সিপিএমের পরে দার্জিলিং পাহাড় নিয়ে এ বার ‘বোধোদয়’ হল সিপিআইয়েরও! আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের প্রশ্নে দার্জিলিংকে ষষ্ঠ তফসিলের আওতায় আনা নিয়ে টালবাহানা না-হলে পাহাড়ে জটিলতা হত না বলে মনে করছে এই বাম শরিক। দলের রাজ্য সম্মেলনের তৃতীয় দিনে পাহাড় সংক্রান্ত যে প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে, তাতেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। সিপিএমের সদ্যসমাপ্ত দার্জিলিং জেলা সম্মেলনেও পাহাড় সমস্যা নিয়ে এই পৃথক দলিলে একই রকমের ‘স্বীকারোক্তি’ করা হয়েছিল।
শিলিগুড়িতে সম্মেলনে পাশ-হওয়া ওই প্রস্তাব প্রসঙ্গে সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মঞ্জুকুমার মজুমদার বলেন, “ষষ্ঠ তফসিল বিলটি দ্রুত পাশ করে পাহাড়কে এর আওতায় আনলে সমস্যা এতটা বাড়ত না। পাশাপাশি, পার্বত্য পরিষদের চেয়ারম্যান হিসাবে সুবাস ঘিসিঙের মেয়াদ বৃদ্ধিও ঠিক হয়নি। পাহাড়ের মানুষের আবেগ আমরা বুঝতে পারিনি।” এর জন্য তিনি কেন্দ্রীয় সরকার তো বটেই, পূর্বতন ফ্রন্ট সরকারের ‘ব্যর্থতা’কেও দায়ী করেছেন।
তবে পাহাড় সমস্যা এখনও মেটেনি বলেই সিপিআইয়ের মত। মঞ্জুবাবুর কথায়, “ওঁরা (মোর্চা) ফের আলাদা রাজ্যের দাবি তুলেছেন। এখন কেন্দ্র ও রাজ্যের উচিত, দ্রুত আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন চালু করা। নইলে সমস্যা বাড়তে পারে।” সম্প্রতি সিপিএমের দার্জিলিং জেলা সম্মেলনে পাহাড় নিয়ে আলাদা দলিলের পাশাপাশিই প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যও বলেছিলেন, ষষ্ঠ তফসিল নিয়ে দেরি হওয়া পাহাড় সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
আদিবাসী থেকে মাওবাদী সমস্যা ফ্রন্ট সরকারকে দুষলেও পাহাড় নিয়ে রাজ্য সম্মেলনে সিপিএমের সুরেই কথা বলেছে সিপিআই। পাহাড় নিয়ে তাদের সম্মেলনের প্রস্তাব, প্রতিবেদনের ভাষাও কার্যত এক। মঞ্জুবাবু বলেন, “পাহাড়ে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি বহু পুরনো। বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই কার্যকরী ব্যবস্থা নিলে পাহাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে এই ভাবে অসন্তোষ দানা বাঁধত না। এমনকী, পার্বত্য পরিষদ গঠন করেও তা কমানো যায়নি।” সিপিআইয়ের সম্মেলনের তৃতীয় দিনে প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে, ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য সুন্দরবনের অস্তিত্ব বিপন্ন বলে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে রাজ্যের প্যাকেজ আদায় করা উচিত। শুধু সিপিএমের ‘দাদাগিরি’ মেনে না-নিয়ে কী ভাবে ‘উন্নততর বামফ্রন্ট’ গড়া যায়, তা নিয়েও আলোচনা চলছে। |