নিমন্ত্রণ সেরে ফেরার পথে বাড়ির সামনেই কয়েক জন মদ্যপ যুবকের হাতে বেধড়ক মার খেয়ে এক চোখের দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ওএনজিসি-র এক কর্তার। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে হুগলির ব্যান্ডেলের বলাগড় রোডে। সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় নামে ওএনজিসি-র ওই কর্তা কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর পরিবারের তরফে এ ব্যাপারে সোমবার চুঁচুড়া থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) অমিতাভ বর্মা বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ওই বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, সত্যব্রতবাবুর বাঁ চোখের দৃষ্টি ফেরার সম্ভাবনা অতি ক্ষীণ। তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চাশোর্ধ্ব সত্যব্রতবাবু কর্মসূত্রে আগরতলায় থাকেন। ব্যান্ডেলের বলাগড় রোডে বাড়িতে তাঁর স্ত্রী এবং এগারো বছরের মেয়ে তানিশা থাকেন। দিন কয়েক আগে সত্যব্রতবাবু বাড়ি ফেরেন। ঘটনার দিন রাত ১২টা নাগাদ স্ত্রী বিদিশাদেবী ও মেয়েকে নিয়ে নিজের গাড়িতেই বাড়ি ফিরছিলেন। ব্যান্ডেল চার্চের আশপাশে বেশ ভিড় ছিল।
সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় |
বিদিশাদেবী জানিয়েছেন, ব্যান্ডেল চার্চ পেরিয়ে বলাগড় রোডে ঢোকার মুখেই জনা আটেক যুবক নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তাঁদের গাড়ির সামনে চলে আসে। সত্যব্রতবাবু হর্ন দিতেই তারা গালিগালাজ শুরু করে। রাস্তা জুড়ে হাঁটতে থাকে। তাঁর এবং মেয়ের উদ্দেশে কটূক্তি করে। প্রতিবাদ না করে তাদের পিছনে আস্তে-আস্তে গাড়ি চালাতে থাকেন সত্যব্রতবাবু। অভিযোগ, বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থেকে নামতেই ওই যুবকেরা সত্যব্রতবাবুর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বেধড়ক মারে। ঘুঁষি লাগে তাঁর বাঁ চোখে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। এর পরে যুবকেরা চলে যায়। সত্যব্রতবাবুকে প্রথমে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল, তার পরে সেখান থেকে শেওড়াফুলির একটি চক্ষু হাসপাতাল এবং পরে কলকাতার ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বিদিশাদেবী বলেন, “হামলার সময়ে আমরা ভয়ে কাঁপছিলাম। আমি প্রতিবাদ করায় ওরা গালাগাল ও হুমকি দেয়।” স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরেই ওই এলাকায় সমাজবিরোধীমূলক কার্যকলাপ বেড়েছে। পুলিশের ভূমিকায় তাঁরা অসন্তুষ্ট। |