নাবালিকাকে ধর্ষণের দায়ে দশ বছরের
সশ্রম কারাদণ্ড প্রতিবেশী যুবকের
নাবালিকাকে ধর্ষণের দায়ে এক ব্যক্তির দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন বিচারক। একই সঙ্গে ওই ব্যক্তির ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। জরিমানার টাকা ওই নাবালিকার পুনর্বাসনের জন্য ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। বুধবার উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালতের দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক প্রশান্তকুমার শীল এই রায় দেন। সাজাপ্রাপ্তের নাম শেখ নাসির আলম। বাড়ি উলুবেড়িয়ার জয়নগর গ্রামে।
মামলার সরকারি আইনজীবী অসিত হাইত জানান, ওই নাবালিকার বাড়িও একই গ্রামে। স্থানীয় একটি হাইস্কুলে সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। ২০০৫ সালের ৪ এপ্রিল স্কুলে তার মৌখিক পরীক্ষা ছিল। সে পরীক্ষা দিতে স্কুলে গিয়েছিল। পরীক্ষার ফাঁকে গ্রামের তিন জন যুবক তাকে ডেকে নিয়ে যায়। তারা বলে ‘তোকে নাসির ডাকছে।’ নিছক কৌতুহলে ওই নাবালিকা তিন জনের সঙ্গে নাসিরের কাছে যায়। নাসির তাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে একটি ট্রেকারে তোলে। দু’জনে আসে কুলগাছিয়া রেল স্টেশনে। সেখান থেকে তারা দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ট্রেনে চেপে যায় খড়্গপুর। তার পরে নাসির তাকে নিয়ে চলে যায় বেঙ্গালুরুতে।
পুলিশ জানায়, ৩৬ বছর বয়স্ক বিবাহিত যুবক নাসির পেশায় ছিল জরির কারিগর। বেঙ্গালুরুতে সে জরির কাজ করত। একটি ঘরে সে ওই নাবালিকাকে আটকে রাখে। সে সময়ে একাধিকবার ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করে নাসির। মেয়েটি সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়ে। তার একটি সন্তানও হয়। কিন্তু নাবালিকা এবং তার শিশুপুত্রকে নাসির ঘরের বাইরে যেতে দিত না।
সরকারি আইনজীবী জানান, ২০০৬ সালের ৮ অগস্ট ওই নাবালিকা এবং তার শিশুপুত্রকে উলুবেড়িয়ার আলিপুকুরে নিয়ে আসে নাসির। সেখানে তার জামাইবাবুর বাড়িতে সে দু’জনকে রেখে যায়। এখানেও নাবালিকা এবং তার শিশুপুত্রকে ঘরের মধ্যে কার্যত বন্দি করে রাখা হত। রাস্তা দিয়ে তার নিজের গ্রামের এক পরিচিত যুবককে যেতে দেখে তাঁকে জানালা দিয়ে ইসারা করে ডাকে ওই নাবালিকা। তাকে সব ঘটনার কথা সে খুলে বলে।
ওই যুবক গ্রামে এসে সব কথা খুলে বলেন নাবালিকার বাবাকে। তিনি গ্রামের লোকজনকে সঙ্গে এনে ১৫ অগস্ট দু’জনকে উদ্ধার করেন। ২০০৫ সালের ৪ এপ্রিল মেয়ে বাড়ি ফিরে না-আসায় তিনি উলুবেড়িয়া থানায় একটি ডায়েরি করেছিলেন।
আলিপুকুর থেকে মেয়েকে উদ্ধার করে তিনি নাসিরের বিরুদ্ধে অপহরণ এবং ধর্ষণের অভিযোগ করতে থানায় যান। কিন্তু পুলিশ তাকে ‘পরামর্শ’ দেয় মেয়েকে যখন খুঁজে পাওয়া গিয়েছে তখন এ সব ঝামেলা করে লাভ কী? থানা অভিযোগ নিতে না-চাওয়ায় ওই নাবালিকার বাবা উলুবেড়িয়া এসিজেএম আদালতের শরণাপন্ন হন। ১ সেপ্টেম্বর আদালত অভিযোগটিকে গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দেয় পুলিশকে।
পুলিশ তদন্ত করে নাসিরের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। একই সঙ্গে আদালত অপহরণের জন্য নাসিরকে ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। ওই নাবালিকা এবং তার শিশুপুত্রের পুনর্বাসনের জন্য যে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে সেটি এবং আরও ১ হাজার টাকা এক সঙ্গে আদালতে জমা না দিলে নাসিরকে সাত বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলে বিচারক তাঁর রায়ে জানিয়েছেন।
মেয়েটি সন্তান নিয়ে বাপের বাড়িতেই থাকে। রায়ের খবর শুনে সে বলে, “মাসের পর মাস আমায় আটকে রাখা হয়েছিল। বার বার ধর্ষণ করা হয়েছিল। ওই ব্যক্তিকে আমি প্রচণ্ড ঘৃণা করি। সে শাস্তি পাওয়ায় আমি খুব খুশি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.