চাল তৈরির যন্ত্র নিয়ে বিবাদে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হল কালনা শহর সংলগ্ন শাসপুরের দেবনাথপাড়ায়। মঙ্গলবার এই ঘটনায় জখম হন দু’পক্ষের ১৪ জন। তাঁদের মধ্যে এক মহিলা-সহ ৬ জনকে কালনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা হলেন সুরজিৎ পাল ও রবীন পাল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাসখানেক আগে কালনা ২ ব্লকের পূর্ব সাতগাছিয়ার শাসপুরের বাসিন্দা বাসুদের পাল ও তাঁর ছেলে সুরজিৎ ধান সিদ্ধ করার জন্য একটি স্টিমের পাড়ন তৈরির পরিকল্পনা নেন। অনুমতি দেয় পঞ্চায়েতও। কাজ শুরু করতে গেলে আপত্তি করে সুকুমার পাল, নারায়ণচন্দ্র পাল, মাধব দেবনাথ ও নারান পাল-সহ এলাকার কিছু বাসিন্দা। তাঁদের দাবি ছিল, ঘিঞ্জি এলাকায় স্টিমের পাড়ন তৈরি হলে পরিবেশ দূষিত হবে। ধান সিদ্ধ করার পরে জল নিষ্কাশনের ক্ষেত্রেও অসুবিধা হবে। তাঁরা পঞ্চায়েত প্রধান, বিডিও, পুলিশ-সহ বেশ কয়েক জনের কাছে এ ব্যাপারে লিখিত আবেদন জানান। |
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকালে রাজমিস্ত্রি পাড়ন তৈরির কাজ শুরু করতেই বাসুদেববাবুর বাড়িতে হাজির হন এলাকার কয়েকজন। তাঁরা দাবি করেন, পাড়ন তৈরির ব্যাপারে ২০ ডিসেম্বর মহকুমা আদালত স্থগিতাদেশ দিয়েছে। তাই কাজ বন্ধ করে দিতে হবে। বাসুদেববাবু কাজ বন্ধ করতে চাননি। এর পরেই দু’পক্ষের সংঘর্ষ বেধে যায়। বাঁশ, লাঠি, ইটের আঘাতে জখম হন দু’পক্ষের মোট ১৪ জন। জখম হন বাসুদেববাবুও। হাসপাতালে শুয়ে বাসুদেববাবু বলেন, “নিয়ম মেনেই পাড়ন তৈরির কাজ শুরু করেছিলাম। কয়েক জন অতর্কিতে এসে আমাদের আঘাত করে।”
এ দিকে, স্থানীয় বাসিন্দা পরিমল মণ্ডলের দাবি, “বাসুদেববাবুর প্রতিবেশী সুকুমার পাল বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত স্থগিতাদেশের নির্দেশ দিলেও বাসুদেববাবু ও তাঁর ছেলে জোর করে পাড়ন তৈরির কাজ শুরু করলে বাসিন্দারা প্রতিবাদ জানান।
পূর্বসাতগাছিয়া পঞ্চায়েত প্রধান জগবন্ধু মণ্ডল বলেন, “পঞ্চায়েতের নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি নিয়েই পাড়ন তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও কিছু বাসিন্দা এ দিন বাসুদেববাবুদের মারধর করে।” ঘিঞ্জি এলাকায় পাড়ন তৈরির অনুমতি দেওয়ার প্রসঙ্গে প্রধান বলেন, “বর্তমানে উনুনের পাড়নে কাজ করতে গিয়ে বাসিন্দাদের নানা সমস্যায় পড়ছেন। তাই স্টিমের পাড়ন তৈরি হচ্ছে। আর এলাকা ঘিঞ্জি হলে তো সব পাড়নই বন্ধ করে দিতে হয়।” আদালতের স্থগিতাদেশের বিষয়টি জানা ছিল না বলে দাবি প্রধানের।
পুলিশ জানায়, দু’পক্ষই অভিযোগ করেছে। ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। |