সদ্যোজাতদের দেখভালের জন্য নদিয়ার ৩০টি হাসপাতালে চালু হচ্ছে নিউ বর্ন কেয়ার কর্নার বা এনবিসিসি। ইতিমধ্যেই কয়েকটি হাসপাতালে এনবিসিসি চালুও হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিত হালদার বলেন, ‘‘হাসপাতালের লেবার রুমের ভিতরেই নিউ বর্ন কেয়ার কর্নারের ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে থাকবে রেডিয়েন্ট ওয়ার্মার এবং ফোটো-থেরাপি ইউনিটের মত অত্যাধুনিক মেশিন। জেলা সদর হাসপাতাল ছাড়া কোনও হাসপাতালেই এর আগে এরকম অত্যাধুনিক কোনও যন্ত্রের ব্যবস্থা ছিল না। এই ব্যবস্থা চালু হলে শিশু মৃত্যুর হার কমবে। রেফারের চাপও কমবে।’’ |
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জন্মের পরই বহু শিশু কম ওজন এবং জন্ডিসের মত অসুখে ভোগে। হাইপোথারমিয়া বা স্বাভাবিকের তুলনায় দেহের তাপমাত্রা কম থাকলে হাসপাতালের সাধারণ যন্ত্র দিয়েই কোনও রকমে কাজ চালানো হত এত দিন। কিন্তু জন্ডিসের ক্ষেত্রে জেলা সদর হাসপাতালে রেফার করা ছাড়া আর অন্য কিছু করারও থাকত না হাসপাতালগুলোর। সেক্ষেত্রে অসুস্থ নবজাতককে নিয়ে দীর্ঘ পথ উজিয়ে ওই হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধ্য হতেন বাড়ির লোকেরা। দীর্ঘক্ষণ চিকিৎসা না পেয়ে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েক বার। এই কর্নার চালু হওয়ার পর সেই ঝুঁকি ও শিশু মৃত্যুর ঘটনা এড়ানো যাবে বলে আশা করছে স্বাস্থ্য দফতর। এই মেশিনগুলো চালাবেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা। তাঁদের এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।
দিন কয়েক আগে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চালু হয়েছে নিউ বর্ন কেয়ার কর্নার। লেবার রুমের এক পাশে রাখা হয়েছে কম্পিউটরাইজড ওই মেশিনগুলি। হাসপাতালের সুপার বিধুভূষণ মাহাতো বলেন, ‘‘এত দিন পর্যন্ত আমাদের হাসপাতালে অতি সাধারণ একটি ওয়ার্মার ছাড়া এ সব কিছুই ছিল না এ বার থেকে সদ্যোজাতদের আমরা আরও ভাল পরিষেবা দিতে পারব।’’
তেহট্টের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের হাসপাতালে ওয়ার্মার থাকলেও এই মেশিনগুলো ছিল না। ছিল না জন্ডিস আক্রান্ত শিশুদের জন্য ফোটো-থেরাপি ইউনিটও। এই পরিকাঠামো না থাকায় কোন ঝুঁকি না নিয়ে আমরা জেলা সদরে রেফার করে দিতাম।”
বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার জীবেশচন্দ্র বাইন বলেন, ‘‘এখানেও ওই যন্ত্র বসানো হয়েছে। আমরা নবজাতকের চিকিৎসার ব্যাপারে অনেকটা চিন্তামুক্ত হলাম।’’
নদিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিত হালদার বলেন, ‘‘সদ্যজাতদের আরও ভাল পরিষেবা দিতে জেলার ৩০টি হাসপাতালে নিউ বর্ন কেয়ার কর্নারের পাশাপাশি ১৫ টি হাসপাতালে চালু হচ্ছে সিক নিউবর্ন স্টেবিলাইজেশন ইউনিট। এত দিন শুধু জেলা সদর হাসপাতালেই ছিল সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট। এবার তেহট্ট ও রানাঘাট মহকুমা হসপাতালেও সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট তৈরি হবে।’’ |