নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
আরামবাগের মাধবপুর পঞ্চায়েতের নতুন উপ-প্রধান নির্বাচন করা হল। এর মাধ্যমে পঞ্চায়েতটিকে ফের সচল করা হবে বলে ব্লক প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন।
বুধবার এই পঞ্চায়েতের কার্যালয়েই ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি বৈঠক ডাকা হয়। তাতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপ-প্রধান নির্বাচিত হন পঞ্চায়েতের হামিরবাটি গ্রামের সিপিআই সুজাতা রায়। তিনি বলেন, “জরুরি কাজকর্ম দীঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় উপ-প্রধানের দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছি। দলমত নির্বিশেষে সকলের সহযোগিতা চাইছি।” বিডিও মৃণালকান্তি গুঁই বলেন, “প্রধান এবং উপ-প্রধান দু’জনেরই অবর্তমানে পঞ্চায়েতের সব রকম কাজ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। এ বারে ওই সব কাজকর্ম ফের শুরু হবে। ব্লক প্রশাসন থেকেও নিয়মিত তদারক করা হবে।”
গত বিধানসভা ভোটের পর থেকেই পঞ্চায়েতটিতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। তৃণমূলের পক্ষ থেকে নানা অভিযোগ তোলা হয়। বার বার ঘেরাও এবং বিক্ষোভ চলতে থাকে। যার জেরে ‘নিরাত্তার অভাব’ বোধ করায় প্রধান-সহ পঞ্চায়েতের অন্যান্য সদস্যেরা নিয়মিত কার্যালয়ে আসা বন্ধ করে দেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকে গত মে মাসে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে একটি রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে প্রধানের বিরদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়। এর ফলে গত জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে প্রধান সিপিএমের শেখ মুজিবর রহমান কার্যালয়ে আসা পাকাপাকি ভাবে বন্ধ করে দেন। বিডিও তদন্ত করে গত ২৫ জুলাই প্রধান এবং এক পঞ্চায়েত আধিকারিকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। প্রধান তখন থেকে পলাতক। এর পরে উপ-প্রধান সুস্মিতা দে-কে প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে বলা হলেও তিনি রাজি হননি। বিডিও তাঁকে কারণ দর্শাতে বললে তিনি উল্টে পদত্যাগ করেন। এর ফলে পঞ্চায়েতের সব রকম কাজ বন্ধ হয়ে যায়। গ্রামবাসীরা বিভিন্ন ধরনের শংসাপত্রও পাননি। এই অচলাবস্থা কাটাতে নতুন করে উপ-প্রধান নির্বাচিত করা হল বলে ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর। বৈঠকে অবশ্য ১৫ জনের মধ্যে সিপিএমের চার জন্য এবং সিপিএমের ১ জন পঞ্চায়েত সদস্য হাজির ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে উপপ্রধান নির্বাচিত হলেও কাজের কাজ কতটুকু হবে, তা নিয়ে সংশয় কাটছে না সাধারণ মানুষের।
সিপিআই নেতা রঘুপতি বারুই বলেন, “কাজের ক্ষেত্রে নতুন উপ-প্রধান সকলের সহযোগিতা পাবেন বলেই আমরা আশা করছি।” অন্য দিকে, তৃণমূলের মাধবপুর অঞ্চল সভাপতি রণজিৎ রায়ের বক্তব্য, “স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে কাজ হলে বাধা সৃষ্টি হবে না। সহযোগিতাও করা হবে।” |