সংস্কারের আগেই রাস্তার নামকরণ
অনুষ্ঠান, কাজিয়া কংগ্রেস-তৃণমূলের
রাস্তার নামকরণ অনুষ্ঠান নিয়ে কাজিয়ায় জড়াল কংগ্রেস ও তৃণমূল।
আরামবাগ শহরের বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন ব্লকপাড়া হয়ে তিরোল যাওয়ার এই রাস্তাটি বহু কালের পুরনো। ভাঙাচোরা, নিকাশির অভাবে পূতিগন্ধময় রাস্তাটি সংস্কারের দাবিও দীর্ঘ দিনের। কংগ্রেসের তরফে পুরসভার কাছে দাবি করা হয়, ওই রাস্তা সংস্কার করে যেন প্রয়াত কংগ্রেস নেতা তথা স্বাধীনতা সংগ্রামী শান্তিমোহন রায়ের নামে নামকরণ করা হয়। সংস্কারের কাজ এখনও শুরু হয়নি। পুরসভা সূত্রের খবর, সবেমাত্র সেই প্রক্রিয়া চলছে।
এ দিকে, মঙ্গলবার তৃণমূলের তরফে তড়িঘড়ি রাস্তাটির নামকরণ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কংগ্রেসের প্রস্তাব মতোই নামকরণ হয়েছে ‘শান্তিমোহন রায় সরণি’।
কিন্তু তৃণমূলের এই সিদ্ধান্তে একই সঙ্গে ‘বিস্ময়’ এবং ‘ক্ষোভ’ গোপন করেননি স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব। অন্য দিকে, তৃণমূলের যুক্তি, ১৯১৫ সালের ২৭ ডিসেম্বর এই দিনটিতেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন শান্তিমোহনবাবু। সে কথা স্মরণ রেখেই এ দিন রাস্তার নামকরণ অনুষ্ঠান করা হয়েছে। কিন্তু সংস্কারের কাজই যখন শুরু হয়নি, তখন এমন তাড়াহুড়োর দরকার পড়ল কেন? স্পষ্ট উত্তর নেই তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, তাদের ‘টেক্কা দিতেই’ এমনটা করা হয়েছে।
আরামবাগ পুরসভা সূত্রের খবর, কংগ্রেসের আরামবাগ ব্লক সভাপতি প্রভাত ভট্টাচার্য গত ১৫ অগস্ট সংশ্লিষ্ট রাস্তাটি শান্তিমোহনবাবুর নামে করার জন্য লিখিত আবেদন করেন। ২৮ অগস্ট পুরসভার সাধারণ সভায় সেই প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। প্রভাতবাবুকে ৩০ অগস্ট সে কথা চিঠি লিখে জানিয়ে দেন পুর কর্তৃপক্ষ। রাস্তাটি সংস্কারেরও দাবি করেছিলেন ওই কংগ্রেস নেতা। পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল কচ বলেন, “রাস্তা সংস্কারের প্রক্রিয়া চলছে। নামকরণেরও অনুমোদন হয়েছে।”
নামকরণ হল বেহাল এই রাস্তারই। মঙ্গলবার মোহন দাসের তোলা ছবি।
এ দিন সকালে ফিতে কেটে ‘শান্তিমোহন রায় সরণি’র উদ্বোধন করেন আরামবাগের বিধায়ক তৃণমূলের কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা। তিনি বলেন, “শান্তিমোহনবাবু কোন দলের ছিলেন, সেটা বড় কথা নয়। তিনি ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। রাস্তাটি নোংরা ঠিকই। কিন্তু উদ্বোধনের দিনটি বাছা হয়েছে ২৭ ডিসেম্বর, তাঁর ৯৭ তম জন্মদিন উপলক্ষে।”
অন্য দিকে, কংগ্রেস নেতা প্রভাত ভট্টাচার্য বলেন, “রাস্তার নামকরণের কৃতিত্ব নিতে গিয়ে যাঁর নামে রাস্তা, তাঁকেই মর্যাদা দিল না তৃণমূল। রাস্তাটি সংস্কারের আগে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নামকরণ অনুষ্ঠান করা হল।”
এ দিনের অনুষ্ঠানে ‘সৌজন্যের অভাব’ ছিল বলেও তাঁর অভিযোগ। প্রভাতবাবু জানান, পুরপ্রধান, উপ পুরপ্রধান কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। আমন্ত্রিত হয়েছিলেন প্রভাতবাবু নিজে। তিনি আবার ‘শর্ত সাপেক্ষে’ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানে তৃণমূলের পতাকা ব্যবহার করা যাবে না বলে আগাম জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। দলীয় স্লোগান দেওয়া যাবে না বলেও ‘শর্ত’ দেন তিনি। তৃণমূলের তরফে অবশ্য দু’টি ‘শর্তই’ মেনে নেওয়া হয়। তবে তৃণমূলের এই ভূমিকায় ‘ক্ষুব্ধ’ প্রভাতবাবু পরে বলেন, “আমরা খুব শীঘ্রই নতুন করে এ ব্যাপারে অনুষ্ঠান করব। রাস্তা সংস্কারের পরে শান্তিমোহনবাবুর মর্মর মূর্তি স্থাপন করে সেই অনুষ্ঠান হবে।”
এ দিনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে পুরপ্রধান জানান, লিখিত ভাবে কিছু না পেলেও মৌখিক ভাবে তাঁকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। তবে ‘ব্যস্ত থাকায়’ তিনি যেতে পারেননি। কৃষ্ণচন্দ্রবাবু বলেন, “তড়িঘড়ি উদ্বোধন করতে গিয়ে আমন্ত্রণে কিছু ত্রুটি থেকে গিয়েছে।”
স্বাধীনতা সংগ্রামী শান্তিমোহনবাবুর খরচেই ব্লকপাড়ায় তাঁর নিজের জমিতে আরামবাগ মহকুমা কংগ্রেসের মূল কার্যালয়টি তৈরি হয়েছিল বলে কংগ্রেস সূত্রে জানানো হয়েছে। সেই কার্যালয়টি আবার বেশ কয়েক বছর ধরে তৃণমূল দখল করে রেখেছে বলে প্রভাতবাবুর অভিযোগ। ঘটনার কথা রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এ বিষয়ে তৃণমূল বিধায়কের বক্তব্য, “যত দূর জানি, কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় হিসাবে ওই ভবন নথিভুক্ত নয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.