ঘিঞ্জি বাজারের রাস্তায় আটকায় দমকলের গাড়ি, মেলে না জলও
কোথাও মাকড়সার জালের মতো বিদ্যুতের তার। কোনও জায়গায় ডিজেল জেনারেটরের সাইলেন্সর পাইপের পাশেই কাপড়ের দোকান। কোথাও বা আবার কাঠের পাটার উপরে বসানো রয়েছে ট্রান্সফর্মার।
আমরি-কাণ্ডের পরে রাজ্যের অন্য সব জায়গার মতো দুর্গাপুরেও বিভিন্ন নার্সিংহোম ও বহুতলের অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে অভিযান শুরু হয়েছে। শহরের ঘিঞ্জি বাজারগুলির দশা আরও বেশি বিপজ্জনক। এক বার আগুন লাগলে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার জন্য দাহ্য পদার্থের অভাব নেই। দমকলের দুর্গাপুর বিভাগের ওসি নিতাই চট্টোপাধ্যায়ও স্বীকার করেন, বাজার এলাকাগুলিতে জল পাওয়া মুশকিল। তাই এক বার আগুন লাগলে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে দমকলকে।
বেনাচিতি বাজার শহরের গুরুত্বপূর্ণ বাজার। প্রধান রাস্তার দু’দিকে কয়েক হাজার দোকান। সে সবের সামনে আবার পসরা সাজিয়ে বসেন হকারেরা। অনেকেরই উপরে পলিথিনের ছাউনি। প্রায় প্রত্যেক দোকানের সামনেই থাকে নিজস্ব জেনারেটর। জেনারেটর চলতে শুরু করলেই সাইলেন্সর পাইপ থেকে আগুনের ফুলকি বেরোতে থাকে।
জট পাকিয়ে বিদ্যুতের তার। বেনাচিতি বাজারে তোলা নিজস্ব চিত্র।
আশপাশে ঝুলিয়ে রাখা জামাকাপড়ে আগুন লাগার যথেষ্ট সম্ভাবনা থেকেই যায়। রাস্তার পাশে জামা-কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসা শ্রীবেশ হালদার বলেন, “কী আর করব! এ ভাবেই চালিয়ে যাচ্ছি। আগুন লাগলে ভগবানই ভরসা।” এই বাজারের বহু ব্যবসায়ীরই দিন কাটে এই ভরসায়।
নাচন রোডের পাশে রয়েছে একটি ট্রান্সফর্মার। ট্রান্সফর্মার থেকে বেরোনো তার এসে ফিউজে যুক্ত হওয়ার কথা। তিনটি ‘ফেজ’ তারের জন্য পৃথক ফিউজ থাকার কথা। অথচ দেখা গেল, একটি ফিউজও কাজ করে না। অর্থাৎ, বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে সরাসরি। যা ভীষণ বিপজ্জনক। তারগুলি এমন ভাবে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত যে, মাঝে-মধ্যেই তারগুলি তেতে লাল হয়ে যায়। কোনও ভাবে পলিথিন বা কাগজ উড়ে গিয়ে সেখানে পড়লে আগুন লাগার প্রবল সম্ভাবনা, জানিয়েছেন বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিক। তিনি জানান, বারবার ফিউজ পুড়ে যাওয়ার হাত থেকে রেহাই পেতে এলাকার বাসিন্দারা সরাসরি বিদ্যুৎ সংযোগ চালুর ব্যবস্থা করেছেন। তিনি বলেন, “খুব শীঘ্র ওই ট্রান্সফর্মারের তারের লাইন ও ফিউজ ঠিক করে দেওয়া হবে।”
দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, বাজারগুলি নিয়ে তাঁদের মূলত দু’রকম মাথাব্যথা। প্রথমত, ঘিঞ্জি এলাকায় কী ভাবে দমকলের গাড়ি ঢুকবে। দ্বিতীয়ত, এলাকায় জলের উৎস না থাকা। দমকলের ওসি নিতাইবাবু জানান, বেনাচিতি বাজারের রাস্তাঘাট আগের থেকে চওড়া হয়েছে। প্রধান রাস্তায় গাড়ি রেখে ভিতরে পাইপের মাধ্যমে জল নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। কিন্তু ভিতরে দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারবে না। মামরা বাজার বা ঘিঞ্জি স্টেশন বাজারের মধ্যেও গাড়ি ঢোকার সুযোগ নেই। দোকানগুলিও পাশাপাশি যে ভাবে আছে, আগুন লাগলে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। নিতাইবাবু বলেন, “বাজারে গাড়ি ঢোকার ব্যবস্থা না করা গেলে আগুন লাগলে যথেষ্ট দুশ্চিন্তার কারণ রয়েছে।” অবিলম্বে এ সব নিয়ে ভাবনাচিন্তা জরুরি বলে মত নিতাইবাবুর। সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন পুরসভার ডেপুটি মেয়র শেখ সুলতান। তিনি জানান, ব্যবসায়ীদের এবং দমকলের মতামত নিয়ে এ ব্যাপারে কী করণীয় রয়েছে, তা ঠিক করা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.