কোথাও পিচের চাদর উঠে গিয়েছে। কোথাও তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। আবার কোথাও পিচের চাদর উঠে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন নিউ জলপাইগুড়িতে যাতায়াতের রাস্তার এমনই বেহাল দশা। ক্ষোভ ছড়িয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও। রাজ্য সরকার যখন উত্তরবঙ্গের পর্যটন শিল্পকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন, সেই সময় এনজেপির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে ঢোকার রাস্তার ওই হালে ক্ষুব্ধ পর্যটকরাও। শুধু তাই নয়, রেলের তরফে কিছুটা রাস্তা সারাই করা হয়েছে। সেই কাজেও নিম্নমানের জিনিসপত্র ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। রেলের কর্তাদের একাংশের সঙ্গে ঠিকাদারদের যোগসাজশের ফলেই রাস্তার হাল এমন হচ্ছে কি না তা নিয়ে তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন বাসিন্দাদের অনেকেই। এনজেপি এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সলির জয়দীপ নন্দীও বাসিন্দাদের অভিযোগের সঙ্গে সহমত। জয়দীপবাবু বলেন, “রাস্তা সংস্কার নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী সহ আমরা কয়েকবার রেল কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। যাত্রীদের অসুবিধের কথা জানানো হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু করার জন্য আর্জি জানানো হয়। তার পরেই কাজ শুরু হয়। এখন দেখছি ওই কাজ থমকে রয়েছে। পাশাপাশি কাজ নিয়ে নিম্নমানের অভিযোগও উঠেছে। পুরো বিষয়টি রেল কর্তাদের দেখা উচিত। প্রয়োজনে আমরা আবার রেল কর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।” পাশাপাশি, রেলের একশ্রেণির ইঞ্জিনিয়রদের সঙ্গে ঠিকাদারদের যোগসাজশের যে অভিযোগ উঠেছে সেই ব্যাপারে প্রয়োজনে রেলমন্ত্রীর কাছেও চিঠি পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন জয়দীপবাবু। নিউ জলপাইগুড়ির এরিয়া ম্যানেজার পার্থ শীল অবশ্য কিছু রাস্তার হাল ভাল নয় বলে মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, “রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছুটা রাস্তা সংস্কার হয়েছে। বাকি রাস্তা সংস্কারের কাজ দ্রুত শুরু হবে। আর নিম্নমানের অভিযোগ ঠিক নয়। ডিআরএম সহ আমরা ওই রাস্তার কাজে নজরদারি করেছি। ভাল কাজ হয়েছে।” কিন্তু, ভাল মানের কাজ হলে রাস্তা সারানোর কিছুদিনের মধ্যে তা ফের বেহাল হয়ে পড়ছে কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের অনেকেই। এমনকী, জেলা প্রশাসনের কাছে তা নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “রেলের ওই রাস্তার কাজে নিম্নমানের সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। রেল কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের সময় বিষয়টি তুলব।” রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনবাতি মোড় থেকে এনজেপি স্টেশনে ঢোকার ৩ কিলোমিটার রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল হয়ে আছে। তা সংস্কারের দাবি নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা তৃণমূল নেতা জয়দীপ নন্দী রেল কর্তাদের কাছে কয়েক দফায় দরবার করেন। শেষ পর্যন্ত মাস দেড়েক আগে ওই রাস্তাটি সংস্কারের কাজে হাত দেয় রেল। বেশ খানিকটা কাজ হওয়ার পর তা নিয়ে নিম্নমানের অভিযোগ ওঠে। রেলের এক কর্তা জানান, যে কাজ বাকি রয়েছে তা অন্য এক ঠিকাদার করবেন। সে জন্য সংস্কার বন্ধ হয়ে আছে। কয়েকজন যাত্রী বলেন, “ভাঙা রাস্তায় গাড়ি চলার সময় ধূলোয় অন্ধকার হয়ে যায়। তার উপর যে কোনও সময় দুর্ঘটনায় আশঙ্কাও থাকে। এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে যাতায়াতের রাস্তা সংস্কারে টালবাহানা ঠিক নয়। রাস্তার কাজ যাতে নিম্নমানের না-হয়, সে দিকেও নজরদারি দরকার।” |