মনোরঞ্জন ১...
দুই শিল্পীর গপ্পো
হল ছবি আঁকার ছবি।
দুই শিল্পীর চোখে। কথায়। আড্ডায়।
শুভাপ্রসন্ন। গৌতম ঘোষ।
ভেঙে বললে, শুভাপ্রসন্নর ওপর গৌতমের ছবি।
জ্যোতি বসু, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর গৌতমের ক্যামেরায় আরও একটা বিখ্যাত জীবন?
“একদমই না,” বলছেন পরিচালক, “এ রকম ভাবে ভাবিইনি। ওকে বহু দিন চিনি। ওর হালের একটা প্রর্দশনীতে গিয়ে মনে হল, শিল্পী শুভাপ্রসন্নর ছবি আঁকার ছবিটা তুলতে পারলে মন্দ হয় না। কেন না, সেটার মধ্যেও একটা আকর্ষণীয় গল্প আছে। সমাজ আছে। রাজনীতি আছে। সেই সঙ্গে এটাও মনে হল, ও ছবি আঁকে ওর ভাবনার জায়গা থেকে। আমি সেই ছবি দেখি আমার ভাবনা দিয়ে। আমাদের দু’জনের ভাবনার একটা আদানপ্রদান হলে কেমন হয়?”
অতএব, দুই শিল্পীর এই ভাবের আদানপ্রদানই গৌতমের ছবির মূল ভাবনা। ভেবেছেন, শুধু শুভাপ্রসন্ন নয়, এ রকম আরও অনেক শিল্পীর কাজ এবং তাঁদের ব্যক্তিগত শিল্পসত্তায় তার প্রতিফলন নিয়ে ছবির সিরিজ করবেন। তবে আপাতত শুভাপ্রসন্ন, গৌতমের ডাকে ‘শুভা’কে দিয়ে শুরু।
‘শুভা’ কী ভাবছেন এই ছবি নিয়ে?
“ভাবার সুযোগ পাইনি। গৌতম অনেক দিনের বন্ধু। হঠাৎ করে বলল, এই ভাবে একটা কাজ আমাকে নিয়ে করতে চায়। আমাদের দু’জনের শিল্পী ও সামাজিক সত্তার মেলামেশা। আদানপ্রদান। ভাবনাটা ব্যতিক্রমী মনে হল। রাজি হয়ে গেলাম।”
গৌতম কাজ করছেন ক্যানন ফাইভ ক্যামেরায়। প্রযুক্তি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করতে ভালবাসেন চিরকাল। এ বার সেই দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে একটা ক্যামেরা যা প্রধানত স্টিল ক্যামেরা, ভিডিও টেকনোলজি-সহ তা দিয়ে ছবি নির্মাণের ছবি তুলছেন। তাঁর কথায়, “এটাই আধুনিক সিনেমা। কেন না সিনেমা তৈরির খরচ যত কমবে ততই সাধারণ মানুষের আরও কাছে পৌঁছবে এই শিল্প। এ ভাবে কাজ করলে শু্যটের হ্যাপা বলতে যা বোঝায় সেটাও কম হয়। ছোট্ট এই ক্যামেরা নিয়ে নিজের আনন্দে শু্যট করে চলেছি। নিজেকে এতটা মুক্ত ফিচার ফিল্ম করার সময় লাগে না।”
প্রযোজকেরও ধার ধারেননি এ বার। দরকার পড়েনি। কেন না খরচটাকে অত্যন্ত সামান্য জায়গায় বেঁধে রাখার পরিকল্পনা করে ফেলেছেন ‘মনের মানুষ’-এর মতো বিগ বাজেট ছবির পরিচালক। ছবি আঁকার ছবি, ছবি আঁকতে আঁকতে আরও যে সব দৃশ্যকল্প শুভাপ্রসন্ন বা তাঁর নিজের মাথায় ঘুরপাক খাবে তার ছবি এই সবই ধরে ফেলতে চাইছেন ন্যূনতম খরচে। “হতে পারে শুভার একটা স্ট্রোকে আমার মাথায় অন্য একটা ভাবনা এল। হয়তো আমি আর শুভা চলে গেলাম পাহাড়ে। আড্ডা মারলাম কাজ নিয়ে। তর্ক করলাম সেই ছবির রাজনৈতিক চেতনা বা সামাজিক বিন্যাস নিয়ে। ক্যামেরায় ধরা পড়ল সেই আড্ডা আর তার পরের কথা। তার পরে যখন ফিরে এলাম শহরে, শুভার ক্যানভাসে, তখন হয়তো সেই আড্ডার রেশ প্রভাবিত করল ওর তুলির পরবর্তী টানকে। তৈরি হল একেবারে নতুন কিছু।”
আবার শুভাপ্রসন্নর পুরনো ছবি নিয়ে গৌতমের ভাবনার মাধ্যমেও উঠে আসতে পারে একেবারে ভিন্ন কিছু মুহূর্ত।
শুভাপ্রসন্ন বলছেন, “আমরা দু’জনেই শিল্পী তো! আমাদের আড্ডা, ভাবনা, তর্ক সবই একে অপরকে প্রভাবিত করতে পারে। আবার না-ও পারে। কী হয় সেটা ওই মুহূর্তটার আগে বোঝা মুশকিল। আগে থেকে কিছু ভেবে রাখছি না বা রাখব না। বাকিটা দেখা যাক।”
একই সুরে গৌতম বলছেন, তাঁদের দু’জনের এই আদানপ্রদান মোটেও স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী হবে না। আড্ডা বা আলোচনা যখন যে ভাবে এগোবে, যে দিকে মোড় নেবে সে ভাবেই ধরবে তাঁর ক্যামেরা। আর রং ধরবে শুভাপ্রসন্নর ক্যানভাসে।
দুই শিল্পীর খেয়ালি মন ও মাথা এ ভাবেই হদিশ পেতে চাইবে এক অপরের।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.