পাঁচটি লিফ্টের মধ্যে দু’টি প্রায় দেড় বছর ধরে অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। আরও একটি লিফ্ট প্রায়ই বিকল হয়ে যায়। সারানোর জন্য ডব্লিউবিআইডিসি-তে (ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন) বহু বার আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ কলেজ কর্তৃপক্ষের। এ দিকে, পূর্ত দফতর প্রকল্প-ব্যয় না জানানোয় নতুন দু’টি লিফ্ট বসানোর পরিকল্পনাও বাস্তবায়িত যাচ্ছে না। ফলে চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে মেডিক্যালের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক থেকে শুরু করে হাসপাতালের রোগী ও তাঁদের আত্মীয়দের।
কলেজের অধ্যক্ষ সুকুমার মাইতি-র আক্ষেপ, “দীর্ঘ দিন ধরে বিকল হয়ে পড়ে থাকা লিফ্ট এখনও সারাচ্ছে না ডব্লুবিআইডিসি। নতুন লিফ্টের জন্য কত খরচ হবে তার এস্টিমেট দিচ্ছে না পূর্ত দফতরও। এ জন্য চরম ভোগান্তি হচ্ছে।” ডব্লিউবিআইডিসি-র দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার দেবাশিস সরকারের বক্তব্য, “লিফ্ট মেরামতে পদক্ষেপ করা হয়েছে। আশা করি, শীঘ্রই এই কাজ হয়ে যাবে।” অন্য দিকে পূর্ত দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শ্যামল প্রতিহারেরও আশ্বাস, “এ বার দ্রুত কাজ হবে।”
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের পুরনো ভবনে ৩টি লিফ্টের ২টি দেড় বছর ধরে খারাপ। ফলে সিঁড়ির ধাপ ভেঙেই চিকিৎসক ও ছাত্র-ছাত্রীদের দোতলা, তিনতলা বা চারতলায় উঠতে হচ্ছে। কলেজ ভবনের পাশাপাশি নতুন চারতলা ভবনে দু’টি লিফ্ট তৈরি করা হয়েছে। তারও একটি প্রায়ই খারাপ হয়ে যায়। ওই চারতলা ভবনে সাধারণ মেডিসিন বিভাগটি স্থানান্তরিত হয়েছে। আর কয়েকটি বিভাগের আউটডোরও রয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে ওই ভবনে আরও কয়েকটি ওয়ার্ড ও অপারেশন থিয়েটার চালু হওয়ার কথা। প্রয়োজন আরও ২টি লিফ্টের। কারণ, গুরুতর অসুস্থ রোগীদের কাঁধে করে চারতলায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই কলেজ কর্তৃপক্ষ রাজ্য সরকারের কাছে নতুন লিফ্টের জন্য অর্থবরাদ্দের আবেদনও জানিয়েছিল। কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, “সরকার অর্থ দেবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু তার জন্য প্রকল্প-ব্যয় জানাতে বলেছে। কিন্তু পূর্ত দফতর সেই কাজটাই করে দিচ্ছে না।”
এরই মধ্যে নতুন ভবন থেকে জরুরি বিভাগ ও অন্যান্য ওয়ার্ড পর্যন্ত রোগীদের নিয়ে যাওয়ার পথে শেড তৈরিতে বিধায়ক তহবিল থেকে অর্থ দিয়েছেন মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি। হাসপাতালের ভিতরে পুকুর সংস্কার ও পুকুরের চারদিক সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার জন্যও অর্থ দিচ্ছেন বিধায়ক। সব মিলিয়ে বিধায়ক তহবিল থেকে ১৮ লক্ষ টাকা দেওয়া হচ্ছে। বিধায়কের অনুদানে খুশি কলেজ-কর্তৃপক্ষও। |