নিলামেই লিজ সরকারি জমি, সিদ্ধান্ত প্রশাসনের
র নামমাত্র অর্থে সরকারি জমি লিজ নয়। বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট সরকারি জমি দীর্ঘ মেয়াদি লিজের ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া হচ্ছে ‘নিলামি’ প্রক্রিয়াকেই। এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। এর ফলে এক দিকে সরকারি জমির হস্তান্তরের ক্ষেত্রটিকে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত যেমন রাখা যাবে, তেমনই রাজ্য কোষাগারে বাড়তি অর্থও আসবে বলে প্রশাসন মনে করছে।
কর নয়, কর-বহির্ভূত রাজস্ব বাড়িয়ে সরকারি কোষাগারের ঘাটতি পূরণের যে সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সরকারি কর্তারা নিয়েছে তা রূপায়ণের লক্ষ্যে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। ক্ষমতায় এসে তৃণমূল সরকারের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিদ্ধান্ত নেন, সাধারণ মানুষের উপরে সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে এমন কোনও কর সরকার বসাবে না।
মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে টান পড়েছে রাজ্য কোষাগারে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মাস দুয়েক আগে মহাকরণে বেশ কয়েকটি দফতরের অফিসারদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই ঠিক হয়, সরকারি বিভিন্ন দফতর তাদের কর-বহির্ভূত রাজস্ব বাড়ানোর জন্য স্ব-স্ব সম্পদগুলিকে পুরোমাত্রায় ব্যবহার করবে। সরকারি কোষাগারের ঘাটতি পূরণে যতটা সম্ভব সহায়তা দফতরগুলি করবে। প্রয়োজনে কর-বহির্ভূত রাজস্ব বাড়ানোর জন্য নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হবে।
কার্যত এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতেই জলপাইগুড়ি ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর জেলার ১০০টি জমিকে চিহ্নিত করেছে। এই জমিগুলির বাণিজ্যিক ব্যবহারের প্রভূত সুযোগ রয়েছে। জেলা প্রশাসন ঠিক করেছে, এখন থেকে কোনও বাণিজ্যিক সংস্থাকেই আর সরাসরি জমি লিজ দেওয়া হবে না। কোথাও কোনও সংস্থা জমি চাইলে তার বাজার দর দেখা হবে। তার ভিত্তিতে ‘ন্যূনতম নিলাম দর’ ঠিক করে জমিটি নিলামের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। নিলামে যে সংস্থা সর্বোচ্চ দর দেবে সেই সংস্থাকেই দীর্ঘ মেয়াদে জমি বরাদ্দ করা হবে। রাজ্য সরকারের তরফেও জেলা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) তন্ময় চক্রবর্তী বলেন, “নিলামের মাধ্যমে জমি দেওয়া হলে সরকারের আর্থিক কোনও ক্ষতি তো হবেই না, বরং লাভ হবে। একই সঙ্গে জমি বন্টনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আসবে। রাজ্য সরকারও এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছে।”
এই সিদ্ধান্তের পরেই লাটাগুড়িতে একটি ৫ একরের সরকারি প্লট সরাসরি লিজ দেওয়া রদ করেছে জেলা প্রশাসন। রেজিস্ট্রি অফিসের দর অনুযায়ী মাত্র ৫ লক্ষ টাকায় একটি বাণিজ্যিক সংস্থাকে জমিটি লিজ দেওয়া হচ্ছিল। অথচ সাধারণ বাজার দরে জমিটি থেকে সরকার কম করেও ৫০ লক্ষ টাকা পেতে পারে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে: ফুলবাড়ি, ডাবগ্রাম, রাজগঞ্জ, মালবাজার, বাতাবাড়ি, লাটাগুড়ির মতো এলাকাগুলিকেই প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এখানে প্রতি নিয়ত জমির দাম বেড়েই চলেছে।
তন্ময়বাবু বলেন, “রাজ্য সরকারের নির্দেশে জেলার বকেয়া রাজস্ব (খাজনা) আদায়েও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গত বছর যেখানে জেলায় মাত্র ১৮ কোটি টাকা খাজনা আদায় হয়েছে, সেখানে চলতি বছরে ৬০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।” বকেয়া রাজস্ব আদায় করতে দীর্ঘদিন ধরে যে সব বাণিজ্যিক সংস্থা খাজনা বকেয়া রেখেছে, তাদের নোটিস দেওয়া শুরু হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে তারা বকেয়া পরিশোধ না করলে মামলা রুজু করে তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার মতো কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.