বিমান নামাতে দুই মেজাজে ব্যা-ও
ঠেসে বাঁধা কাপড়ের থলি থেকে চুঁইয়ে পড়ছে জলের ফোঁটা। টানা বরফ থেরাপিতে বাঁ পায়ে কোনও সাড় নেই। অবশ!
চোট-আঘাতের যতটুকু কাঁটা গেঁথে আছে, সেটাকেও গোড়া থেকে উপড়ে ফেলে দিতে চাইছেন হোসে রামিরেজ ব্যারেটো। যাতে বুধবার যুবভারতীতে শুরু থেকেই খেলতে পারেন তিনি। মঙ্গলবার অনুশীলনের পরে সবুজ তোতার দাবি, “আমি পুরো ফিট। যেটুকু ব্যথা-যন্ত্রণা আছে, সব এ দিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে।” ঠোঁটের কোণে লেগে আছে স্বস্তির হাসি। ফুরফুরে মেজাজ।
ব্যারেটোকে যতটা খোশমেজাজে পাওয়া গেল, ততটাই গম্ভীর এক নাইজিরিয়ান। সুব্রতর ক্লাস শুরুর আগেই হাজির ওডাফা ওকোলি। একা একাই গোলে বল মেরে চলেছেন। শেষ দু’ম্যাচে গোল না পাওয়ার হতাশা যেন ঠিকরে ঠিকরে বেরোচ্ছিল তাঁর প্রতিটা অভিব্যক্তি থেকে। মুখে কুলুপ।
এয়ার ইন্ডিয়া ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে মোহনবাগানকে তাতাচ্ছে দুই বিদেশির দুই মেজাজ। যাঁদের কাঁধে চেপে ড্রয়ের বেড়াজাল ভেঙে জয়ের নদীতে ঝাঁপাতে চাইছে পালতোলা নৌকা।
এয়ার ইন্ডিয়া ম্যাচের ছক তৈরিতে ব্যস্ত সুব্রত-প্রশান্ত-ব্যারেটো।
মঙ্গলবার মোহনবাগান প্র্যাক্টিসে। ছবি: উৎপল সরকার।
আই লিগে শেষ দু’টো ম্যাচে জয় নেই। তিন পয়েন্টের খোঁজে তাই বাড়তি তৎপরতা চোখে পড়ল সবুজ-মেরুন অনুশীলনেও। কর্নার কিক, থ্রো কিংবা ফ্রি কিক-- প্রত্যেক বিভাগেই কড়া নজরদারি সুব্রতর। আনোয়ার-কিংশুকদের বোঝাতে কখনও তিনি ডিফেন্ডার। আবার ব্যারেটো-ওডাফাদের সঠিক দিশা দেখাতে কখনও স্ট্রাইকার। অনেকটা যে ভাবে নিজের খেলোয়াড়জীবনে বহু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে রক্ষণ থেকে আক্রমণের দ্বৈত ভূমিকায় দেখা যেত তাঁকে। বুধবার যুবভারতীতে বিস্ফোরণ ঘটানোর সব মশলাই তৈরি রাখছেন মোহন টিডি। তবে তাঁর জন্য সবচেয়ে বড় সুখবর হল, সুরকুমার সিংহ এবং অবশ্যই সুনীল ছেত্রী বাদে আর কোনও চোট-সমস্যা নেই দলে।
বাগানে আত্মবিশ্বাসের মনোরম হাওয়া চললেও, আত্মতুষ্টির কালো মেঘ নেই। প্রতিপক্ষ এয়ার ইন্ডিয়াকে যথেষ্ট সমীহ করছেন মোহন ফুটবলাররা। ব্যারেটো বলছিলেন, “এয়ার ইন্ডিয়া ভাল খেলছে। ওদের আমরা হালকা ভাবে নিচ্ছি না। তবে বুধবারের ম্যাচের জন্য যে ধরনের স্ট্র্যাটেজি সাজিয়েছি, তার আশি শতাংশ খেলতে পারলেই তিন পয়েন্ট চলে আসবে।”
‘বিমানবন্দর’ টপকাতে বুধবার সুব্রতর অস্ত্র আক্রমণাত্মক ফুটবল। ফরোয়ার্ডে ওডাফা-অসীম। মাঝমাঠে ব্যারেটো, লিমা, স্নেহাশিস ও জুয়েল রাজা। রক্ষণে কিংশুক, আনোয়ার, নবি এবং এন প্রদীপ। গোলে সংগ্রাম। পরের দিকে চাপ বাড়ানোর জন্য মণীশ মাথানি এবং রাকেশ মাসিকেও তৈরি রাখছেন সুব্রত। আসলে এয়ার ইন্ডিয়া ম্যাচে নিরামিষ জয় নয়, গোলের সংখ্যা বাড়ানোর দিকেও তাকিয়ে মোহনবাগান। আই লিগে চ্যাম্পিয়নশিপের দৌড়ে টিকে থাকার জন্য যা ভীষণ জরুরি।
মোহনবাগান তেতে থাকলেও, পিছিয়ে নেই এয়ার ইন্ডিয়াও। আই লিগের শেষের তিনটে ম্যাচই জিতেছে সন্তোষ কাশ্যপের দল। যার মধ্যে দু’টো বড় জয় ডেম্পো আর স্পোটির্ং ক্লুব দ্য গোয়ার বিরুদ্ধে। যে দু’টো দলের বিরুদ্ধে একটায় পাঁচ গোলের লজ্জা, অন্যটা মেরেকেটে ড্র ওডাফাদের। এয়ার ইন্ডিয়া কোচ বলছিলেন, “ঘরের মাঠে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল সব সময়ই কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে আমরাও প্রস্তুত। এই ম্যাচটা থেকেও তিন পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে চাই।” তাঁর টিমের সেরা অস্ত্র মননদীপ সিংহ এ বারের আই লিগে এখনও পর্যন্ত ভারতীয় ফুটবলারদের মধ্যে শীর্ষ গোলদাতা। বিদেশিদের পরেই মননদীপের গোলসংখ্যা ৫।
ব্যা-ও জুটি শান দিচ্ছেন অস্ত্রে। সন্তোষ কাশ্যপও ঢাল-তরোয়াল নিয়ে তৈরি। শেষ হাসি কে হাসেন, সেটা বুধবার বিকেলেই দেখা যাবে!

বুধবারে
আই লিগ

মোহনবাগান : এয়ার ইন্ডিয়া (যুবভারতী, ২-০০),
চার্চিল ব্রাদার্স : স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া (মারগাও),
মুম্বই এফসি : প্রয়াগ (মুম্বই), হ্যাল : ডেম্পো (বেঙ্গালুরু)।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.