অনিয়মের অভিযোগ
ক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের কালদিঘি লিজ দেওয়ায় অনিয়মের অভিযোগের তদন্তে নামল জেলা প্রশাসন। ৯৪ একর আয়তন বিশিষ্ট ওই জলাভূমির লিজ মূল্য সরকারি হিসাবে কী হওয়া উচিত তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী। ওই জলাভূমির মালিকানা কেমন করে জেলা পরিষদের হাতে গেল তাও খতিয়ে দেখছে প্রশাসন। জেলাশাসক বলেন, “কালদিঘি লিজ প্রক্রিয়া নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। লিজ প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা মৎস্য দফতরকে সমীক্ষা করে দেখতে বলা হয়েছে।” জেলাশাসকের নির্দেশে বিপাকে সিপিএম পরিচালিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ। সম্প্রতি বালুরঘাটে জেলা পরিষদের অর্থ স্থায়ী সমিতির সভায় উপস্থিত জেলাশাসক কালদিঘির লিজ প্রসঙ্গ তুলে বিষয়টি জানতে চান। জেলাপরিষদের বিরোধী কংগ্রেস নেত্রী নার্গিস বানু চৌধুরী এবং তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য অখিল বর্মন অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। ২০০৭ সালে দিক্ষিণ দিনাজপুর জেলাপরিষদ গঙ্গারামপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে বছরে মাত্র ২৫ হাজার টাকায় ৩৩ বছরের মেয়াদে কালদিঘি লিজ দেয়। ওই সময় সভাধিপতি ছিলেন নারায়ণ বিশ্বাস ঘনিষ্ঠ সিপিএম নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ। জেলা পরিষদে সিপিএমের একচেটিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে নামমাত্র মূল্যে কালদিঘি লিজ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএমের একচেটিয়া আধিপত্য খর্ব হয়। গুরুত্ব বাড়ে আরএসপি-র। বিরোধী তৃণমূলেরও প্রবেশ ঘটে। জেলাপরিষদে ও মৎস্য প্রাণীসম্পদ দফতরটি চলে যায় আরএসপির হাতে। সমিতির বৈঠকে সামান্য মূল্যে কালদিঘি লিজ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। পরে মুখর হয় তৃণমূল এবং কংগ্রেসের সদস্যরা। প্রায় সবকটি স্থায়ী সমিতির বৈঠকে কালদিঘি লিজ প্রক্রিয়া নিয়ে অভিযোগ উঠতে থাকে। জেলা পরিষদের স্থায়ী সম্পত্তি থেকে আয় বাড়ানোর প্রশ্নে এবং বিরোধীদের চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত কালদিঘির বাৎসরিক লিজ মূল্য ২৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৬০ হাজার টাকা করা হলেও বিতর্ক চলতে থাকে। পূর্বতন জেলাশাসক অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সময় ওই বিষয়ে বিরোধীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা মৎস্য দফতর সমীক্ষা করে জানায়, ৯৪ একর বিশাল জলাশয়ের লিজ মূল্য কমপক্ষে বছরে ৩ লক্ষ টাকা হওয়া উচিত। তৎকালীন জেলাশাসক খুব বেশি এগোতে পারেননি। শরিক আরএসপি প্রথমে সরব হলেও বিধানসভা ভোটে বিপর্যস্ত হয়ে সিপিএমের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে চলার পথ শ্রেয় মনে করে বলে অভিযোগ। তাই নতুন জেলাশাসক বিষয়টি নিয়ে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিলে বিপাকে পড়েন জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ। সভাধিপতি মাগদালিনা মুর্মু বলেন, “জেলাশাসক নিজে কালদিঘি লিজ প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করেছেন। সভায় আয় বাড়ানো নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে এটা উঠে আসে। তা ছাড়া ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা একটি অনাথ আশ্রম চালায় বলে লিজ মানির ক্ষেত্রে তাদের ছাড় দেওয়া হয়েছে।” জেলা পরিষদের বিরোধী তৃণমূল সদস্য অখিল বর্মন বলেন,“অনাথ আশ্রম চালানোর জন্য ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে জেলাপরিষদ অর্থ সাহায্য করুক আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু জেলাপরিষদের সম্পত্তি অবৈধভাবে বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়ার কোনও এক্তিয়ার নেই। ওই জলাশয়ে মাছ চাষের জন্য মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে লিজ দেওয়ার নিয়মও মানেনি জেলা পরিষদ।” জেলা মৎস্য দফতর সূত্রের জানা গিয়েছে, সরকারি জলাশয় ৩ বছরের বেশি কোনও সংস্থাকে লিজ দেওয়া যায় না। ৩০ টাকা শতক হিসাবে ওই ৯৪ একর জলাশয়ের লিজ মূল্য বছরে কমপক্ষে ২ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা হওয়া উচিত।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.