এক লপ্তে জমি পেলে তবেই লগ্নি বিদ্যুতে, জানিয়ে দিল এলঅ্যান্ডটি
ক লপ্তে জমি, সঙ্গে পর্যাপ্ত জল ও কয়লার জোগান রাজ্য সরকার সুনিশ্চিত করতে পারলে তবেই পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোবে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো (এল অ্যান্ড টি)। রাজ্যে ১৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়তে ১১ হাজার কোটি টাকার লগ্নি করতে সংস্থা তৈরি। কিন্তু সরকারকে তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে, প্রয়োজনীয় এক লপ্তে ১২০০ একর রাজ্যকেই জোগাড় করে দিতে হবে। যার প্রেক্ষিতে রাজ্যের দাবি, প্রকল্পটির জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। জমি ব্যাঙ্ক থেকেই তা দেওয়া যাবে।
বুধবার মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো-র সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট শৈলেন্দ্র রায়। ঘণ্টা দেড়েকের আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন সংস্থার আরও দুই কর্তা সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় ও জিতেন্দ্র পাটি এবং রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত। বৈঠক শেষে শৈলেন্দ্রবাবু বলেন, “জমি, জল ও কয়লার ব্যবস্থা রাজ্য করে দিলে কাজ শুরু করতে আমাদের দু’সপ্তাহের বেশি লাগবে না। সুপারক্রিটিক্যাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে অন্তত ১২০০ একর জমি দরকার। পর্যাপ্ত জল ও কয়লার জোগানও চাই।” রাজ্য সরকার ইতিবাচক সাড়া দিলে পনেরো দিনের মধ্যে ফের আলোচনায় বসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শৈলেন্দ্রবাবুরা। এ নিয়ে দু’পক্ষে তিনটি বৈঠক হল।
১১০০ কোটি ডলারের এল অ্যান্ড টি গোষ্ঠী রাজ্যে কী ধরনের প্রকল্প গড়তে আগ্রহী? সংস্থার বক্তব্য: রাজ্যে ৮০০ মেগাওয়াটের দু’টো ইউনিট তারা করতে চায়। সেটি হবে সুপারক্রিটিক্যাল বিদ্যুৎকেন্দ্র। যেখানে পরিবেশবান্ধব উপায়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার বিদ্যুৎ তৈরি হবে। শৈলেন্দ্রবাবু জানান, পশ্চিমবঙ্গে একটাও ‘সুপারক্রিটিক্যাল’ বিদ্যুৎকেন্দ্র নেই। সে কথা মাথায় রেখেই এই প্রস্তাব।
এল অ্যান্ড টি-সূত্রের খবর: এমন বিদ্যুৎকেন্দ্র তারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে গড়েছে। শেষ প্রকল্পটির কাজ চলছে পঞ্জাবের রাজপুরায়। সেখানেও জমি-জল-কয়লার সংস্থান রাজ্য সরকারই করেছে বলে সংস্থার দাবি। বস্তুত পঞ্জাবের উদাহরণ টেনেই শৈলেন্দ্রবাবু বলেন, “জমি আমরা অধিগ্রহণ করি না। জমি-সহ প্রকল্পের প্রাথমিক প্রয়োজন মেটানোর দায়িত্ব রাজ্যের।”
অথচ নতুন সরকারের ‘জমি নীতি’ হল, বেসরকারি সংস্থার জন্য কোনও রকম জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। সংস্থাকেই সরাসরি জমি কিনতে হবে মালিকদের কাছ থেকে। সেই নীতির কথা জেনেও সরাসরি জমি কেনার দায়িত্ব নিতে নারাজ শৈলেন্দ্রবাবু। বরং তাঁর আশা, রাজ্য সরকারই জমির বিষয়ে সক্রিয় হবে। কারণ, শিল্পায়নের তাগিদে মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে নজর দিয়েছেন। তিনি জানান, রাজ্য এই প্রকল্পের জন্য উত্তরবঙ্গ-সহ চারটি জায়গার কথা বলেছে। তবে সেগুলো তাঁদের পরিকল্পনার সঙ্গে খাপ খাচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখেই সংস্থা সিদ্ধান্ত নেবে। কেননা প্রকল্প গড়তে এক লপ্তে জমি প্রয়োজন। পাশাপাশি এল অ্যান্ড টি কর্তার দাবি: এ জাতীয় প্রকল্পে চারটি ইউনিট গড়তে পারলে লাভের মুখ দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে কম জমিতে প্রকল্প রূপায়ণ সম্ভব নয়।
১১ হাজার কোটির বিনিয়োগ-প্রস্তাবে জমি নিয়ে একটা প্রশ্ন যে থেকে যাচ্ছে, তার ইঙ্গিত মিলেছে বিদ্যুৎমন্ত্রীর কথাতেও। মণীশবাবু বলেন, “প্রকল্পের জন্য জমি দেখার দায়িত্ব ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরকে দেওয়া হয়েছে। জমি ব্যাঙ্ক থেকেই জমি দেওয়া হবে। জেলাশাসকদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবে দফতর। ওদের জমি দিতে পারলে তবেই কথা এগোবে।” মন্ত্রী অবশ্য এ-ও জানান, প্রকল্পটি নিয়ে সরকার আশাবাদী। এটি রূপায়িত হলে অন্তত ১৪০০ মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে তাঁর দাবি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.