গাফিলতির অভিযোগে তিন নার্সকে বদলির প্রতিবাদে মঙ্গলবার শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের সুপারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন নার্সরা। তাঁদের অভিযোগ, ‘অন্যায্য ভাবে’ ওই তিন জনকে বদলি করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বিক্ষোভের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
গত ১১ নভেম্বর সকালে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি হন রিষড়ার বাসিন্দা সুনিতা সাউ। রাতে ব্যথা বাড়ে। ওই প্রসূতি অভিযোগ করেন, সেই সময় তাঁর ধারে-কাছে কোনও নার্স ছিলেন না। তিনি নিজেই নার্সদের ডাকতে যান। কিন্তু কেউ আসেননি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই শিশুটির মাথা গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসে। অভিযোগ, তখনও কর্ণপাত করেননি নার্সরা। পরের দিন ভোরে ‘লেবার-রুম’-এর বাইরে নার্সরাই তাঁর প্রসব করান। যদিও, শিশুটিকে বাঁচানো যায়নি। সুনীতাদেবী অভিযোগ করেন, পরিচর্যা না পেয়ে প্রসবের আগেই মৃত্যু হয় তাঁর সন্তানের। তিন নার্স এবং এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে রোগীর পরিবার। হাসপাতালেও লিখিত অভিযোগ করা হয়। নার্সদের অবশ্য দাবি, জীবিত অবস্থাতেই শিশুটি প্রসব হয়।
ঘটনার তদন্তে আসেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা শ্যামাপদ বসাক। এর পরেই ‘শাস্তিমূলক’ ব্যবস্থা হিসেবে তিন নার্সকে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে বদলির সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়, নার্সদের গাফিলতি প্রমাণিত হওয়াতেই এই সিদ্ধান্ত। অবশ্য অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই এ দিন দুপুরে হাসপাতালের সুপারকে ঘেরাও করেন নার্স এবং অন্য কয়েক জন কর্মী। তাঁদের দাবি, ওই নার্সেরা ‘নির্দোষ’। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নার্স বলেন, “ওই ঘটনায় নার্সদের যে কোনও দোষ ছিল না তার প্রমাণ আমাদের হাতে রয়েছে।” তাঁদের অভিযোগ, “কোনও ঘটনা ঘটলেই নার্সদের ঘাড়ে দোষ চাপানো হয়। ডাক্তারবাবুদের আড়াল করা হয়। বহু ক্ষেত্রেই ডাক্তারদের গাফিলতির দায় এসে পড়ে নার্সদের উপর।” ওই তিন নার্সের বদলি প্রত্যাহারেরও দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা। হাসপাতালে নিরাপত্তার যথেষ্ট অভাব রয়েছে বলেও তাঁরা সুপারকে নালিশ জানান। |