|
|
|
|
বোতল দেখে বোঝা দায় জাল না খাঁটি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • করিমপুর |
এক ঝটকায় দেখে বোঝার উপায় নেই আসল নাকি নকল! বোতল, সিল, বোতলের গায়ে মারা স্টিকার সবই দেখতে হুবহু এক। দেশি, বিদেশি সবই মিলবে কি ব্র্যান্ড চাই শুধু বলতে পারলেই হবে আসলের থেকে দামও অনেক সস্তা। চোলাই মদের পাশাপাশি তেহট্ট মহকুমার সীমান্ত লাগোয়া গ্রামগুলিতে এখন রমরমিয়ে চলছে এই নকল মদের কারবার।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ সবকিছু জেনেও উদাসীন প্রশাসন। যদিও এই উদাসীনতার অভিযোগ মানতে চাননি মহকুমা প্রশাসন। তেহট্টের এসডিপিও মলয় মজুমদার বলেন,‘‘ এমনটা নয় যে মগরাহাটার ঘটনার পর আমরা নড়েচড়ে বসেছি। চোলাই-এর ঠেক ভাঙা, বেআইনি মদ বিক্রির ব্যাপারে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া আমাদের রুটিন ডিউটির মধ্যে পড়ে। সেটাই আমরা প্রতিনিয়ত করে চলেছি তবে মগরাহাটার ওই ঘটনার পর সব থানাগুলোকে আরও সতর্ক করা হয়েছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয়সূত্রে জানা গিয়েছে করিমপুর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় গত কয়েক বছর থেকেই বেড়ে গিয়েছে নকল মদ তৈরির ব্যবসা। জেলা পুলিশের এক অফিসারের কথায়,‘‘এলাকার একটি গোপন জায়গা বেছে নিয়ে তৈরি হয় এই নকল মদ। বোতলের ছিপি, লেবেল সবই আসে কলকাতা থেকে। তারপর বোতলবন্দী হয়ে ক্যারিয়ারের মাধ্যমে সেই মদ পৌঁছে যায় হোটেল কিংবা বেআইনি মদ বিক্রেতাদের কাছে।” |
“চোলাই মদ ব্যবসার কথা পুলিশও জানে। সিপিএম নেতাদের প্রশ্রয়েই এই ব্যবসা চলে।”
উমা দত্ত
তৃণমূল নেত্রী |
“আমাদের কেউ এই ব্যবসায় জড়িত নয়। বরং উল্টোটাই ঘটে। পুলিশের প্রশ্রয়ে বিক্রি বন্ধ হয়নি।”
রমা বিশ্বাস
সিপিএম নেত্রী |
“আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। থানাগুলিকে বলা হয়েছে, খবর পেলেই ব্যবস্থা নিতে।”
সব্যসাচী রমণ মিশ্র
জেলা পুলিশ সুপার |
|
|
বোতলবন্দী সেই মদ দেখলে প্রাথমিকভাবে বোঝার উপায় থাকবে না। সেটা আসল না নকল অনেক সময় নেশা বাড়ানোর জন্য কিছু ওষুধও তাতে মেশানো হয়। যার ফল হয় মারাত্মক। সম্প্রতি করিমপুর থানার পুলিশ পাট্টাবুকা এলাকা থেকে প্রায় ৩৫০ টি বোতল, ছিপি, সিল করার যন্ত্র উদ্ধার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে গোপনে খবর পেয়ে পুলিশ পাট্টাবুকার একটি মাঠে আচমকা হানা দিয়েছিল নকল বিদেশি মদ তৈরির জন্যই ওগুলো ব্যবহার করা হচ্ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। করিমপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির সুভাষ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নাটনা, পাট্টাবুকা, কলাবেড়িয়া এলাকায় চোলাই ও নকল মদ তৈরির রমরমা বেড়েছে অনেক হতদরিদ্র মানুষও এখন এই বেআইনি ব্যবসায় সামিল হয়ে রীতিমত গাড়ি বাড়ি করে ফেলেছে। প্রশাসন অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে আগামীতে কিন্তু বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা আছে।’’ সীমান্তের এই গ্রামগুলোতে নকল মদ তৈরির ব্যাপারে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল জেলা আবগারি দফতরের কর্তারা নদিয়া জেলা আবগারি দফতরের সুপার লালসিং গাবরাই বলেন,‘‘ ওই গ্রামগুলোতে নকল মদ তৈরির খবর আমাদের কাছেও আছে সেই ব্যাপারে ওই এলাকায় আমরা সোর্সও লাগিয়েছি আশা করি আগামী সপ্তাহের মধ্যে একটা বড় সাফল্য পাব তবে মগরাহাটের ঘটনার পর আমরা জেলা জুড়েই অভিযান চালাচ্ছি শুক্রবার অভিযান চালিয়ে শান্তিপুর ও তার পাশ্ববর্তী এলাকা থেকে প্রায় ১৬৬০ লিটার চোলাই মদ ও ১০০ কেজি গুড় উদ্ধার করা হয়েছে’’
গত জুন মাসে মুরুটিয়া থানার বালিয়াডাঙা এলাকায় বিষাক্ত মদ খেয়ে মারা গিয়েছিলেন গ্রামের দুই যুবক ওই ঘটনার পর গ্রামের মানুষ বেশ কিছু মদের ভাটি ভেঙে দিয়েছিল পুলিশও কদিন খুব তপর ছিল গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তারপর কয়েকদিন যেতেই আবার সেই চেনা চেহারাতে ফেরে বালিয়াডাঙা পুলিশের দাবী, বালিয়াডাঙাতে চোলাই মদের আর কারবার হয়না তবে বেআইনি ভাবে কিছু লোক মদ বিক্রি করে তাদের ধরতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ
তেহট্টের মহকুমাশাসক অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘পুলিশের পাশাপাশি আমরাও আচমকা বেশ কিছু জায়গায় হানা দিচ্ছি সম্প্রতি বার্নিয়া, বেতাই, পলাশীপাড়া এলাকা থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে উদ্ধার করা হয়েছে কয়েক শ’ বোতল মদও নকল মদ তৈরির খবর আমাদের কানেও এসেছে খুব শীঘ্র ওই এলাকায় অভিযান চালানো হবে।’’ |
|
|
|
|
|