পূর্ব কলকাতা
করুণাময়ী
দুর্ভোগের মোড়
ষাটোর্ধ্ব দুই মহিলা রাস্তা পার হবেন। কিন্তু পারছেন না। কারণ, চার দিক দিয়েই গাড়ি চলাচল করছে। কোনও ট্রাফিক সিগন্যাল নেই। ট্রাফিক কর্মী থাকলেও অধিকাংশ চালক তাঁকে মানছেন না। স্থানীয় এক রিকশাচালক সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন। তাতেও শেষ রক্ষা হল না। উল্টো দিক থেকে আচমকা একটি অটো এসে পড়ল। ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গেলেন এক মহিলা। অল্প চোট পেলেন। ঘটনাস্থল বিধাননগরের করুণাময়ী মোড়।
করুণাময়ী মোড়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ চলছে। ফলে ট্রাফিক সিগন্যাল ভাঙা পড়েছে। ভাঙা পড়েছে আইল্যান্ডটিও। ফলে যান চলাচলে জটিলতার সৃষ্টি হয়। মেট্রো কর্তৃপক্ষ, বিধাননগর পুরকর্তৃপক্ষ, মহকুমা ও পুলিশ প্রশাসনের বৈঠকের পরে ট্রাফিক কর্মীর ব্যবস্থা করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, এর পরেও সমস্যা কমেনি।
উন্নয়ন ভবন থেকে করুণাময়ীমুখী রাস্তায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের কাজ চলায় ময়ূখ ভবন থেকে করুণাময়ী মোড় পর্যন্ত রাস্তার এক দিক দিয়ে যান চলাচল করছে। আবার করুণাময়ী মোড় থেকে বিএইচ ব্লকের দিকেও রাস্তার এক দিক বন্ধ। সেখানে আরও একটি সরকারি প্রকল্পের কাজ চলছে। ফলে সে রাস্তাতেও খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে। কিন্তু মেরামত হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত সংখ্যক ট্রাফিক কর্মী নেই। রাস্তা মেরামতির কাজ হলেও বুলেভার্ড মেরামত হয়নি। করুণাময়ী মোড় থেকে পাঁচ নম্বর সেক্টর যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার দু’পাশেও একই অবস্থা। মধ্যমগ্রামের বাসিন্দা সুশোভন সরকার বলেন, “উন্নয়নমূলক কাজ হলে অসুবিধা হবেই। কিন্তু রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলার সুযোগ থাকা উচিত।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, মোড়েই অটো, ট্যাক্সি, শাট্ল, রিকশার স্ট্যান্ড। যাত্রী তুলতে দাঁড়িয়ে থাকে বাসও। ফুটপাথ দখল করে চলছে রকমারি ব্যবসা। কয়েক জন ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করলেও কোনও লাভ হচ্ছে না। অধিকাংশ চালকই নিয়ম মানছেন না। প্রশাসন নির্বিকার।
বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (পূর্ত) অনুপম দত্ত বলেন, “ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আগে এলাকাটি চলাচল যোগ্য করে তোলা হবে। ইতিমধ্যে রাস্তা মেরামতির কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে সে কাজ শেষ করতে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা।” মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানান, পুরোদমে কাজ চলছে। পাশাপাশি ওই এলাকায় বুলেভার্ড ও সৌন্দর্যায়নের কাজ করা হবে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পর্কে উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ- কর্তৃপক্ষ জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ছবি: অর্কপ্রভ ঘোষ




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.