কারও দিন মজুরি থেকে, কারও মাস মাইনে থেকে দান করা প্রায় দু’ লক্ষ টাকায় কেনা হয়েছিল ১৬ কাঠা জমি। সম্প্রতি পঞ্চায়েতের বদান্যতায় ওই নীচু জমিটাকে ‘১০০ দিনের কাজ’-এর প্রকল্প থেকে মাটি ভরাট করে সমতল করা হয়েছে। সোঁদা গন্ধ ওঠা ওই ভেজা মাটির উপর খাটানো হয়েছে ত্রিপল। শীতের কুয়াশা ও ঠান্ডা আটকাতে চার পাশে চটের আচ্ছাদন। তার মধ্যেই কাঠের পাটাতন ও বাঁশের খুঁটি দিয়ে তৈরি অস্থায়ী নাট্যমঞ্চ। শিল্পের টানে, নাটকের প্রতি দায়বদ্ধতায় এ ভাবেই সেজেছে বীরভূমের সীমানা ঘেঁষা মুর্শিদাবাদের প্রত্যন্ত ব্লক বড়ঞার পাঁচথুপি। সেখানেই মঙ্গলবার বিনা টিকিটে কয়েক হাজার দর্শকের জন্য শুরু হল ৫ দিনের রবীন্দ্রনাট্যোৎসব। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেখানে মঞ্চস্থ হবে রবীন্দ্রনাথের ৮টি নাটক।
মঙ্গলবার উদ্বোধনী দিনের বিকালে ‘রবীন্দ্রনাথ ও উত্তর আধুনিকতা’ বিষয়ে আলোচনা করেন বহরমপুরের দুই অধ্যাপক মৃণাল চক্রবর্তী, শক্তিনাথ ভট্টাচার্য ও লোকসংস্কৃতি গবেষক পুলকেন্দু সিংহ। আয়োজক সংস্থা পাঁচথুপির ‘উদয়ন’-এর প্রযোজনা ‘গুপ্তধন’ ও ‘গোবরডাঙা নকশা’র প্রযোজনা ‘সুভা’ মঞ্চস্থের মধ্য দিয়ে ওই অজপাড়া গাঁয়ে শুরু হয় ‘রবীন্দ্রনাট্যেৎসব’। ‘গাঁ গঞ্জের পালা পরব’ নাম দিয়ে প্রতিবছর নাট্যোৎসব করা হলেও এ বার কেন ‘রবীন্দ্রনাট্যেৎসব’? ‘উদয়ন’-এর কর্ণধার বাসুদেব ঘোষ বলেন, “রবীন্দ্রনাথের জন্মের সার্ধশতবর্ষ শেষ লগ্নে এসে পৌঁছেছে। তাঁর লেখা অন্তত কয়েকটির মঞ্চাভিনয় গ্রাম গঞ্জের মানুষকে দেখানোর লোভ সামলাতে পারলাম না।”
পাঁচ দিনের ওই উৎসবের দ্বিতীয় দিন আজ বুধবার কৃষ্ণনগরের ‘সিঞ্চন’ মঞ্চস্থ করবে ‘মুক্তধারা’ ও ‘উদয়ন’ মঞ্চস্থ করবে ‘রথের রশি’। বৃহস্পতিবার রয়েছে হালিশহরের ‘মালঞ্চ’-এর দু’টি প্রযোজনা ‘মহামায়া’ ও ‘ত্যাগ’। চতুর্থ দিন শুক্রবার বহরমপুরের ‘ঋত্বিক’ মঞ্চস্থ করবে ‘ডাকঘর’। পর দিন সমাপ্তি সন্ধ্যায় হাওড়ার ‘নটধা’ ও বহরমপুরের ‘সুহৃদ’ মঞ্চস্থ করবে যথাক্রমে ‘মৃণাল একা’ এবং ‘তোতাকাহিনি’। |