স্বাস্থকেন্দ্রের ভবন নির্মাণ নিয়ে সংশয় |
দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার কাজ ছাড়তে চাওয়ায় রামনগর ২ ব্লকের নিজমৈতনা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ আপাতত বিশ বাঁও জলে। গত ১৩ ডিসেম্বর স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদে লিখিত চিঠি পাঠিয়েছেন ঠিকাদার প্রণব সাহু। তাঁর অভিযোগ, “স্বাস্থ্যকেন্দ্র যেখানে হওয়ার কথা, সেখানে এখন গাছপালার জঙ্গল। বেনিফিশিয়ারি কমিটি বা রোগী কল্যাণ সমিতিকে বারবার গাছপালা কাটার কথা বলা হলেও তারা কিছুই করেনি। ফলে ইট-বালি মজুত করেও কাজ শুরু করা যায়নি।” বেনিফিশিয়ারি কমিটি ঠিক মতো গঠন হয়নি অভিযোগ তুলে স্থানীয় লোকজন কাজে বাধা দিয়েছে বলেও অভিযোগ প্রণববাবুর। অভিযোগ অস্বীকার করে মৈতনা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান তমালতরু দাস মহাপাত্র বলেন, “কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয় মানুষের কিছু ক্ষোভ থাকতে পারে। কিন্তু এমন কোনও বিক্ষোভ হয়নি যে ঠিকাদারকে কাজ ছেড়ে চলে যেতে হবে। আসলে টেন্ডারের দরে কাজ করলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে ঠিকাদারের। তাই কাজ ছাড়তে চাইছেন ঠিকাদার।” ২০০৭ সালে নিজমৈতনা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি ১০ শয্যার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উন্নীতকরণের জন্য নতুন ভবন নির্মাণের টেন্ডার ডাকে জেলা পরিষদ। নির্মাণ-কাজের জন্য ৪৫ লক্ষ টাকার ওয়ার্ক অর্ডার পান প্রণববাবু। ২০০৮ সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। ইতিমধ্যে নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রণববাবু জেলা পরিষদে সংশোধনী দর দাবি করেন। ২০০৯ সালে ২৪ লক্ষ টাকা বাড়িয়ে প্রকল্পের জন্য ৬৯ লক্ষ টাকা ধার্য করা হয়। স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্যা গীতা দাসকে সভাপতি করে নতুন একটি বেনিফিশিয়ারি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু এখন ঠিকাদারই কাজ করতে না চাওয়ায় নতুন ভবন আদপে নির্মাণ হবে কি না তা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে। জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন বলেন, “দর সংশোধনের পরেও ঠিকাদার কেন কাজ ছাড়তে চাইছেন জানি না। ঠিকাদারের সঙ্গে বৈঠকে বসা হবে। আশা করি বৈঠকেই সমস্যার সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসবে।”
|
ফিল্টার বসছে পাঁচশো স্কুলে |
কেন্দ্রের জলমণি প্রকল্পে পূর্ব মেদিনীপুরের ৫০০টি মাধ্যমিক স্কুলে চলতি বছরে ফিল্টার বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশনের আর্থিক সহায়তায় এই প্রকল্পে প্রতিটি স্কুলের জন্য ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ওই টাকায় স্কুলে ফিল্টার বসানোর কাজ চলছে। জেলা পরিষদ ও জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছাত্রছাত্রীদের আর্সেনিক ও আয়রনমুক্ত পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করা। এ জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের পক্ষ থেকে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বসানো হচ্ছে ওই ফিল্টার। চলতি আর্থিক বছরে প্রথম পর্যায়ে পূর্ব মেদিনীপুরের ২৫০টি মাধ্যমিক স্কুলের জন্য ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৫০টি স্কুলে ফিল্টার বসানো হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। যাতে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ৫০০টি বিদ্যালয়েই ফিল্টার বসানোর কাজ শেষ হয়ে যায়। তমলুক জেলা পরিষদ অফিসে মঙ্গলবার সভাধিপতি, কর্মাধ্যক্ষ ও জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে এ নিয়ে বৈঠক হয়েছে। জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেন বলেন, “জেলার মাধ্যমিক স্কুলগুলির পাশাপাশি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্র, হাইমাদ্রাসায় এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়-সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতে এই প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ হয় সে জন্য প্রস্তাব পাঠানো হবে।” |