এর পরে বিপক্ষের দাবি মতো গুটি ছাড়া, একই কায়দায় ‘চান-চু’ এবং ‘চু-কিৎ-কিৎ’ ডাক ধরে ঘর পারপার করতে হয়। সেক্ষেত্রে ৫-এর ঘরে পা নামালেও নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ নেই। চতুর্থ পর্যায়ে হাত দিয়ে ‘আপ’ বলে মুখ বন্ধ করে নির্ধারিত সংখ্যক বার ঘর পার হতে হয়। সঙ্গী তার দান না শেষ করা পর্যন্ত প্রথম জনের মুখ বন্ধ থাকে। না হলে দু’জনেই মরা হয়ে যায়। পঞ্চম পর্যায়ে ‘কলকাতা-লতাপাতা’ ডাক ধরে নির্ধারিত বার ঘর পারাপার করতে হয়। ষষ্ঠ পর্যায়ে ‘জয়হিন-ফুটোটিন’ ডাক ধরে উপরের দিকে মুখ তুলে ঘর পার হতে হয় দাগ এড়িয়ে। এর পরে ঘর কেনার পালা। দান নেওয়া দল কিংবা খেলোয়াড় বিপক্ষকে ‘বুড়ি-বুড়ি বসে না দাঁড়িয়ে’ বলে প্রশ্ন করে। বিপক্ষের চাহিদা মতো ১ কিংবা ৮ ঘরের সামনে উল্টো দিকে বসে বা দাঁড়িয়ে মাথার উপর দিয়ে দাগ বাঁচিয়ে গুটি ছুড়তে হবে। যে ঘরে যার গুটি পড়বে সেই ঘরটি তার কেনা হয়ে যায়। গুটি দাগ স্পর্শ করলে দু’জনেই মরা। ঘর কিনতে পারলে অবশ্য নির্ধারিত ৫ নম্বর ঘরের পাশাপাশি পরবর্তী দানে নিজের ঘরেও পা নামাতে পারে এবং শ্বাসও নেওয়ার সুযোগ পায়। এর পরে বিপক্ষ দল দান নেওয়ার সুযোগ পায়। একই প্রক্রিয়ায় খেলার শেষে যে দল বা খেলোয়াড় বেশি ঘর কিনবে তারাই জয়ী হয়।
দ্বিতীয় প্রকারের খেলাটি হয় ‘খ’ চিহ্নিত ঘরে। ওই খেলায় ১-৪ জন একক ভাবে বা ৮ জন জোড়ায় জোড়ায় যোগ দিতে পারে। ডাক এবং নিয়ম একই থাকলেও কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে প্রথম খেলাটির সঙ্গে। এক্ষেত্রে ১ নম্বর ঘরে গুটি ফেলে কিৎ কিৎ ডাক-সহ গুটিকে নিয়ে দাগের বাইরে পাঠিয়ে ৯-এর ঘরে ধা বলে পা নামিয়ে নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ থাকে। এর পরে ওই ঘর থেকে দাগের বাইরে থাকা গুটিকে পা বাড়িয়ে ছুতে হয়। একই ভাবে ৮-এর ঘর পর্যন্ত ক চিহ্নিত ঘরে ডাক ধরে খেলা চলে। ৯-এর ঘরে চোখ বন্ধ করে গুটি ফেলে ১ নম্বর ঘর থেকে ডাক ধরে সেখানে পৌঁছে পায়ের সাহায্যে গুটিকে বাইরে পাঠাতে হয়। ওই গুটিকে পা বাড়িয়ে ছোঁয়ার পরে ঘর কেনার সুযোগ পায়। এই ভাবেই সম্পূর্ণ হয় এক পক্ষের খেলার বৃত্ত। ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়ার একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষিকা রাখী দাস, নানুরের স্বাস্থ্যকর্মী পূর্ণিমা দাসরা বলেন, “ছোটবেলায় সময় পেলেই এই খেলা খেলতাম। আমাদের মেয়েরা চর্চার অভাবে ওই খেলার কথা ভুলতে বসেছে।”
|