হাসপাতালের শয্যাতেই এক প্রসূতির সন্তান প্রসবের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল মালদহের চাঁচল হাসপাতাল। সোমবার রাতে ওই ঘটনাটি ঘটে। চিকিৎসক ও নার্সদের গাফিলতিতেই ওই ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ তুলে রাতে বিএমওএইচকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান রোগিণীর আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা। তাঁদের অভিযোগ, ওই প্রসূতি প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে বহু বার ডেকেও কোনও চিকিৎসক কিংবা নার্সের সাড়া মেলেনি। ঘটনার জেরে স্বাস্থ্যকর্তাকে ঘেরাও করে প্রসূতির আত্মীয়রা বিক্ষোভ দেখালেও কোনও লিখিত অভিযোগ জানাননি তাঁরা। গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের নেতৃত্বে রাতেই আলোচনায় বসেন প্রসূতির আত্মীয় ও স্বাস্থ্যকর্তারা। সেখানেই এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে স্বাস্থ্যকর্তারা আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। চাঁচলের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভেন্দু শেখর সাহা বলেন, “ভুল বোঝাবুঝির জন্য একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছিল। সমস্যা মিটে গিয়েছে। তবে এ ধরনের ঘটনা না হলেই ভাল হত। মা ও সদ্যোজাত শিশু, দুজনেই সুস্থ রয়েছে।” হাসপাতাল ও প্রসূতির পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন চাঁচলের সিঙ্গিয়া এলাকার রচনা দাস। ঘন্টা দুয়েক বাদে রাত নটা নাগাদ তাঁর প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। তা দেখে পরিবারের লোকেরা ছোটাছুটি শুরু করেন। প্রসূতির পরিবারের অভিযোগ, লেবার রুমে নিয়ে যাওয়ার জন্য বারবার বলা হলেও কোনও চিকিৎসক সাড়া দেননি। কর্তব্যরত নার্সরা দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ তাঁদের। তার পরই ওই প্রসূতি শয্যাতেই শিশু সন্তানের জন্ম দেন। এরপর হইচই শুরু হতেই ছুটে আসেন চিকিৎসক ও নার্সরা। হাসপাতালে চলে আসেন বিএমওএইচও। গাফিলতির অভিযোগ তুলে তাকে ঘিরে শুরু হয় বিক্ষোভ। প্রসূতির স্বামী স্বপন দাস, ভাই রাজু দাস একযোগেই বলেন, “প্রসূতি যন্ত্রণায় অধীর হয়ে পড়েছেন বলে জানানো হলেও কারও সাড়া মেলেনি। যে কোনও অঘটন ঘটতে পারত। তার দায় কে নিত? হাসপাতালে যে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে ভাবতেই পারছি না।” ওই সময় হাসপাতালে এক রোগীকে দেখতে গিয়েছিলেন চাঁচলেরই মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান দীপক সিংহ। ঘটনাটি দেখে হাসপাতালের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ তিনিও। গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, “স্বাস্থ্যকর্তার দাবি ঘটনাটি হঠাৎই ঘটে গিয়েছে। প্রথমে না কি বুঝতে পারা যায়নি। চিকিৎসকদের মুখে এ ধরনের কথা মানায় না।” |