|
|
|
|
|
|
দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া, সোনারপুর
ফরতাবাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্র |
পরিষেবা সুদূর |
দেবাশিস দাস |
আগে খোলা থাকত ২৪ ঘণ্টা। এখন থাকে রাত ৮টা পর্যন্ত। সম্প্রতি এই নিয়ম চালু হয়েছে ফরতাবাদ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ফলে সমস্যায় পড়েছেন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। বেশি রাতে গড়িয়া এবং আশপাশের এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাই প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নির্ভর করতেন এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে। নতুন নিয়ম নিয়ে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, অন্যান্য পরিষেবার হালও ভাল নয়।
ফরতাবাদ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে খবর, একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র সব সময় খোলা রাখার জন্য যত সংখ্যক কর্মীর দরকার তা এখানে নেই। চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য বিভাগ মিলিয়ে মোট কর্মী রয়েছেন দশ জন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক কর্মী বলেন, ‘‘এখানে তিন জনের কাজ এক জনকে করতে হয়। সারা রাত খোলা রাখার মতো কর্মী আমাদের নেই।” |
|
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ফরতাবাদ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু হয়েছিল সাতের দশকের শেষের দিকে। এখন ফরতাবাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাড়িটি তিন তলা। বাড়ির এক তলায় বহির্বিভাগের চিকিৎসা হয়। দু’তলায় রয়েছে বন্ধ হয়ে যাওয়া অন্তর্বিভাগ। তিন তলায় চিকিৎসকদের কোয়ার্টার্স। এক সময়ে সোনারপুর, নরেন্দ্রপুর, গড়িয়া, তেঁতুলবেড়িয়া, ফরতাবাদ এলাকার বাসিন্দারা এর উপরে নির্ভরশীল ছিলেন। এখন জনসংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির তেমন কোনও উন্নতি হয়নি। এলাকার বাসিন্দা রমা নিয়োগীর কথায়: “আগে রাতে পাড়ার কেউ অসুস্থ হলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই যেতাম। কিন্তু এখন আর তা সম্ভব নয়।
কারণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র খোলা থাকে না। খুবই অসুবিধা হচ্ছে।”
|
|
ছয় শয্যার এই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আগে রোগী ভর্তি নেওয়া হত বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু কয়েক বছর হল তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অন্তর্বিভাগের দরজা তালাবন্ধ থাকে। বাসিন্দারা জানান, এখন অ্যালোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথি বিভাগ খোলা থাকে। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার ঘরটির দেওয়ালে শ্যাওলা ধরেছে। কয়েকটি জায়গায় দেওয়ালে উইও লেগেছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া বিভিন্ন বিভাগের সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া-সহ কয়েকটি রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে খবর, এক জন মাত্র প্যাথলজিস্ট থাকায় রোগ নির্ণয়ের কাজ মাঝেমধ্যেই ব্যাহত হয়। এক সময়ে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কুষ্ঠ রোগীদেরও চিকিৎসা হত। কিন্তু এখন বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
|
|
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সিপিআইয়ের তড়িৎ চক্রবর্তী বলেন, “এলাকার বাসিন্দাদের দাবি মেনে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে আবার ২৪ ঘণ্টা পরিষেবার ব্যবস্থা করুক স্বাস্থ্য দফতর।” সোনারপুরের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণবকুমার মজুমদারের বক্তব্য: “স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির যাবতীয় সমস্যার কথা উচ্চতর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” পাশাপাশি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শিখা অধিকারী বলেন, “ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শীঘ্রই আবার ২৪ ঘণ্টা পরিষেবার ব্যবস্থা করা হবে।”
|
ছবি: পিন্টু মণ্ডল |
|
|
|
|
|