|
|
|
|
|
|
|
মুখোমুখি... |
|
সুমনের ‘লাবণ্য’ |
এ বার ‘শেষের কবিতা’। সুমন মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায়। নতুন ছবি। লাবণ্য
হয়তো কঙ্কণা। পুরনো অনেক পিছুটানকে ফেলে দিয়ে। খোঁজ নিলেন শতরূপা বসু |
পত্রিকা: ফ্ল্যাটবাড়ি থেকে সল্টলেকে প্রাসাদের মতো দোতলা বাড়ি...
সুমন: (হাসতে হাসতে) প্রাসাদ কি না জানি না! বাড়িটা আসলে ছ’বছর হল বানাচ্ছি। একটু একটু করে টাকা জমিয়ে। এত দিন তো ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। সেই ১৯৯৭ থেকে, যবে থেকে মল্লিকার সঙ্গে আমার জীবনের শুরু। এত বছর পর নিজেদের বাড়ি হল।
পত্রিকা: সল্টলেকে বিশাল বাড়ি, ‘রাজা লিয়ার’ নাটকের টিকিটের দাম ২০০ টাকা! আপনার তো সবই বড় বড় ব্যাপার দেখছি!
সুমন: লিয়ারের ব্যাপারটা কী, আমরা দেখছিলাম, মানুষ ভাল নাটকের জন্য টাকা দিতে প্রস্তুত। একটা আরাম ফ্যাক্টর আছে। টাকা দেব, ভাল সিট পাব। এই যে এত দিন ধরে নাটকটাকে ঘিরে একটা চাপানউতোর চলছিল, বলা হচ্ছিল লাভদায়ক করা যায় কি না...আমি দু’টো ব্যাপার বলেছিলাম। এক, নাটকটাকে বড় হলে নিয়ে যেতে হবে। আর দুই, টিকিটের দাম বাড়াতে হবে। আর দেখা তো গেলই যে চাহিদা আছে। টিকিট পড়তে পারছে না। দু’ঘণ্টার মধ্যে সব টিকিট বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।
পত্রিকা: এখন কী নিয়ে কাজ করছেন?
সুমন: ‘শেষের কবিতা’য় ফাইনাল টাচ্ দিচ্ছি।
পত্রিকা: ‘শেষের কবিতা’ করছেন!
সুমন: হ্যা। রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে সিনেমার জন্যও কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে। আমি ‘শেষের কবিতা’র জন্য আবেদন করেছিলাম। অনুমোদন মিলেছে।
পত্রিকা: লাবণ্য কে?
সুমন: প্রথম, মানে ২০০৫-এ যখন ছবিটা ভেবেছিলাম, তখন কঙ্কণার (সেন শর্মা) কথা ভেবেছিলাম। কথাও বলেছিলাম ওর সঙ্গে। ও খুবই উৎসাহ দেখিয়েছিল।
পত্রিকা: আপনার প্রিয় নায়িকা ঋ
তুপর্ণা সেনগুপ্তকে ভাবেননি কেন?
সুমন: ভাবা তো যায়-ই। ঋতু এত ভাল অভিনেত্রী। কিন্তু সামনের বছর, মানে ২০১২-তে ওর অনেক ছবি মুক্তির অপেক্ষায়। শুরুরও অপেক্ষায়।
পত্রিকা: তা হলে লাবণ্য কে? ঋতুপর্ণা না কঙ্কণা?
সুমন: আমার প্রথম পছন্দ কঙ্কণাই। কথাবার্তাও মোটামুটি পাকা। |
|
পত্রিকা: বুঝলাম। আর অমিত রায়?
সুমন: রাহুল বোসের সঙ্গে কথা পাকা হয়েছে। ওর চরিত্র আর চিত্রনাট্য খুব পছন্দ হয়েছে। ফোন করেছিল ডেট নিয়ে। মার্চ-এপ্রিল নাগাদ শু্যট শুরু করব।
পত্রিকা: শু্যটিং কোথায় করবেন?
সুমন: শিলং, কলকাতা, আর অক্সফোর্ড। যেহেতু এত দিন ধরে ভাবছি তাই মাথায় পুরোটা ছকা আছে। শিলং-এ দু’বার রেকিও করে এসেছি।
পত্রিকা: অন্য প্রসঙ্গে যাই। প্রেমের প্রস্তাব পান?
