সন্ধ্যায় খ্রিষ্টোৎসব ও বিনোদন মঞ্চে লোকসাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সরকারি ভাবে শেষ হল ১১৭তম পৌষ উৎসব। সরকারি ভাবে তিনদিনের উৎসব হলেও প্রতি বছরের মতো এ বারও মেলার স্থায়িত্ব আরও একদিন বাড়িয়েছেন। তাই আজ সোমবার পর্যন্ত সমস্ত স্টলে বিদ্যুৎ, জলসরবরাহের মতো সমস্ত জরুরি পরিষেবা দেবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত বলেন, “অন্যান্য বারের মতো এ বারও পৌষ উৎসব এক দিন হয়েছে। আজ উৎসব শেষ হবে।”
কনকনে ঠান্ডায় শীতবস্ত্র গায়ে চাপিয়ে মেলায় প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা। তবে শুক্র ও শনিবারের থেকে রবিবার ভিড়টা ছিল বেশি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৌমিতা সাহা, শিলিগুড়ির শঙ্কর দেবনাথ, হাওড়ার পাপিয়া সাউরা ২৩ ডিসেম্বর থেকে শান্তিনিকেতনে এসেছেন। তাঁদের কথায়, “প্রথম দু’দিন ভিড় কম ছিল। রবিবার ভিড় বেড়েছে। কোনাকাটা করছি। ঠান্ডাও উপভোগ করছি।” |
ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী। |
এ দিকে, মেলার স্থায়িত্ব একদিন বাড়ায় আশার আলো দেখছেন ব্যবসায়ী, কুটির শিল্পীরা। কাটোয়ার ফুচকা বিক্রেতা বৈরাগী দাসের কথায়, “প্রথম দু’দিন তেমন বিক্রি হয়নি। এ বার ভিড় থিক থিক করছে। এ বারও মেলায় সময়সীমা একদিন বেশি বাড়ানো হয়েছে। পরিবারের সকলে এসেছি।” ডোকরা শিল্পী জয়দেব দাস আশপাশের গ্রাম-গঞ্জের সঙ্গীদের নিয়ে পশরা নিয়ে এসেছেন। তাঁর কথায়, “অন্য বার তো প্রত্যেক দিন জিনিসপত্র বাড়ি থেকে আনতে হত। এ বার প্রথম দিন যা জিনিস এনেছিলাম তার টাকা ওঠেনি। দেখা যাক হাতে আরও এক দিন সময় আছে!” আর ক্রেতা মহিদাপুরের, চাষি নুরউদ্দিন মোল্লা বলেন, “বাড়ির হরেক রকমের কেনাকাটা অনেকটা পৌষ মেলায় সেরে নিতাম। কিন্তু ধানের দাম না পাওয়ায় কেনা কাটাই হয়নি। কিন্তু পরিবারের লোক তো ওসব বোঝেন না। তাই পরিবারের সকলে মিলে শেষ দিনে মেলা ঘুরতে এসেছি।” ঠান্ডা জাঁকিয়ে পড়ায় হাসি ফুটেছিল ভুটিয়াদের মুখে। কিন্তু দু’দিন বিক্রি তেমন হয়নি। একদিন মেলার সময় বাড়ায় ভুটিয়াদের পাশাপাশি আশায় বুক বাঁধছেন শিল্পীরাও। |