ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক যুবকের। হোপনা টুডু (১৮) নামে ওই যুবকের বাড়ি রামপুরহাট থানার শোলাগড়িয়া গ্রামে। সোমবার দুপুরে রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই যুবকের রক্তে ‘প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম’ জীবাণু মিলেছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।
ওই যুবক ছাড়াও ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শোলাগড়িয়া গ্রামের এক বৃদ্ধ ও এক কিশোরের রক্ত পরীক্ষা করেও ‘প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম’ পাওয়া গিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় ওই দু’জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। মঙ্গলবার সকালে ওই গ্রামেরই দম্পতি অর্জুন ও সুনিতা মুর্মু এবং তাঁদের পাঁচ বছরের ছেলে রামলালকে মহকুমা হাসপাতালে আনা হয়। অর্জুনের রক্তে ‘প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম’ এবং রামলালের রক্তে ‘প্লাসমোডিয়াম ভাইভ্যাক্স’ জীবাণু মিলেছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।
ম্যালেরিয়া ছড়ানোর খবরে নড়েচড়ে বসেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এ দিন সকালে উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (২) দিলীপ দত্তের নেতৃত্বে স্বাস্থ্যকর্মীরা শোলাগড়িয়া গিয়ে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেন। দিলীপবাবু বলেন, “এ দিন ১৫০ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ওই গ্রাম ম্যালেরিয়া-প্রবণ এলাকা বলে কীটনাশক স্প্রে করার কাজ চলছিলই। তার মধ্যে এই ভাবে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এক যুবক মারা যাওয়ায় এ দিনও স্প্রে করা হয়েছে। এই গ্রামের মোট যে ৬ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত, তাঁরা সকলেই সম্প্রতি ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলার একটি গ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাঁরা ম্যালেরিয়ার জীবাণু নিয়ে এসেছেন বলে আমাদের ধারণা।” ওই ছ’জন ছাড়া অন্য কোনও আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি বলেও দিলীপবাবু জানিয়েছেন। তবে স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিত রক্তের নমুনা সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যাবেন।
শোলাগড়িয়া গ্রামে ৬০টি আদিবাসী পরিবারের বাস। গ্রাম থেকে দু’কিলোমিটার দূরে গুগ গ্রামে রয়েছে উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ৩ কিলোমিটার দূরে কাষ্ঠগড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। গ্রামবাসী বুধিরাম মুর্মু, রামেশ্বর হাঁসদা, গোপাল মুর্মুদের অভিযোগ, “গ্রামে স্বাস্থ্যকর্মীদের খুব একটা দেখা যায় না। গত ১৯ ডিসেম্বর থেকে একই পরিবারের ৬ জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একটি শিশুও আছে। প্রত্যেকের উপসর্গ একমাথা ব্যথা, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এবং শরীরে গাঁটে গাঁটে প্রবল ব্যথা। স্বাস্থ্যকর্মীরা গ্রামে এসে খোঁজখবর করলে ঠিক সময়ে রক্ত পরীক্ষা করে কিছুটা চিকিৎসা শুরু করা যেত।” |