বাবা-স্ত্রীকে খুন, ধৃত যুবক ও তাঁর বন্ধু
বাবা ও স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে এক যুবক ও তাঁর বন্ধুকে গ্রেফতার করল পুলিশ। গত ১৭ ডিসেম্বর বলাগড়ের জিরাট ২ নম্বর কলোনির বাসিন্দা নরেন ভক্ত ও তাঁর পুত্রবধূ মৌমিতাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল। পাশাপাশি দু’টি ঘরে পড়েছিল তাঁদের দু’জনের দেহ। নরেনবাবুর ছেলে কল্যাণ পুলিশকে জানান, ঘটনার সময়ে কেউ বাড়িতে ছিলেন না। তিনি রাত ৯টা নাগাদ দোকান থেকে ফিরে দেখেন বাড়ির পিছনের দরজা খোলা। ঘরে বাবা ও স্ত্রীর দেহ পড়ে। পুলিশের অবশ্য প্রাথমিক সন্দেহ পড়ে তাঁর উপরেই। পুলিশের দাবি, ওই যুবক পরে জেরায় কবুল করেন, গোকুল বৈদ্য নামে এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে তিনিই খুন করেছেন দু’জনকে। মঙ্গলবার রাতে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের ৮ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
ঘটনার দিন বাড়ির খুব কাছেই জলসা দেখতে গিয়েছিলেন নরেনবাবুর স্ত্রী ও মেয়ে। বাড়িতে ছিলেন নরেনবাবু, পুত্রবধু মৌমিতা ও চার বছরের নাতি। মৌমিতার স্বামী কল্যাণ ভক্তের একটি মোবাইল সারাইয়ের দোকান আছে।
ছবি: তাপস ঘোষ।
পুলিশকে কল্যাণ জানিয়েছিলেন, রাত ৯টা নাগাদ দোকান থেকে বাড়িতে ফিরে অনেক ডাকাডাকি করেও কেউ দরজা খোলেনি। পিছনের দরজা খোলা ছিল। কল্যাণ ঘরে ঢুকে দেখেন, পাশাপাশি দু’টি ঘরে তাঁর বাবা ও স্ত্রীর নিথর দেহ পড়ে আছে। ঘরের আলমারি খোলা এবং জিনিসপত্র লন্ডভন্ড। চিৎকার করে তিনি প্রতিবেশীদের ডাকেন।
তদন্তে আসেন হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশেষ বিশ্বাস এবং সার্কেল ইন্সপেক্টর নন্দন পাণিগ্রাহী। মৃত্যুর কারণ নিয়ে তদন্তকারী অফিসারেরা ধন্ধে পড়েন। তদন্তের স্বার্থে কল্যাণ ভক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে তাঁর বক্তব্যে অসঙ্গতি ধরা পড়ে। পুলিশের দাবি, টানা জেরায় ওই যুবক কবুল করেন, খুনের ঘটনার তিনি নিজেই জড়িত। সঙ্গে এক বন্ধুও আছে। এরপর মঙ্গলবার রাত্রেই দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। হুগলির পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “পুলিশি জেরায় জানতে পারা যায়, কল্যাণের সঙ্গে গোকুল যোগসাজস করেই বাবা ও স্ত্রীকে খুন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, গোকুলের কাছ থেকে কল্যাণ কিছু টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। গোকুল বেশ কিছু দিন ধরে তাঁকে টাকা ফেরতের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। বাবার কাছে সেই টাকা চেয়েও পাননি কল্যাণ। দুই বন্ধু মিলে পরিকল্পনা করেন, মৌমিতাকে খুন করে তার গয়না এবং নগদ টাকা নিয়ে নেবেন। ওই টাকায় ঋণ শোধ করবেন কল্যাণ। এই পরিকল্পনামাফিক দুই বন্ধু মিলে কেব্লের তার দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করার সময় কল্যাণের বাবা নরেনবাবু দেখে ফেলেন। প্রমাণ লোপাটের জন্য বাবাকেও খুন করেন। এরপরে বাড়িতে ডাকাত-পড়ার ‘গল্প’ ফাঁদেন। পুলিশ জানায়, সম্প্রতি কল্যাণের সঙ্গে স্থানীয় এক মহিলার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। স্ত্রীকে খুন করার পিছনে এটিও বড় কারণ হতে পারে বলে তদন্তকারী অফিসারদের অনুমান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.