নিজস্ব সংবাদদাতা • শামুকতলা |
সকাল থেকে ৩১ সি জাতীয় সড়কের ধারে সাইকেলের সারি। হ্যাণ্ডেলের দু’পাশে ব্যাগে দুটি ২০ লিটারের জ্যারিকেন ঝুলছে। ক্যারিয়ারে বাঁধা ৫০ লিটারের বড় এক জ্যারিকেন। এ ভাবে প্রতিদিন ডুয়ার্সের শামুকতলা ও কুমারগ্রাম থানা এলাকা থেকে পাচার হচ্ছে কয়েক হাজার লিটার চোলাই মদ। যদিও শামুকতলা থানার আইসি প্রবীণ প্রধান বলেন, “চোলাই মদের কারবার বন্ধের জন্য ধারাবাহিক অভিযান চলবে। ইতিমধ্যে কয়েকশো লিটার চোলাই আটক করা হয়েছে।” কিন্তু পুলিশ কর্তার ওই বক্তব্য বাসিন্দারা আশ্বস্ত হতে পারছেন কোথায়! কারণ, বিভিন্ন চা বাগান ও বনবস্তি এলাকায় মদ তৈরির কারখানাগুলি যে রমরমিয়ে চলছে। ওই পরিস্থিতি দেখে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে, রাস্তা থেকে কিছু মদ আটক করে কী হবে! বছরের পর বছর কারখানাগুলি চললেও পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। চোলাই কারবারের বাড়ন্ত দেখে অনেকের আশঙ্কা যে কোনও দিন ডুয়ার্সে ঘটতে পারে সংগ্রামপুরের মতো বিষ মদ কাণ্ড। বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কারবারকে ঘিরে কুমারগ্রাম ও আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকে পাঁচশোর বেশি ঠেক গজিয়েছে। ওই ঠেকগুলিতে ভিড় করে প্রতিদিন কয়েক হাজার যুবক ও চা শ্রমিক বিপজ্জনক নেশায় বুঁদ হচ্ছে। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনুপ জয়সোয়াল বলেন, “চোলাইয়ের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অভিযান চালাতে প্রতিটি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” বাসিন্দাদের একাংশ জানান, কুমারগ্রাম ব্লকের নারারথলি, শিল্টং এবং আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের ধওলাবস্তি এলাকায় প্রচুর চোলাই কারখানা গড়ে উঠেছে। লুকোচুরি নেই। সবই চলছে প্রকাশ্যে। কারখানায় তৈরি চোলাই সাইকেলে চেপে ছড়িয়ে পড়ছে গ্রাম ও বস্তিতে। ডুয়ার্সের রায়ডাক, রহিমাবাদ, কার্তিক, হাতিপোতা, তুরতুরি, ময়নাবাড়ি এলাকা জুড়ে যথেচ্ছভাবে চোলাই মদের নেশা চলছে। সংগ্রাম গ্রামে বিষ মদ কাণ্ডের পরে স্থানীয় বাসিন্দারা চোলাই তৈরির কারখানা বন্ধ করার দাবি তুলেছেন। আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক অমলকান্তি রায় বলেন, “চোলাইয়ের রমরমা কারবার খুবই চিন্তার বিষয়। পুলিশ ও আবগারি দফতরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” কুমারগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য সুকুমাররঞ্জন সরকার অবশ্য বলেন, “আবগারি দফতরের মদতে চোলাই কারবার এতটা বেড়েছে। ওই চক্র আগে ভাঙা দরকার।” |