খুন ও দেশদ্রোহিতার মামলায় ৬ বছর জেলে থাকার পরে জামিনে মুক্তি পেলেন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক বংশীবদন বর্মন। শুক্রবার দুপুর সওয়া একটা নাগাদ কোচবিহার জেল থেকে বেরিয়ে যান তিনি। বংশীবদনবাবুর আইনজীবী শিবেন রায় জানান, এ বার বাকি বন্দিদের জামিনের আবেদন জানানোর ব্যবস্থা হবে।
|
জামিনে মুক্তির পরে
বংশীবদন বর্মন।
ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব |
২০০৫-এর ২০ সেপ্টেম্বর পৃথক রাজ্যের দাবিতে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের আন্দোলনে কোচবিহারে ১ আইপিএস-সহ ৩ পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়। নিহত হন ২ আন্দোলনকারীও। পুলিশ কর্মী খুনের অভিযোগে বংশীবদনবাবু-সহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ধরা পড়েন ৪৩ জন। ২০০৬-এর ২৫ মে আত্মসমর্পণের পর থেকে কোচবিহার জেলেই ছিলেন তিনি। পরে গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনে ভাঙন ধরে। তৈরি হয় গ্রেটার কোচবিহার ডেমোক্রেটিক পার্টি। গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের নয়া সম্পাদক হন নমিতা বর্মন। এ দিন জেল চত্বরে অভিনন্দন জানানোর পর নেতাকে নিয়ে শহরে শোভাযাত্রা করে জেলাশাসকের দফতরে যান সমর্থকেরা। জেলাশাসকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বংশীবদনবাবু। সঙ্গে ছিলেন বন্দি মুক্তি কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন, ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সহকারী সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত ও গ্রেটার ডেমোক্রেটিক পার্টির কয়েকজন নেতা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে বংশীবদনবাবু বলেন, “রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।” ডেমোক্রেটিক পার্টির সভাপতি আশুতোষ বর্মা বলেন, “নতুন সরকার না চাইলে এটা হত না।” সমন্বয় কমিটির নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “বংশীবাবুর মুক্তিতে ভাল লাগছে। তাই আমরাও গিয়েছিলাম।’’
সাগরদিঘির পাড়ে শিব ও মদনমোহন মন্দিরে প্রণাম সেরে সমর্থকদের সঙ্গে দিনহাটার জরাবাড়িতে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন তিনি। দিনহাটা প্রান্তিক বাজারে তাঁকে সংবর্ধনা দেয় দল। বৃদ্ধা মা জয়মতি দেবী ছেলেকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরেন। দৃশ্যতই আপ্লুত হয়ে পড়েন বংশীবদনবাবুও। বলেন, “বাকিদের মুক্তির আগে আগামী আন্দোলন নিয়ে কিছু বলতে চাইছি না। ওঁদের মুক্তির পরে যা বলার বলব।’’ |