মাস দেড়েক বন্ধ থাকার পরে অবশেষে রামপুরহাটের বড়মেশিয়া, বড়পাহাড়ি, ধরমপাহাড়ি, দিঘলপাহাড়ি এলাকার পাথর খাদান ও ক্রাশারগুলি চালু হল। শনিবার থেকেই কিছু কিছু করে ওই সব খাদান ও ক্রাশারে কাজকর্ম শুরু হয়েছিল। রবিবার থেকে কার্যত পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে বন্ধ থাকা শ’দুয়েক খাদান-ক্রাশারে।
স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির পক্ষে নরেশ দাস, রাজেল শেখ, সুপ্রিয় চট্টোপাধ্যায়, মিলন শেখদের দাবি, এলাকায় ‘নিরাপত্তাহীনতার’ জন্যই তাঁরা পাথর শিল্পাঞ্চলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্যবসা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। মালিক পক্ষের অভিযোগের তির বীরভূম জেলা আদিবাসী গাঁওতার দিকে। ইতিমধ্যে প্রশাসন দূষণ নিয়ন্ত্রণ-সহ অন্যান্য কাগজপত্র পরীক্ষা করে দেখছে। মাকিপক্ষের বক্তব্য, দীর্ঘদিন পাথরশিল্প বন্ধ থাকার জন্য এলাকার শ্রমিক সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে ক্রাশার ও খাদান খুলে দেওয়ার জন্য তাঁদের কাছে আবেদন রাখা হয়েছিল। সমিতির এক কর্তার কথায়, “এলাকায় এখন ধান কাটার মরসুম শেষ। ১০০ দিনের কাজও তেমন হচ্ছে না। ক্রাশারগুলির উপরে নির্ভর করেই স্থানীয় গরিব মানুষদের সংসার চলে। তা ছাড়া ক্রাশার ও খাদানগুলিতে কর্মরত অধিকাংশ শ্রমিকই আদিবাসী সম্প্রদায়ের। সামনে তাঁদের বাঁদনা পরব। এই সব কথা মাথায় রেখেঅ ক্রাশার ও খাদান চালু করা হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও পুলিশ-প্রশাসনকে দেখতে অনুরোধ করেছি।”
বস্তুত, জেলা আদিবাসী গাঁওতা এবং মালিক পক্ষের মধ্যে বিবাদের জেরে ডিসেম্বরের গোড়া থেকেই রামপুরহাটের ওই চার এলাকার অধিকাংশ ক্রাশার ও খাদান বন্ধ ছিল। যার জেরে এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক রুজি হারান। সম্প্রতি প্রশাসন ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করলেও অচলাবস্থা কাটেনি। মূলত দূষণ রোধে ব্যবস্থা না নেওয়া এবং খাদান-ক্রাশারের বৈধতা সংক্রান্ত কাগজপত্র না থাকার অভিযোগ তুলেছে গাঁওতা।
এরই মধ্যে মালিক পক্ষ খাদান ও ক্রাশার চালু করে দেওয়ায় কি অশান্তির আশঙ্কা বাড়ল?
জেলা আদিবাসী গাঁওতার সম্পাদক রবিন সোরেন অবশ্য কাজে বাধা না দেওয়ার কথাই জানিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, “মালিক সমিতিই ক্রাশার ও খাদান বন্ধ রেখেছিল। তারাই খুলছে। অহেতুক গাঁওতার নাম জড়িয়ে অভিযোগ করছে মালিকপক্ষ। প্রশাসন যেহেতু বিষয়টি দেখছে, আমরা তাই খাদান বা ক্রাশার খুলতে আপাতত বাধা দেব না।” রামপুরহাটের মহকুমাশাসক বৈভব শ্রীবাস্তব বলেন, “সমস্ত ক্রাশার ও খাদান মালিকের কাছ থেকে কাগজপত্র পেয়েছি। সেগুলি পরীক্ষা করার কাজ চলছে।” |