রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে বহু কলেজে প্রার্থীই দিতে পারেনি এসএফআই। সেখানে রানিগঞ্জ গার্লস কলেজে নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখল এসএফআই।
বুধবার আসানসোল মহকুমার আটটি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দিন ছিল। এর মধ্যে চিত্তরঞ্জনের দেশবন্ধু কলেজ ছাড়া সব ক’টিই আগে এসএফআইয়ের দখলে ছিল। এ বার অবশ্য রানিগঞ্জ গার্লস কলেজ ও আসানসোল গার্লস কলেজ ছাড়া অন্যগুলিতে প্রার্থীই দেয়নি তারা। সংগঠনের জেলা কমিটির সভাপতি সিদ্ধার্থ বসু আগে জানিয়েছিলেন, শিল্পাঞ্চলের কোনও কলেজে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না তাঁরা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ওই দুই কলেজে প্রার্থী দেয় এসএফআই। রানিগঞ্জ গার্লস কলেজে ২৫টি আসনের মধ্যে ১৬টিতে জয়ী হয়েছে এসএফআই। বাকি ৯টিতে জয় পেয়েছে টিএমসিপি। আসানসোল গার্লস কলেজে অবশ্য বেসি আসন পেয়েছে টিএমসিপি। মোট ৩৮টি আসনের মধ্যে ১৭টি পেয়েছে টিএমসিপি। ১০টি করে আসন পেয়েছে এসএফআই এবং ডিএসও। একটি আসনে ‘টাই’ হয়েছে। তবে বেশি আসন পেলেও এই কলেজের ছাত্র সংসদের দখল নিতে পারেনি টিএমসিপি।
|
আসানসোলের বিবি কলেজ এবং বিসি কলেজ, কুলটি কলেজ, রানিগঞ্জের টিডিবি কলেজ, চিত্তরঞ্জনের দেশবন্ধু মহাবিদ্যালয় ও চুরুলিয়ার নজরুল কলেজে অবশ্য জয়ী হয়েছে টিএমসিপি। এই কলেজগুলিতে কোনও প্রার্থী দেয়নি এসএফআই। এর মধ্যে চিত্তরঞ্জন দেশবন্ধু মহাবিদ্যালয় ছাড়া অন্যগুলিতে বিনা বাধায় জয়ী হয়েছে তারা। চিত্তরঞ্জনের কলেজে ২৪টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল ছাত্র পরিষদ। সেখানে মোট ৩৯টি আসনের মধ্যে টিএমসিপি ৩৪টি এবং ছাত্র পরিষদ ৫টিতে জয়ী হয়েছে। সংগঠনের সদস্য-সমর্থকদের উপরে টিএমসিপির আক্রমণের প্রতিবাদ জানিয়ে অন্য কলেজগুলিতে এ বার নির্বাচন বয়কট করেছিল ছাত্র পরিষদ।
অন্য সব কলেজে টিএমসিপি-র সাফল্যের মাঝেও রানিগঞ্জ গার্লস কলেজে ক্ষমতা ধরে রাখা প্রসঙ্গে এসএফআইয়ের এক জেলা নেতার দাবি, “অন্য জায়গায় টিএমসিপি যে ভাবে সন্ত্রাস করেছে, তা এখানে করতে পারেনি। ছাত্রছাত্রীরা নির্ভয়ে কলেজে আসতে পারলে এসএফআইকেই ভোট দেয়। এখানে তা-ই হয়েছে।” সংগঠনের রানিগঞ্জ লোকাল কমিটির এক সদস্যের আবার দাবি, সারা বছর ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে কাজ করার সুফল তাঁরা পেয়েছেন। সংগঠনের বর্ধমান জেলা সভাপতি সিদ্ধার্থ বসু আগেই দাবি করেছেন, কলেজগুলিতে নৈরাজ্যের পরিবেশ তৈরি করেছে সিপি ও টিএমসিপি। এই অবস্থায় ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এবার তাঁরা নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছেন।
অন্য দিকে, মহকুমার সব ক’টি কলেজে ভাল ফল করলেও রানিগঞ্জ গার্লস কলেজের ছাত্র সংসদ হাতছাড়া হওয়ার পিছনে সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই দায়ী করেছেন টিএমসিপি-র জেলা কমিটির সভাপতি অশোক রুদ্র। তিনি জানান, মাত্র মাসখানেক আগে তাঁরা আসানসোল ও রানিগঞ্জ গার্লস কলেজে শাখা কমিটি তৈরি করে কাজ শুরু করেছেন। প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ করে আসানসোল জিতেছেন। লাল দুর্গ হিসেবে পরিচিত রানিগঞ্জে এসএফআইয়ের থেকে ৯টি আসন ছিনিয়ে নেওয়া সংগঠনের পক্ষে ভাল ইঙ্গিত বলেই তাঁর দাবি। |