নির্বাচনের দিন ঘোষণার পরে সরকারি কর্মচারীরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলেও নির্বাচন কমিশন ও মণিপুর সরকারের দুশ্চিন্তা বাড়ালেন শিক্ষকরা। শিক্ষকরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের আর্থিক দাবি দাওয়া মেনে না নিলে কর্মবিরতি চলবে। নির্বাচনে কাজও তাঁরা করবেন না। অন্য দিকে, মণিপুরের একটি মাওবাদী সংগঠনও ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছে। ইউএনএলএফ মণিপুরে ‘ভারতীয় নির্বাচন’ নয়, গণভোটের দাবি জানিয়েছে। ইউপিপিকে ও কেসিপিও ভোট বয়কটের আহ্বান জানিয়েছে।
রাজ্য সচিবালয়-সহ অন্য সরকারি দফতরের কর্মীরা বকেয়া বেতন ও অন্যান্য দাবিতে ২৪ অক্টোবর থেকে কাজ বন্ধ রেখেছিলেন। ফলে প্রশাসন ও আম জনতার নাজেহাল দশা। তবে ২৮ জানুয়ারি, মণিপুরে নির্বাচনের দিন ঘোষণা হওয়ার পর কর্মীদের যৌথ মঞ্চের তরফে কাল জানানো হয়, ভোটের আগে কর্তব্যের খাতিরে তাঁরা কাজে ফিরছেন। কিন্তু শিক্ষক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ (কোটা) সাফ জানায়, তাঁরা কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন। গত কালের বৈঠকে, কোটা নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, বকেয়া বেতন না পেলে প্রাথমিক থেকে উচ্চ-মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকেরা কাজে যোগ দেবেন না। এমনকী, নির্বাচনের কোনও কাজে শিক্ষকরা অংশ নেবেন না। নির্বাচনের কাজে রাজ্যের বড় ভরসা শিক্ষকরাই। তাঁরা অসহযোগিতার কথা ঘোষণা করায় মণিপুর শিক্ষা বিভাগ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে।
এ দিকে, মণিপুরের ‘মাওয়িস্ট কমিউনিস্ট পার্টি, মণিপুর’ (এমসিপিএম) বিবৃতি দিয়ে রাজ্যের দশম বিধানসভা নির্বাচন বয়কট করার ডাক দিয়েছে। তবে এই মাওবাদী সংগঠনটি জানিয়েছে, নিরীহ মানুষের হত্যা ও অবাঞ্ছিত রক্তপাত এড়াতে তারা যথাসাধ্য চেষ্টা করবে। তারা ৩০ জানুয়ারি অবধি রাজ্যে প্রচারমূলক সুমাং লীলা বা এই ধরনের কোনও জলসা অথবা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে। ইউএনএলএফ সংগঠনের কারাবন্দি চেয়ারম্যান রাজকুমার মেঘেন ওরফে সানাইয়ামা আদালতে হাজিরা দিতে আসার পথে সাংবাদিকদের জানান, মণিপুরবাসী ও মণিপুরের কোনও সংগঠনেরই নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত নয়। স্বাধীন মণিপুরের অধিকার ফিরিয়ে আনতে, রাজ্যে গণভোটই একমাত্র পথ। জঙ্গি সংগঠন কেসিপি-ও ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার পি সি লামকুংগা জানান, আসন্ন নির্বাচনে ব্যাপক সন্ত্রাসের আশঙ্কা থাকায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার পুলিশকর্মী ও বর্তমানে রাজ্যে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি আরও ৩২৫ কোম্পানি আধা-সেনা মোতায়েন করা হবে।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ১১ জানুয়ারি। প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৪ জানুয়ারি। রাজ্যে মোট ভোটার ১৬,৭৭,২৭০ জন। বুথের সংখ্যা ২৩২৫। এর মধ্যে প্রায় ৩০০টি উত্তেজনা প্রবণ ও আড়াইশোটি অতি উত্তেজনা প্রবণ বুথ। সেগুলিতে সিসি টিভি থাকবে। ভোট পর্ব লাইভ দেখাবারও চেষ্টা চলছে। গণনা হবে ৪ মার্চ। |