বিষমদ-কাণ্ডের জেরে সংগ্রামপুরে এক সপ্তাহ ধরে এলাকার সব ভাটি বন্ধ। এ বার প্রশাসনের কাছে ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ চাইছেন চোলাই কারবারিরা।
কাজ পেলেই চোলাই মদের ব্যবসা ছাড়তে চান তারকেশ্বরের অষ্ট মালিক, ভোলানাথ বাগ, অষ্টমী রুইদাসরা। এলাকায় ১০০ দিনের প্রকল্পে গতি এনে চোলাই কারবারিদের মূল স্রোতে ফেরানোর প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু করার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসনও।
তারকেশ্বরের ‘চোলাই গ্রাম’ হিসাবে পরিচিত সন্তোষপুর পঞ্চায়েতের গুড়েভাটা, গয়েশপুর, গুড়িয়া এবং গৌরীবাড়ি। গুড়েভাটা গ্রামের অষ্ট মালিক দীর্ঘ দিন চোলাই-কারবারে যুক্ত। তাঁর বক্তব্য, “প্রশাসন বিকল্প পেশার সংস্থান করলে সরে আসব। অন্তত ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে আমাদের নেওয়া হলেও সংসারটা বাঁচে।”
|
ওই গ্রামেরই এক ভাটি-মালিক বলেন, “এ বছর ১০০ দিনের প্রকল্পে মাত্র তিন দিন কাজ পেয়েছি। কিন্তু সেই টাকা এখনও পাইনি। অন্য কাজ পেলে কে আর এই ব্যবসা করবে?” বছর দশেক আগে স্বামী বাবলু রুইদাসের মৃত্যুর পরে চোলাই তৈরির কারবার শুরু করেন অষ্টমী রুইদাস। বললেন, “এখন বন থেকে শাক-পাতা তুলে বাজারে বিক্রি করছি। আর লোকের বাড়িতে কাজ খুঁজছি। সরকার কিছু না ব্যবস্থা করলে কী হবে?” গুড়িয়া গ্রামের ভোলানাথ বাগ বলেন, “বাম-সরকার ভাটি তুলে দিলে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছিল। সেটা পাইনি। তাই বর্তমান সরকার আমাদের মতো মানুষের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেও ভরসা পাচ্ছি না।”
১০০ দিনের প্রকল্পে এ বছর সন্তোষপুর পঞ্চায়েতে যে সে ভাবে কাজে গতি আসেনি, তা মানছেন তারকেশ্বরের বিডিও সুমন মজুমদার এবং পঞ্চায়েত প্রধান সিপিএমের পদ্মা দলুই। বিডিও বলেন, “নির্বাচন এবং পরবর্তী পরিস্থিতির কারণে ১০০ দিনের কাজ এখানে কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। কিন্তু আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি ওই প্রকল্পে। আশা করছি, এ মাসের মধ্যে কাজ শুরু করা যাবে।” বিডিও-র বক্তব্য, “চোলাই কারবারিদের ব্যাপারে আবগারি দফতরকে নিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছি। যাঁরা কাজ চান, তাঁদের তালিকা তৈরি হবে। মাইক-প্রচার চালিয়ে তাঁদের মূল স্রোতে ফেরানোর চেষ্টা করা হবে। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পেও তাঁদের নেওয়া যাবে। তাঁরা যাতে নিখরচায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন তারও ব্যবস্থা করা হবে।” |