|
|
|
|
আচার্যকে চিঠি শঙ্করদের |
উপাচার্যের কথা না-শুনে শাস্তির সুপারিশে ক্ষোভ |
সাবেরী প্রামাণিক • কলকাতা |
প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে কথা না-বলেই রাজ্য সরকার ‘ভিত্তিহীন’ অভিযোগ এনে ওই পদের মর্যাদাহানি করেছে বলে মনে করেন প্রাক্তন উপাচার্য শঙ্কর সেন এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক জন প্রবীণ অধ্যাপক। রাজ্যপাল তথা আচার্যের কাছে চিঠি লিখে সে-কথা জানিয়েও দিয়েছেন তাঁরা। তাতে লিখেছেন, এ ধরনের কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক কাঠামো তো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেই। সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
|
শঙ্কর সেন |
যাদবপুরের প্রাক্তন উপাচার্য শঙ্কর সেন, আইআইটি খড়্গপুর এবং বেসু-র কয়েক জন প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান-সহ সাত জন স্বাক্ষর করে রাজ্যপালের কাছে সম্প্রতি চিঠি পাঠিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, উপাচার্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী কাউকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার সুপারিশ করছে রাজ্য সরকার। অথচ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়নি। তাঁর বক্তব্যও শুনতে চাননি কেউ। শঙ্করবাবু শুক্রবার বলেন, “উনি (প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী সেনগুপ্ত) দোষী কি না, সেটা আমাদের বিচার্য নয়। আমরা চাই, উপাচার্য ন্যায় বিচার পান। কারণ, খুনিকেও শাস্তি দেওয়ার আগে তার কথা শোনা হয়। সব্যসাচীবাবু উপাচার্য। ওঁর সঙ্গে কথা না-বলে কী করে ওঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথা ঘোষণা করা হল, সেটাই তো বুঝতে পারছি না। উপাচার্যের তো একটা আলাদা মর্যাদা রয়েছে।”
রাজ্যপালকে প্রবীণ শিক্ষকদের চিঠি প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, “ওঁরা ওঁদের মত জানিয়েছেন। এটা ওঁদের গণতান্ত্রিক অধিকার। এ ব্যাপারে আমার প্রতিক্রিয়া নেই।”
প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচীবাবুর বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ, আর্থিক দুর্নীতি, সরকারি অর্থ নয়ছয়-সহ বেশ কিছু গুরুতর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে কিছু দিন আগে জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। তদন্তের রিপোর্ট রাজ্যপালের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। সেই সঙ্গেই শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, সব্যসাচীবাবুকে বরখাস্তের সুপারিশ করা হবে।
চিঠিতে শঙ্করবাবুরা লিখেছেন, সব্যসাচীবাবুর বিরুদ্ধে ‘যথাযথ’ তদন্ত হয়নি। এতে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। যে-সরকার নিজেদের ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল’ বলে দাবি করে, তাদের ভাবমূর্তিও ‘ক্ষুণ্ণ’ হয়েছে। রাজ্যপালের কাছে তাঁদের আবেদন, সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনে চলুক। সব্যসাচীবাবুর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের যথাযথ তদন্ত হোক। উপাচার্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে তাঁর বক্তব্য শোনা হোক। তথ্যপ্রমাণ ছাড়া কারও বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের খবর সংবাদমাধ্যমের কাছে যাতে না-পৌঁছয়, সেই জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হোক। বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিল, কোর্ট ইত্যাদি সংস্থারও মতামত নেওয়া প্রয়োজন। প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল অবশ্য ইতিমধ্যেই উপাচার্যের পাশে দাঁড়িয়েছে। |
|
|
|
|
|