পিংলায় সিপিএমের সম্মেলনে হামলা, অভিযুক্ত তৃণমূল
সিপিএমের লোকাল কমিটির সম্মেলনে হামলার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটল পিংলার দুজিপুরে। পুলিশের সামনেই হামলা চালানো হলেও পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ পদক্ষেপ করেনি বলেও অভিযোগ উঠেছে।
সম্মেলনে উপস্থিত পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাধিপতি তথা সিপিএম নেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, “সম্মেলন করতে দেওয়া হবে না বলে আগেই হুমকি দিয়েছিল তৃণমূল। পুলিশকে তা জানানোও হয়েছিল। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তবু পুলিশ উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা রাখেনি। ফলে পুলিশের সামনেই আমাদের দলীয় কর্মীদের মার খেতে হল।” অন্য দিকে, পিংলার তৃণমূল নেতা মহম্মদ মহসিন বলেন, “যে কোনও রাজনৈতিক দলই সম্মেলন করতে পারে। কিন্তু সিপিএম সম্মেলনের নামে এলাকায় অশান্তি ছড়াচ্ছে। সশস্ত্র দুষ্কৃতীদের নিয়ে এসেছে। এমনকী বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্তেরা সম্মেলনে এলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেনি। আগেও পিংলার মানুষ সিপিএমের ওই দুষ্কৃতীদের দেখেছে, সন্ত্রাস দেখেছে। তাই গ্রামবাসীরা ওদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। কেউ মারধর করেনি।”
এই সময়ে রাজ্য জুড়েই সিপিএমের দলীয় সম্মেলন চলছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় সম্মেলন হয়েছে। মঙ্গলবার সিপিএমের পিংলা জোনাল কমিটির অন্তর্গত দুজিপুর লোকাল কমিটির সম্মেলন ছিল। সিপিএমের দাবি, পুলিশ ও প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। এ দিন সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুজিপুর পার্টি অফিসের সামনে প্যান্ডেল করে সম্মেলনের সিদ্ধান্ত হয়। সিপিএমের অভিযোগ, সোমবার রাত থেকেই পার্টির সর্বক্ষণের কর্মীদের হুমকি দিতে থাকে তৃণমূল। জানিয়ে দেয়, সম্মেলন করা যাবে না। প্যান্ডেল খুলে নিতে হবে। এই হুমকির কথা পুলিশকেও জানিয়েছিলেন সিপিএম নেতৃত্ব। অন্তরাদেবী বলেন, “সম্মেলনে যাতে কোনও সমস্যা না হয় সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা রাখা হবে বলে পুলিশের তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল।”
কিন্তু সম্মেলন শুরু হতেই দেখা যায়, তৃণমূল মিছিল করছে। সম্মেলনস্থলের পাশ দিয়েই যাচ্ছে সেই মিছিল। সিপিএমের প্রশ্ন, একটি জায়গায় পুলিশের অনুমতি নিয়ে সম্মেলন হচ্ছে জেনেও পুলিশের সামনেই তৃণমূল কী ভাবে মিছিল করল? পুলিশ যদি সেই মিছিলের অনুমতি না দেয়, তা হলে মিছিল আটকে দেওয়া হল কেন? উত্তেজনা বাড়ছে দেখে সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য দ্রুত সম্মেলন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন। সম্মেলনে লোকাল কমিটির সম্পাদক হিসাবে পুনর্নির্বাচিত হন নিতাই ভট্টাচার্য। ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
সম্মেলন শেষ হতেই বাধে গোলমাল। সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন দলের কয়েক জন কর্মীকে মারধর করে। মারধরের ঘটনা থানায় জানানো যাবে না বলেও হুমকি দেয়। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে বাড়ি ভেঙে দেওয়া হবে, এলাকা ছাড়া করা হবে বলে হুমকি দেয়। এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সিপিএমের সাধারণ কর্মী-সমর্থকেরা। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, সম্মেলনে অনন্ত ধাড়া, কালী নায়েক, বিশ্বেশ্বর ভট্টাচার্যের মতো যাঁরা হাজির হয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত। ফের অশান্তি বাধাতেই চাইছেন। অথচ পুলিশও তাঁদের ধরছে না। তাই এলাকাবাসী বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। পুলিশের বক্তব্য, পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। তবু এলাকায় টহল চলছে। এ দিকে, সাঁকরাইলে সোমবার সিপিএম কর্মীদের মারধরে অভিযুক্ত ৪ তৃণমূল কর্মীকে মঙ্গলবার হাজির করা হয়েছিল ঝাড়গ্রাম আদালতে। বিচারক জামিনের আবেদন খারিজ করে ধৃতদের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। রোহিণী ব্লক-সদরে কৃষকসভার ডেপুটেশন ফেরৎ সিপিএম কর্মীদের উপরে সোমবার বিকেলে হামলা হয়। পুলিশ এই ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীদের গ্রেফতার করায় অনেকটাই ভরসা পেয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। রোহিণীতে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকা দলের জোনাল কার্যালয় মঙ্গলবার থেকেই খুলেছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.