প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ দূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলিপুরদুয়ার মহকুমা প্রশাসন ও পুরসভার কর্তাদের মধ্যে উতোর চাপান চলছেই। ওই ঘটনায় বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, একে অন্যের বিরুদ্ধে দোষ চাপিয়ে দায় সারছেন প্রশাসন ও পুরকর্তারা। ওই ঘটনার ফলে ২০১০ সালে শুরু প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বিক্রি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযান থমকে দাঁড়িয়েছে। ভাল ফল পেয়েও কেন অভিযান বন্ধ হয়ে গেল! প্রশাসনের কর্তাদের কাছে ওই প্রশ্নের উত্তর নেই। আলিপুরদুয়ারের মহকুমা শাসক অমলকান্তি রায় বলেন, “পুর এলাকায় নিষিদ্ধ প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করার দায়িত্ব পুরসভার। ওই সংস্থার আধিকারিকদের বিষয়টির উপরে নজর রাখার কথা। কেন শহরে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধের অভিযান থেমে আছে খোঁজ নিয়ে দেখব। পুরসভা উদ্যোগী হলে মহকুমা প্রশাসন সহযোগিতা করবে।” যদিও মহকুমাশাসকের বক্তব্যে খুব একটা আশ্বস্ত হতে পারছেন না পুরকর্তারা। পুরসভার চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “২০১০ সালে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ও প্লাস্টিকের গ্লাসের ব্যবহার বন্ধের অভিযান চালিয়ে কিছু সাফল্য মিলেছিল। কিন্তু ধারাবহিক অভিযান চালানোর জন্য মহকুমা প্রশাসনের সাহায্য চেয়েও পাওয়া যায়নি। তাই মাঝপথে অভিযান বন্ধ হয়ে যায়।” প্রশাসন ও পুরসভার ওই কাজিয়ার সুযোগ নিয়ে শহরের ব্যাবসায়ীদের একাংশ ফের প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের কারবার শুরু করেছেন। অভিযান চলার সময় ওই ব্যাবসায়ীরা পরিবেশের ক্ষতি করে না এমন কিছু ব্যাগ বাজারে ছেড়েছিলেন। সেগুলিও উধাও হতে বসেছে। আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত বলেন, “গত বছর পুরসভা সচেতনতা মিছিল করেছে। পাশাপাশি অভিযানও চালায়। কিন্তু সেটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফের নিষিদ্ধ ক্যারিব্যাগের ব্যবহার শুরু হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আগামী বর্ষায় শহরের নিকাশি ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে।” শহরের বাসিন্দারা মনে করেন, ধারাবাহিক প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ বিরোধী অভিযান চালানো হলে একদিকে যেমন পুরসভার আয় বাড়বে অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা চাপে থাকবে। কারণ, প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যাবহার করলে ৫০ টাকা এবং বিক্রি করলে ব্যাবসায়ীকে ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, “সেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি কাজ না-করে সমালোচনা করতে ব্যস্ত থাকে। ওঁরা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে অভিযানে নামতে পারছেন না কেন! পুরসভা নতুন বছরে মহকুমা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে ফের শহরকে প্লাস্টিক দূষণমুক্ত করার অভিযানে নামবে।” |