সোমবার গভীর রাতে ওই ঘটনা ঘটে। কোচবিহার, তুফানগঞ্জ ও আলিপুরদুয়ার থেকে দমকলের ছয়টি ইঞ্জিন প্রায় ৫ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। ওই ঘটনায় প্রচুর আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের স্বল্প সুদে ব্যাঙ্ক ঋণের বন্দোবস্ত করার দাবি তুলেছেন বাণেশ্বর ব্যবসায়ী সমিতির কর্তারা।
এ দিন বাণেশ্বর বাজারের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখার পরে কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধীকে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। জেলাশাসক বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দ্রুত ত্রিপল-সহ প্রাথমিক ত্রাণ সাহায্য দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পুরো বিবরণ তৈরির কাজ চলছে। ক্ষতিগ্রস্তেরা ব্যাঙ্কে ঋণের আবেদন জানালে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা দেখা হবে।’’ কোচবিহার দমকল কেন্দ্রের ওসি মলয় ঘোষ বলেন, “দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভানো হয়েছে। শর্ট সার্কিট থেকে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে।” |
দমকল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত তিনটে নাগাদ একটি কাপড়ের দোকানে প্রথম আগুন লাগে। আশেপাশের বাসিন্দাদের কয়েকজন চিৎকার শুরু করেন। পরে কয়েকজন ব্যবসায়ী ছুটে আসেন। কোচবিহার থেকে দমকলের ৩টি, আলিপুরদুয়ার থেকে ২টি ও তুফানগঞ্জ থেকে ১টি ইঞ্জিন আগুন নেভাতে যায়। এর মধ্যেই হার্ডওয়্যার, ওষুধ, কাপড়, জুতো, ষ্টেশনারি, বই, মিষ্টি-সহ ১৭টি দোকান পুরোপুরি ছাই হয়ে যায়। দমকল কর্মীরা রাত ৪টে থেকে সকাল ৯টা পযর্ন্ত টানা কাজ করে আগুন পুরোপুরি ভাবে নেভাতে সমর্থ হন।
বাণেশ্বর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বিজনকৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, “ভয়াবহ ওই ঘটনায় ১৭টি দোকান পুরোপুরি ছাই হয়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তেরা যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, তার জন্য তাঁদের কম সুদে ব্যাঙ্ক ঋণের ব্যবস্থা করা জরুরি। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, সিমিএমের রাজ্যসভা সাংসদ তারিণী রায়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।” রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “ব্যবসায়ীদের ওই দাবির ব্যাপারে ইতিমধ্যে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। ব্যাঙ্কের সঙ্গেও কথা বলব।”
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্তেরা। তাঁদের এক জন কল্যাণ দেবনাথ বলেন, “সব মিলিয়ে আমাদের ওষুধের দোকানে ৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসন পাশে না-দাঁড়ালে কী ভাবে পরিস্থিতি সামলাব, ভেবে কুলকিনারা পাচ্ছি না।” একই অবস্থা অশোক সাহা, কৃষ্ণ দেবনাথ, মিন্টু ঘোষের মতো অন্য ব্যবসায়ীদের। |