|
|
|
|
সংস্কার থমকে জাতীয় সড়কে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি |
বেহাল জাতীয় সড়কের এক অংশে কবে মেরামতির কাজ শুরু হবে কর্তৃপক্ষের জানা নেই। অন্য অংশে মেরামতির কাজ শুরু হলেও মাঝপথে থমকে গিয়েছে। শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি শহরের পাশ দিয়ে চলে গিয়েছে ৩১ ডি জাতীয় সড়ক। উত্তর পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগকারী অন্যতম এই সড়কের প্রায় ৫০ কিলোমিটার এলাকা বছরখানেক ধরেই খানাখন্দে ভরে গিয়ে বেহাল হয়ে রয়েছে। প্রতিনিয়ত বড় বড় গাড়ির চাকার আঘাতে রাস্তা ভেঙেই চলেছে। বাড়ছে যাত্রীদের দুর্ভোগ। জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ির মাত্র ৪৫ কিলোমিটার রাস্তা যেতে গড়পড়তা এক ঘন্টার কম সময় লাগলেও রাস্তার বেহাল দশার কারণে দু ঘন্টা বা তারও বেশি সময়ের আগে যাতায়াত সম্ভব হচ্ছে না। জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া এই জাতীয় সড়কেই রয়েছে এক কিলোমিটার লম্বা তিস্তা সেতু। দীর্ঘ টালবাহানার পরে মাসখানেক আগে এই সেতু সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। সেতুর ওপরের পিচের আবরণ সরিয়ে দেওয়ার পরেই হঠাৎই সেই কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি সংস্থার কর্মীরা কাউকে কিছু না জানিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য যতটা চাপ দেওয়া সম্ভব জেলা প্রশাসনের তরফে তা অব্যাহত রাখা হয়েছে।” বছর দুয়েক আগে ১২ এ রাজ্য সড়ককে জাতীয় সড়কের মর্যাদা দেওয়া হয়। সড়কের দায়িত্ব নেয় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ তার পর থেকেই টালবাহানা চলছে। ফি বছর বর্ষার আগে এবং পরে রাস্তা মেরামতির কাজ অনিয়মিত হয়ে রয়েছে দু’বছর ধরে। ২০০৯ সালে বর্ষার পরে গর্তে ভরা শিলিগুড়ি থেকে তিস্তা সেতু পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা মেরামতির জন্য প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করে জাতীয় সড়ক। সেই কাজ শুরু হতে লেগে যায় ৬ মাসেরও বেশি সময়। ততদিনে রাস্তার হাল আরও খারাপ হয়ে গিয়েছে। তার ফলে ছয় মাস পরে যে কাজ হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় সিকি ভাগও হয়নি বলে অভিযোগ। ফলশ্রুতি রাস্তা মেরামতির পরে দু’মাসের মধ্যেই ফের আগের বেহাল দশায় ফিরে গিয়েছে জাতীয় সড়ক। একই ঘটনা ঘটেছে ২০১০ সালেও। ওই বছর জাতীয় সড়কে জোড়াতালি দিয়ে গর্ত বন্ধ করার পরে কয়েক মাসের মধ্যে পুর্ণাঙ্গ মেরামতির কাজ হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হলেও তা করা হয়নি। ফলে জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ির ৪৫ কিলোমিটার রাস্তায় বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কোনও এলাকায় রাস্তার দু’পাশ ধসে গিয়েছে। গোটা রাস্তাই দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে রয়েছে বলে নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ। রাস্তার বেহাল দশার কারণে দুর্ঘটনায় গত সোমবার জলপাইগুড়ি লাগোয়া তিস্তা সেতুতে এক সাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের প্রকল্প আধিকারিক পঙ্কজ মিশ্র বলেন, “কিছু পদ্ধতিগত কারণে তিস্তা সেতুর কাজ বন্ধ রয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কাজ শুরু হয়ে যাবে। শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি অংশের মেরামতির জন্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করে মাসখানেক আগে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।” সেতুর মেরামতির কাজ শুরু হলেও কয়েকদিন আগে কাজের বরাত পাওয়া ঠিকাদারি সংস্থার কর্মীদের দেখা মিলছে না বলে অভিযোগ। কাজ শুরুর পরে সেতুর পিচের আস্তরণ ভেঙে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পিচের আবরণ সরে শুধুমাত্র কাঠামোর ওপরে ভর দিয়ে দাড়িয়ে রয়েছে সেতুটি। এবড়ো খেবড়ো সেতু দিয়ে চলাচল আরও বিপজ্জনক হয়ে দাড়িয়েছে। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য চন্দন ভৌমিক বলেন, “হঠাৎই সেতুর কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ঠিকাদারি সংস্থার কোনও কর্মী নেই। বিষয়টি ওপর মহলে জানিয়েছি।” |
|
|
|
|
|