|
|
|
|
একশো দিনের প্রকল্পে এ বার হবে পাকা রাস্তাও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
একশো দিনের প্রকল্প মানেই এত দিন প্রধানত ছিল মাটি কাটার কাজ। সেই মাটি দিয়ে রাস্তা বানানোই হোক বা পুকুর খনন। এ বার সেই ধারণা বদলে যাচ্ছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এ বার থেকে একশো দিনের প্রকল্পে পাকা রাস্তাও তৈরি করা যাবে। তবে এই প্রকল্পে গ্রামের সঙ্গে শহরের বা বড় রাস্তার যোগাযোগ নয়, একেবারেই গ্রামের ভিতরে কাজ করতে হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রকল্পের নোডাল অফিসার প্রিয়াঞ্জন দাস বলেন, “সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার এই নির্দেশিকা জারি করেছে। আমরাও জেলার বিভিন্ন গ্রামে এই ধরনের রাস্তা তৈরিতে উদ্যোগী হব।” বিশেষত, বন্যাপ্রবণ ও কাঁচামাটি এলাকাতেই এই ধরনের রাস্তা তৈরির উপর জোর দেওয়া হবে।
মহাত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ কর্ম-সুনিশ্চিত প্রকল্পে বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম শর্ত হল, এই প্রকল্পে কোনও কাজ করতে হলে মোট খরচের ৬০ শতাংশ অর্থ শ্রম-খাতে খরচ করতে হবে। ৪০ শতাংশ অর্থ খরচ করা যাবে সরঞ্জামের জন্য। পাকা রাস্তা করার ক্ষেত্রে কেন্দ্র অনুমতি দিলেও এই শর্তের কোনও পরিবর্তন হবে না। ফলে পাকা রাস্তা করতে গেলে খরচের এই হার বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে। সমস্যা দূর করতে রাজ্য সরকারও তাই একটি নির্দেশিকা জারি করেছে। সেই নির্দেশিকায় বলা রয়েছে, প্রয়োজনে ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্রান্ট ফান্ডের (বিআরজিএফ) টাকা এই প্রকল্পে খরচ করা যেতে পারে। অর্থাৎ একশো দিনের প্রকল্প মেনে ৬০:৪০ হারে খরচ করতে গিয়ে কোথাও সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রে সমস্যা হলে বিআরজিএফ থেকে টাকা নিতে পারবে জেলা প্রশাসন।
পাকা রাস্তা করার ক্ষেত্রে কী কী বিধি মানতে হবে তা-ও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে কেন্দ্র। বড় রাস্তা বা শহরের সঙ্গে সংযোগকারী রাস্তা নয়, গ্রামের অভ্যন্তরে গ্রামবাসীদের যাতায়াতের জন্য রাস্তাই কেবল এই প্রকল্পে করা যাবে। কারণ, গ্রামের বাইরে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় পাকা রাস্তা রয়েছে। কিন্তু গ্রামের ভিতরে অধিকাংশই ভাঙাচোরা রাস্তা। পাথর বা ইট দিয়ে ওই সব রাস্তা সংস্কার করতে হবে। পর্যাপ্ত ইট বা পাথর না পাওয়া গেলে পুরো রাস্তাটিই সিমেন্ট দিয়ে করা যেতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে জেলাশাসকের একটি শংসাপত্র প্রয়োজন। যাতে বলা থাকবে, ওই এলাকায় পর্যাপ্ত ইট বা পাথর নেই। রাস্তাটি ২.৫ মিটার চওড়া করতে হবে। রাস্তার ধারে নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তফসিলি জাতি ও উপজাতি অধ্যুষিত গ্রামগুলিকে প্রকল্প রূপায়ণে অগ্রাধিকার দিতে হবে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দেশের কোনও কোনও রাজ্য থেকে এই ধরনের প্রস্তাব গিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। তার পরেই কেন্দ্রীয় সরকার এই সিদ্ধান্ত নেয়। বিশেষত, বন্যাপ্রবণ ও কাদা-মাটি এলাকায় এই ধরনের রাস্তা খুবই কার্যকরী হবে বলে প্রশাসনের আশা। কারণ, ওই সব এলাকায় মাটি বা মোরাম রাস্তা করলেও তা প্রতি বছরই নষ্ট হয়। মজবুত রাস্তা তৈরি করা গেলে ৮-১০ বছর নিশ্চিত থাকা যাবে। প্রতি বছর রাস্তা সংস্কারে খরচও তাতে কমবে বলেই মনে করছে প্রশাসন। |
|
|
|
|
|