অভাবে ধুঁকছে দলমোড়
তিন মাস বাগান বন্ধ, বিপাকে চা-শ্রমিকেরা
মাস ধরে বন্ধ ডুয়ার্সের বীরপাড়ার দলমোড় চা বাগানের শ্রমিকদের ঘরে ঘরে চরম অভাব দেখা দিয়েছে। প্রথম দু’মাস জমানো টাকা খরচ করে বাগানের বাসিন্দারা সংসার চালালেও এক মাস ধরে বহু শ্রমিকের জমানো সেই টাকা এসেছে। এখন কেউ এক বেলা খেয়ে আবার কেউ গোটা দিন উপোস করে কাটাচ্ছেন। আলিপুরদুয়ারের মহকুমা শাসক অমলকান্তি রায় বলেন, “ওই বাগানে অনাহারজনিত কারণে কারও মৃত্যু হয়নি। কেউ যাতে মারা না-যান তার জন্য চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজনে ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ করার জন্য বিডিওকে নির্দেশ বলা হয়েছে। খুব শীঘ্র চা বাগান চালুর চেষ্টা চলছে।” মঙ্গলবার দুপুরে আরএসপি শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে ওই বাগানের কয়েকশো শ্রমিক বাগান চালুর দাবিতে বীরপাড়ার সহকারী শ্রম আধিকারিকের অফিস ঘেরাও করেন। ১ জানুয়ারির মধ্যে বাগান চালু না হলে তারা আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়ে যান। সহকারী শ্রম আধিকারিক অমিয় দাস বলেন, “২৯ ডিসেম্বর ওই বাগান চালু করা নিয়ে মালিক ও শ্রমিকপক্ষকে নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করা হবে। আশা করি শীঘ্র বাগানটি চালু হবে।” বাগানের শ্রমিকরা ঠিকঠাক কাজ করছেন না অভিযোগে কর্তৃপক্ষ ২৭ সেপ্টেম্বর বাগান বন্ধ করে যান। কর্তৃপক্ষ বাগান ছেড়ে চলে যাওয়ায় বিপাকে পড়েন ১২২৪ শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের লোক। পরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে মালিকপক্ষ ২৯ নভেম্বর বাগান চালু করা হবে বলে জানালেও তা হয়নি। শ্রমিকেরা জানান, বাগানের ৬৭ টাকা মজুরি পেয়ে যে টাকা জমে ছিল তা শুরুতে খরচ হয়ে যায়। বাগানের বড়া লাইন, ধোবি লাইন, প্রেমনগর লাইনের ঘরে ঘরে এখন শুধু হাহাকারের চিত্র। ধোবি লাইনের বাসিন্দা গিঞ্জি মাহালি বলেন, “আমার আয়ে পাঁচ জনের পেট চলত এত দিন। বাগান বন্ধের পর কিছু দিন জমানো টাকায় সংসার চললেও এখন ফুরিয়ে এসেছে। বিকল্প কাজ নেই। এক বেলা খেয়ে বেঁচে আছি।” বাগান বন্ধ হওয়ার পরে তিন বেলার বদলে এক বেলা এক ঘণ্টার জন্য জল পান বাসিন্দারা। সে জলও পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ। অন্ত্যোদয় বা ১০০ দিনের কাজ-সহ পঞ্চায়েতের তরফে কোনও প্রকল্পের মাধ্যমে সাহায্য করা হচ্ছে না দেখে ক্ষোভ বাড়ছে। আরএসপি শ্রমিক নেতা গোপাল প্রধান বলেন, “বাগানের শ্রমিকরা অভাবের মধ্যে দিনযাপন করছেন। সরকারের উচিত দ্রুততার সঙ্গে বাগান ফের চালু করা।” এদিকে শীতকালীন পরিস্থিতিতে বাগানে গাছের পাতা কমে আসায় নতুন করে অভাব দেখা দিয়েছে। ২০০২ সাল থেকে বন্ধ ঢেকলাপাড়া চা বাগানে গত এক মাসে নানান রোগে ভুগে চার জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত ছয় মাস ধরে সরকারের অনুদান বন্ধ থাকার পাশাপাশি গাছে পাতা না মেলায় বাগানের পরিস্থিতি শোচনীয় অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। বেশ কিছু মানুষ অসুখে ভুগলেও ঠিকঠাক চিকিৎসা মিলছে না বলে অভিযোগ। বাগানের এই অবস্থায় মঙ্গলবার ব্লক প্রশাসনের তরফে শ্রমিকদের চাল বিলি করা হয়। স্বাস্থ্য শিবিরও করা হয়।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.