নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শিলিগুড়ি শহরের সার্কিট হাউস লাগোয়া এলাকায় এক আদিবাসী কিশোরীকে রাস্তা থেকে গাড়িতে তুলে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করল তিন দুষ্কৃতী। বুধবার রাত ৮টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানার চম্পাসারি মেন রোডে। শুক্রবার কিশোরীটিকে শিলিগুড়ি আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাকে পরিবারের লোকজনদের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন। পুলিশের দাবি, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কিশোরীর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হলেও ধর্ষণের কোনও চিহ্ন মেলেনি। পুলিশ তিন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের চেষ্টার মামলা রুজু করেছে। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। আদালতের নির্দেশে কিশোরীটিকে অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বাড়িতে গিয়ে ফের ওকে জেরা করা হবে।”
পুলিশ জানায়, ওই কিশোরীর বাবার নাম নেহরু নাগাশিয়া। তিনি নকশালবাড়ির জাবরাবস্তির বাসিন্দা। পেশায় দিনমজুর নেহরুবাবু দারিদ্রের কারণে ১৪ বছরের মেয়েকে গ্যাংটকে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতে পাঠান। বুধবার ওই ব্যবসায়ী একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চম্পাসারির ভুট্টাবাড়ি যান। সঙ্গে কিশোরীটিও ছিল। বিয়েবাড়ি থেকে কিশোরীটি ঠান্ডা পানীয়ের প্যাকেট কিনতে বার হয়। চম্পাসারি মেন রোডের একটি অপেক্ষাকৃত অন্ধকার জায়গায় আচমকা একটি ছোট গাড়ি থেকে তিন যুবক নেমে কিশোরীর মুখ চেপে অপহরণ করে। রাতে একটি অন্ধকার মাঠে কিশোরীটিকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, ওই সময়ে কয়েকজন বাসিন্দা কৌতূহলী হয়ে দল বেঁধে সেখানে গেলে দুষ্কৃতীরা গাড়ি নিয়ে পালায়। এক সহৃদয় দম্পতি পুলিশকে জানিয়ে মেয়েটিকে রাতের জন্য আশ্রয় দেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ফাঁসিদেওয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে নকশালবাড়ি থানায় খবর পাঠিয়ে কিশোরীর বাবাকে আনা হয়। দুপুরে মেডিক্যাল পরীক্ষা করানোর পরে রাতে প্রধাননগর থানায় রেখে এ দিন আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ দিন মেয়েকে নিয়ে ফেরার মুখে আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে কিশোরীর বাবা নাগাশিয়া বলেন, “ভরসন্ধ্যায় শিলিগুড়ি শহরের রাস্তা থেকে মেয়েটাকে তুলে নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। এটা ভাবতেই পারছি না। কয়েকজন বাসিন্দার জন্য ও রেহাই পেয়েছে। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করে কঠোর সাজা দিতে হবে।” কিশোরীটি এতটাই ভেঙে পড়েছে যে, ভাল করে কথাই বলতে পারেনি। প্রশ্ন করা হলে বাবার হাত ধরে সে কোনওমতে বলেছে, “মুখে কাপড় চেপে গাড়িতে তুলে নিল তিনটে ছেলে। অন্ধকার মাঠে নিয়ে খারাপ কাজের চেষ্টা করছিল।’’ এ টুকু বলেই সে ফুঁপিয়ে দু’হাতে মুখ ঢেকে ফেলে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অবশ্য জানান, ওই কিশোরী যে পরিবারে পরিচারিকার কাজ করত, তাঁদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে। জেরা করা হবে তাঁদেরও। |