ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া চেয়ারম্যান একাদশের বিরুদ্ধে প্র্যাক্টিস ম্যাচের শেষের দিকে বোলিং করিয়ে দেখা হল জাহির খান এবং ইশান্ত শর্মাকে। বাঁ-পায়ের গোড়ালিতে চোট লাগার পর এই প্রথম বল হাতে দেখা গেল ইশান্তকে। মাঝে এমনও শোনা গিয়েছিল যে, তাঁকে দেশে ফেরত চলে আসতে পারে। তবে এখন যে টিম ম্যানেজমেন্ট ইশান্তকে বক্সিং ডে টেস্ট ম্যাচে নামানোর চেষ্টা চালাচ্ছে তা নিয়ে আর সন্দেহ থাকছে না।
এ দিন শেষের দিকে পাঁচ ওভার বল করেন ইশান্ত। যদিও পুরো পেসে বল করতে দেখা যায়নি তাঁকে। যা দেখেশুনে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে টেস্ট অভিষেক ঘটাতে যাওয়া এড কাওয়ান বলে দিয়েছেন, “জানি না দু’জন আনফিট পেসার নিয়ে ভারত কী করে খেলবে!” ড্র হয়ে যাওয়া প্র্যাক্টিস ম্যাচে ১০৯ করা ব্যাটসম্যান যোগ করেছেন, “জাহির খান দুর্দান্ত এক জন প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে আমি জানি না ইশান্ত কতটা ফিট। জাহিরের ফিটনেস নিয়েও সংশয় রয়েছে বলে শুনছি। দু’জন আনফিট বোলার নিয়ে নেমে তার পর ওরা যদি বল করতে না পারে সেটা অবশ্যই ওদের পক্ষে চিন্তার কারণ হবে। ভারতীয় দল নিশ্চয়ই সে দিকটাও ভেবে রাখছে।” |
তবে এ দিন স্বয়ং জাহির যে ভাবে বলে দিয়েছেন যে, তিনি এ বারের অস্ট্রেলিয়া সিরিজে তফাত করে দেওয়া বোলার হতে চান তা থেকে পরিষ্কার তিনি ভীষণ ইতিবাচক। “এই অস্ট্রেলিয়া সফর আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি এ বারের সিরিজে তফাত গড়ে দিতে চাই। আমার ওপর অনেক প্রত্যাশাও আছে।” বলে জাহির যোগ করছেন, “সব কিছু একদম ঠিক-ঠাক এগোচ্ছে। আমি চার মাসের বিশ্রাম পেয়েছি এখানে আসার আগে। যার জন্য এই সফরটার জন্য খুব ভাল ভাবে নিজেকে তৈরি করতে পেরেছি।” অতীতে অস্ট্রেলিয়ায় এসে চোট-আঘাতের জন্য ব্যর্থ হয়ে ফিরতে হয়েছে জাহিরকে। সেই প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলছেন, “আগে বছরের শেষে অস্ট্রেলিয়ায় এসে আমার শরীর ভেঙে পড়ত। কিন্তু এ বারে সে রকম হবে না যেহেতু আমি বিশ্রাম নিয়ে এসেছি। আমি খুব আগ্রহ নিয়ে এই সফরটার দিকে তাকিয়ে রয়েছি।”
প্রধান দুই পেসারের ফিটনেস নিয়ে সংশয় থাকায় ভারত চাপে থাকবে বলে মনে করছেন গ্লেন ম্যাকগ্রাও। প্রাক্তন অস্ট্রেলীয় পেসার বলেছেন, জাহির এবং ইশান্ত ফিট না থাকলে সেটা ভারতের জন্য বড় ধাক্কা হতে যাচ্ছে। “ইংল্যান্ডে জাহির না থাকায় খুব ক্ষতি হয়ে গিয়েছিল ওদের। ও-ই ভারতের প্রধান বোলার। আর ইশান্ত শেষ বার এসে অস্ট্রেলিয়ায় খুব ভাল বোলিং করেছিল। ও নিশ্চয়ই আবার এখানে ভাল কিছু করতে চাইবে।” একই সঙ্গে দুর্দান্ত একটা ব্যাটিং লাইন-আপ ভারতের আছে বলে মনে করছেন ম্যাকগ্রা। “ওদের ব্যাটিংটা দুর্ধর্ষ। ওটাই ওদের শক্তি,” বলছেন তিনি।
এ দিকে, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট সিরিজে ভারতীয় বোর্ড ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস)-এর পাশাপাশি হটস্পট নিয়েও ‘না’ বলে দেওয়ায় আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করছে চ্যানেল নাইন। অস্ট্রেলিয়ায় এই সিরিজের সরকারি সম্প্রসারণ করবে চ্যানেল নাইন। যেখানে টিভি রিপ্লে-তে প্রয়োজনে হটস্পট দেখানো হবে। চ্যানেল নাইনের ক্রিকেট কভারেজের প্রধান কর্তা ব্র্যাড ম্যাকনামারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, “ঠিক কোন যুক্তিতে ভারতীয় বোর্ড হটস্পট প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও ‘না’ বলে দিল বুঝলাম না।” অস্ট্রেলীয় চ্যানেলটির আশঙ্কা, চার টেস্টের এই দীর্ঘ সিরিজে যখনই কোনও বিতর্কিত আম্পায়ারিং সিদ্ধান্ত নিয়ে চ্যানেল নাইন হটস্পট দেখাবে, বিতর্ক তৈরি হয়ে যেতে পারে দু’দেশের ক্রিকেটমহলে। বিশেষ করে সেই ক্ষেত্রে যদি ভারতীয় দলের স্বার্থ জড়িত থাকে। অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক-ও ভারতের সিদ্ধান্তে ঘুরিয়ে নিজের বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, ডিআরএসের আরও ধারাবাহিক ভাবে ব্যবহার হওয়া উচিত। মাঝেমধ্যে এক-একটা সিরিজে না করে। রিকি পন্টিংয়ের দল ২০১০ অক্টোবরে ভারত সফর করার পরে অস্ট্রেলিয়া এই প্রথম টেস্ট সিরিজ থেলতে চলেছে ডিআরএস ছাড়া। এমনকী হটস্পটও থাকছে না। |