|
|
|
|
পাঠ্যবই নিয়ে সংঘাত রাজ্যের সঙ্গে |
বেনজির ধর্মঘটের পথে বইপাড়া |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পাঠ্য পুস্তকের নির্মাণ, প্রকাশনা এবং বিক্রির সঙ্গে যুক্ত রাজ্যের সব ক’টি সংগঠন সোমবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘটে নামছে। নব গঠিত জয়েন্ট কাউন্সিল ফর বুক ট্রেডার্স অ্যান্ড অ্যালায়েড ইন্ডাস্ট্রিজের পক্ষ থেকে বুধবার এই ঘোষণা করা হয়। রাজ্যে প্রকাশনার ইতিহাসে এই প্রথম কোনও ধর্মঘট ডাকা হল। ফলে শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই পাঠ্য বই নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে ছাত্রছাত্রীরা। এ ছাড়াও বইমেলার মুখে মুদ্রণ, কাগজ ব্যবসা ও বাঁধাই শিল্পের ধর্মঘটও পরিস্থিতিকে আরও ঘোরালো করে তুলবে বলে আশঙ্কা।
ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সমস্ত পাঠ্য পুস্তক নিজেদের দায়িত্বেই ছেপে বিক্রি করার যে সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকার নিয়েছে, তার প্রতিবাদেই এই ধর্মঘট। ফোরামের আহ্বায়ক অশোক রায় বলেন, “সরকারের এই সিদ্ধান্তে পাঠ্য পুস্তক প্রকাশনা, মুদ্রণ, বাঁধাই,কাগজ ব্যবসা এবং বিক্রির সঙ্গে যুক্ত ১৩ লাখেরও বেশি মানুষ কর্মহীন হবে।” তাঁদের অভিযোগ, শিক্ষামন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত সমস্ত স্তরে আবেদন করেও সুরাহা হয়নি। |
|
কলেজ স্ট্রিটের এই চেনা ছবিতেই কি এ বার অনিশ্চয়তার ছায়া! |
অশোকবাবু জানান, গত মাসে প্রকাশনা সংগঠনের প্রতিনিধিদের ডেকে মুখ্যমন্ত্রী যে প্রতিশ্রুতি দেন, তা কার্যকর করার কোনও ইঙ্গিত এখনও মেলেনি। মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশকদের জানিয়েছিলেন, তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে যেন সমস্যাগুলো মিটিয়ে নেন। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বহু বার আবেদন করেও কোনও লাভ হয়নি। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করেও তাঁরা সাড়া পাননি। অশোকবাবুর কথায়, “শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ধর্মঘট ডাকায় পড়ুয়ারা নতুন বই কিনতে গিয়ে অসুবিধায় পড়বে। কিন্তু এ ছাড়া উপায় ছিল না।” স্কুলে পাঠ্য ৩০টি বইয়ের মধ্যে ১১টি বই বর্তমানে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্রকাশ করে। সেই বইগুলো প্রকাশকেরা কিনে জেলায় জেলায় পুস্তক বিক্রেতাদের মাধ্যমে বিক্রির ব্যবস্থা করে।
এখানেই শেষ নয়। এত দিন সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পে ছাত্র পিছু ২৫০ টাকা স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়া হত। সেই টাকায় সব বই কিনেও ছাত্রের হাতে টাকা থাকত খাতা-পেনসিল কেনার জন্য। এই বছর স্কুলে টাকা না পাঠিয়ে বই পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। অশোকবাবু জানান, ষষ্ঠ শ্রেণিতে যে ৮টি বই পাঠ্য তার চারটি সরকারি। ওই চারটি বই গত বছরও বিক্রি হয়েছে ৭৫ টাকায়। এই বছর সরকার ওই চারটি বইয়েরই দাম ধার্য করেছে ১৭৪ টাকা। সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলোকে বই সংগ্রহ করতে হবে জেলা শিক্ষা দফতর থেকে। বাকি চারটি বেসরকারি প্রকাশনার বই তাঁদের কিনতে হবে অবশিষ্ট ৭৬ টাকায়। ফলে সমস্যা বাড়বে পড়ুয়াদেরও। |
|
|
|
|
|