সুমন: আমি এমনিতে খুব খোলামেলা হলেও কথাবার্তা একটু অন্য ধরনের তো, ফলে দুম করে কেউ প্রেমের প্রস্তাব করে না।
পত্রিকা: অন্য ধরনের মানে?
সুমন: মানে, (হাসতে হাসতে), খুব গম্ভীর-গম্ভীর কথা বলি সারা ক্ষণ। পার্টি-টার্টিতে যাই। কিন্তু নাইটক্লাব বা ওই ধরনের লাইফস্টাইলটা আমার পছন্দ হয় না। তা ছাড়া আমি চটুল আড্ডা পছন্দ করি না। কথাবার্তা সেই গড়িয়ে গম্ভীরে চলে যায়। বান্ধবী রয়েছে। মানে ওই ফেসবুক মারফত আর কী। কিন্তু সেই অর্থে প্রেম না। মানে ‘আমি আপনার অ্যাডমায়ারার। গুণমুগ্ধ’, ব্যাস, ওই পর্যন্তই।
পত্রিকা: তা আপনি নিজে কী রকম মহিলা অ্যাডমায়ার করেন?
সুমন: আমার জীবনে মহিলাঘটিত ব্যাপারটা অনেক পরে এসেছে। স্কুলে কোনও প্রেম ছিল না। সেই কলেজে গিয়ে প্রেম। আমার কাছে বান্ধবী মানে, ব্যক্তিত্ব আছে, নিজস্ব ভাবনা আছে, আত্মবিশ্বাসীএমন এক জন নারী। মানে যদি একটা চিত্রনাট্য লেখা শেষ করি তার সঙ্গে আলোচনা করতে পারব। সে আমাকে জরুরি ইনপুট দিতে পারবে। মানে শুধু কফি খাওয়া আর জামাকাপড় কেনার মধ্যে সে সীমাবদ্ধ থাকবে না।
পত্রিকা: প্রসেনজিৎও তো নাটকে আসছেন। ওঁকে নিয়ে কিছু করবেন না?
সুমন: ওর সঙ্গে নাটক করার কথা প্রথমে আমারই ছিল। হয়ে উঠল না। পরে শুনলাম ও কৌশিকের (সেন) সঙ্গে করছে। ‘হার্বার্ট’ দেখে বলেছিল ‘ও রকম একটা চরিত্র আমাকে নিয়েও ভাবো না।’ ও যে ভাবে ভেঙে চলেছে নিজেকে সেটা প্রশংসনীয়।
পত্রিকা: আর ‘হ্যামলেট,
প্রিন্স অফ মেটিয়াব্রুজ’-এর কাজ কত দূর?
সুমন: সেটার জন্য অরুণোদয় সিংহ আর মাহি গিল-এর সঙ্গে মিটিং করতে মুম্বই যাচ্ছি। আরেকটা চরিত্রের জন্য নাসিরুদ্দিন শাহের সঙ্গে একটা প্রাথমিক কথা হয়ে গিয়েছে। ওম পুরির সঙ্গেও কথা হবে।
পত্রিকা: শুধু মুম্বই তো নয়। আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছনোরও তো একটা খিদে আছে আপনার ...
সুমন: বলতে পারেন। একটা ইংরেজি ছবি পরিচালনা নিয়ে কথা হচ্ছে। প্রযোজক এবং চিত্রনাট্য লিখেছেন এক আমেরিকান দম্পতি।
পত্রিকা: আর একটু বিশদে বলবেন?
সুমন: পোল্যান্ডে শু্যটিং হবে। পুরোটাই বিদেশি অভিনেতা-অভিনেত্রী নিয়ে। এক জন পিয়ানো টিউনারকে নিয়ে গল্প। ‘মহানগর@কলকাতা’ নিউ ইয়র্কে দেখে এই কাপ্ল আমায় অ্যাপ্রোচ করেন পরিচালনার জন্য। চিত্রনাট্য পাঠিয়েছিলেন। আমার খুব ভাল লাগে। প্রথমে হওয়ার কথা ছিল নিউ ইয়র্কেই। আমিই সাজেস্ট করি একটা পুরনো ইউরোপীয় চার্ম-এর জায়গা। তখন ঠিক হয় পোলান্ডের ক্র্যাকোতে কাজ হবে। আমি নিজেও প্রচুর পিয়ানো নিয়ে পড়াশোনা করছি। আসলে এখন জীবনের এমন একটা মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছি যে আর থামতে চাই না। |
|
|
|
|
|