পুরুলিয়ার বলরামপুরের ঘাটবেড়া এলাকায় ফের মাওবাদীরা হামলা চালাল। তৃণমূল সমর্থক অভিযোগে সোমবার রাতে এলাকার কয়েক জন দিনমজুরকে তারা মারধর করে। পরে স্থানীয় কর্মা গ্রামে এক তৃণমূল নেতার বাড়ি ঘেরাও করে হামলার চেষ্টা হয়। ওই নেতা ও তাঁর পরিবার তির চালিয়ে হামলাকারীদের ঠেকিয়ে রাখেন। যৌথবাহিনী পৌঁছলে মাওবাদীরা পালায়। দু’পক্ষের মধ্যে কিছু ক্ষণ গুলি বিনিময় হয় বলে স্থানীয় মানুষ জানিয়েছেন। তবে গুলি বিনিময়ের কথা স্বীকার করেনি পুলিশ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, “কর্মা গ্রামের এক জনের বাড়িতে ১০-১২ জন মাওবাদী হামলা চালিয়েছিল। যৌথবাহিনী সেখানে পৌঁছনোর আগে তারা বেড়সার দিকে পালায়।” তিনি জানান, ওই এলাকায় মঙ্গলবার বাহিনী তল্লাশি চালায়। মাও-নাশকতায় যুক্ত থাকার অভিযোগে রবি ও সোমবার এই এলাকা থেকেই পুলিশ তিন যুবককে ধরেছিল।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার সন্ধে সাতটায় মাওবাদীদের দলটি হানা দেয় ঘাটবেড়ার উপরপাড়ায়। কয়েক জন দিনমজুরকে তারা মারধর করে। জঙ্গলমহল উন্নয়ন বিরোধী প্রতিরোধ কমিটি, তৃণমূল ও পুলিশের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ না-রাখার জন্য মাওবাদীরা হুমকি দেয়। খানিক দূরের কর্মা গ্রামে তৃণমূল কর্মী মধুসূদন পরামানিকের বাড়িতে তারা হানা দেয়। আদিবাসী মূলবাসী কমিটি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মধুসূদনবাবুর অভিযোগ, “রাত প্রায় ন’টায় মুখে কাপড় বাঁধা, জলপাই রঙের পোশাক পরে থাকা মাওবাদীরা আমার দরজায় ধাক্কা মারে। চিৎকার করে হুমকি দিচ্ছিল, আমাকে ও ভাইকে তুলে নিয়ে যাবে। দোতলা থেকে আমরা তির চালিয়ে কিছু ক্ষণ ওদের ঠেকিয়ে রাখি।” তিনি জানান, খানিক পরে যৌথবাহিনী সেখানে পৌঁছয়। জঙ্গলমহল উন্নয়ন বিরোধী প্রতিরোধ কমিটি’র সভাপতি তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা অঘোর হেমব্রমের অভিযোগ, “খাবার নিয়ে আসার জন্য মাওবাদীরা এলাকার গরিব মানুষদের ব্যবহার করত। আমরা বোঝানোয় ওঁরা এখন মাওবাদীদের সাহায্য করছেন না। তাই মাওবাদীরা ওঁদের মারধর করছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, মাও-নাশকতায় যুক্ত থাকার অভিযোগে সোমবার বেড়সা এলাকা থেকে গোষ্ঠ কুমার ও শঙ্কর সিংহকে এবং রবিবার গোপাল কুমারকে গ্রেফতার হয়। আদালত তাদের জেল হাজতের নির্দেশ দিয়েছে। |